
ছবি সংগৃহীত
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কান কম শোনা অনেকের কাছে স্বাভাবিক বিষয় মনে হলেও, সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, এটা শুধুই শ্রবণের সমস্যা নয়, এর সঙ্গে রয়েছে স্মৃতিভ্রংশ, মানসিক অবসাদ এবং সামাজিক বিচ্ছিন্নতার সরাসরি সম্পর্ক!
? শব্দ শোনার নয়, বুঝতে পারার সমস্যা
যুক্তরাজ্যের গার্ডি য়ানপত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বয়সের সঙ্গে যেসব পরিবর্তন ঘটে তার মধ্যে অন্যতম হলো (Presbycusis) বয়সের কারণে কানে কম শোনা। এই সমস্যায় শুধু শব্দ কম শোনা নয়, বরং শব্দের স্পষ্টতা কমে, যে কারণে মানুষের কথা বুঝতে সমস্যা হয়, বিশেষ করে ব্যস্ত পরিবেশে বা ব্যাকগ্রাউন্ড নয়েজ থাকলে।
শ্রবণহানি ও মস্তিষ্কের ঝুঁকি
গবেষণায় দেখা গেছে, শ্রবণহানির কারণে যারা শব্দ ঠিকভাবে ধরতে পারেন না, তারা অনেক সময় সামাজিক মেলামেশা এড়িয়ে চলেন। এতে করে দীর্ঘমেয়াদে তৈরি হয় মানসিক অবসাদ ও একাকীত্ব, যা স্মৃতিভ্রংশ বা ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
এক জরিপে ৬৬–৯০ বছর বয়সী প্রায় তিন হাজার মানুষের মধ্যে ৩২% ডিমেনশিয়া আক্রান্ত ছিলেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর পেছনে একটি বড় কারণ হতে পারে দীর্ঘদিন ধরে অচিকিৎসিত শ্রবণহানি।
ঝুঁকি কমাতে করণীয়
লাইফস্টাইল বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকদের মতে, শ্রবণশক্তি রক্ষা করতে যা যা করণীয়:
-
জোরালো শব্দ এড়িয়ে চলুন – হেডফোনে উচ্চ ভলিউমে গান শোনা বা শিল্প এলাকায় কাজ করার সময় কানের সুরক্ষা ব্যবহার করুন।
-
নিয়মিত শ্রবণ পরীক্ষা করান – ৪০ বছর বয়সের পর প্রতি বছর কানে শোনা পরীক্ষার অন্তর্ভুক্ত করুন স্বাস্থ্যপরীক্ষায়।
-
রক্তচাপ, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন – কারণ এগুলোও শ্রবণশক্তির উপর প্রভাব ফেলে।
-
আধুনিক শ্রবণযন্ত্র ব্যবহার করুন – বর্তমানে ডিজিটাল হিয়ারিং এইড সহজলভ্য ও স্টাইলিশ।
“হিয়ারিং এইড মানেই বয়স্ক হওয়া নয়!”
চিকিৎসকরা বলছেন, শ্রবণযন্ত্র ব্যবহার করলে নিজেকে ‘বুড়ো’ ভাবার কিছু নেই। বরং এর মাধ্যমে আপনি নিজেকে সক্রিয়, আত্মবিশ্বাসী এবং সামাজিকভাবে যুক্ত রাখতে পারবেন। এটি শুধু কানে শোনার নয়, মনের সুস্থতার সঙ্গেও সম্পর্কিত।
শেষ কথা:
শ্রবণশক্তির অবনমন যদি সময়মতো ধরা যায় এবং ঠিকমতো চিকিৎসা করা হয়, তবে শুধু কানই নয়-মস্তিষ্ক, মন এবং সম্পর্ক-সবই সুস্থ রাখা সম্ভব। তাই স্বাস্থ্যসচেতন হোন, সময়মতো সাড়া দিন, কানেরও যত্ন নিন! গার্ডিয়ান
ইউ