
ছবি সংগৃহীত
‘দ্য গার্ডিয়ান’-এর সোমবার (২৮ জুলাই) এর ক্রসওয়ার্ড ব্লগে সম্পাদক অ্যালান কনার এক মনোমুগ্ধকর লেখায় সময়, স্থান এবং ছোটখাটো জীবনের বিস্ময় নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি শুরু করেন জ্যান ক্যাম্পিয়ন পরিচালিত এক সংক্ষিপ্ত চলচ্চিত্রের দৃশ্য দিয়ে, যেখানে এক মেয়ে আবিষ্কার করে যে মনোপলি খেলার নোটগুলো একেবারে নিখুঁতভাবে একটি টিস্যু বাক্সের পেছনের ফাঁকা জায়গায় ফিট করে। এই ধরনের আপাত অপ্রাসঙ্গিক জিনিসের সঙ্গে জাদুকরী মিল খুঁজে পাওয়াকে তিনি ব্যাখ্যা করেন ‘প্রকৃতির চমৎকার সমন্বয়’ হিসেবে।
এরপর লেখক আমাদের নিয়ে যান ফরাসি বিপ্লবের সময়ে, যখন ক্যালেন্ডার ব্যবস্থাকে পাল্টে নতুন এক সময় গণনার পদ্ধতি চালু হয়েছিল। কিন্তু সেই পরীক্ষাটি খুব একটা সফল হয়নি। মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে এর মিল না থাকায় ক্যালেন্ডারটি পরে বাতিল করা হয়। লেখক এখান থেকে ইঙ্গিত করেন যে, যেকোনো নিয়ম বা সময়সূচি তখনই কার্যকর হয়, যখন তা মানুষের স্বাভাবিক অভ্যাসের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
ক্রসওয়ার্ড প্রকাশ নিয়েও কিছু ব্যতিক্রম ঘটেছে। কিছু কিছু ধাঁধার প্রকাশ বা তার ব্যাখ্যা সময়মতো দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। তাই তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, এখন থেকে প্রতি মাসের প্রথম সোমবার নিয়মিত পোস্ট থাকবে, আর মাঝে মাঝে বিশেষ আপডেটও থাকবে।
লেখাটি আরও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে এক মজার পাঠক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে। বিশপ বারটন (BISHOP BURTON”) শব্দ জোড়াকে ঘিরে পাঠকদের থেকে চমৎকার ক্লু পাঠানো হয়, যার মধ্যে একটি ক্লু বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়। এই অংশটি লেখাটিকে যেন আরও অন্তরঙ্গ করে তোলে, কারণ এটি শুধু লেখক নয়, পাঠকদের অংশগ্রহণকেও তুলে ধরে।
সবশেষে লেখক প্রস্তাব করেন, যদি আজকের দিনের নাম রাখতে হয় ফরাসি বিপ্লবের সেই নতুন ক্যালেন্ডার অনুসারে, তবে অ্যারোসির (Arrosoir) নামটি মানানসই হবে, যার অর্থ ওয়াটারিং ক্যান (watering can)। এটা যেমন হাস্যরসপূর্ণ, তেমনি চিন্তাশীলও দেখায় যে সময়ের মতোই প্রতিদিনও একধরনের যত্নের দাবি রাখে।
এই ব্লগটি শুধু ক্রসওয়ার্ড বা ভাষার খেলা নয়, বরং সময়, মনের খেয়াল এবং জীবনের ছোটখাটো আনন্দ খুঁজে পাওয়ার গল্প। একধরনের ধ্যানী লেখনী, যা পড়তে পড়তে পাঠক নিজেও একটু থেমে ভাবতে বাধ্য হয় জীবনের কিছু জিনিস সত্যিই কত সূক্ষ্মভাবে একে অপরের সঙ্গে জুড়ে আছে।
ইউ