
ছবি সংগৃহীত
আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে যাওয়া হিন্দু ও শিখ সম্প্রদায়ের সদস্যদের দেশে ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন যে, সরকার দেশে ফিরলে তাদের পুরনো সম্পত্তি ও ব্যবসা পুনরুদ্ধারে সহায়তা করবে।
দীর্ঘ যুদ্ধ-সংঘাতসহ নানা কারণে একসময় বিপুল সংখ্যক হিন্দু, শিখ ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী আফগানিস্তান ছাড়তে বাধ্য হন। মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর তালেবান ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকেই স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে এবং আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছে। এর অংশ হিসেবেই তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই আহ্বান জানালেন।
দিল্লি সফরে আশ্বাস: সম্প্রতি দিল্লি সফরের সময় এক প্রতিনিধি দলের কাছে আমির খান মুত্তাকি এই আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, “যে হিন্দু ও শিখ ধর্মাবলম্বীরা বিগত কয়েক দশকে ভারতসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পাড়ি দিয়েছেন, তাদের দেশে ফিরে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আমি কথা দিচ্ছি, হিন্দু ও শিখরা আফগানিস্তানে ফিরলে তাদের পুরনো সম্পত্তি ফিরে পেতে এবং পুরনো ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিতে সাহায্য করব।”
দিল্লির আফগান দূতাবাসে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে ১৩ জন হিন্দু ও শিখ প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন, যারা কয়েক দশক আগে আফগানিস্তান ত্যাগ করেছিলেন।
নিরাপত্তা নিয়ে সংশয়: তবে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা মুত্তাকির আহ্বানের প্রতিক্রিয়ায় জানান, আফগানিস্তানে এখনও ফেরার মতো ‘নিরাপদ পরিবেশ’ তৈরি হয়নি।
কৃত্রিম ভিডিও বিতর্ক: মুত্তাকির সফরের মধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে তাঁর একটি ভিডিও ভাইরাল হয়, যেখানে দাবি করা হয়— তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আফগানিস্তানে শিব ও বিষ্ণু মন্দির তৈরির কথা বলেছেন এবং ভারতের সর্বাত্মক সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। যদিও বিভিন্ন গণমাধ্যম এবং ফ্যাক্ট চেকারদের মতে, দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়া এই ভিডিওটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে বানানো ভুয়া ভিডিও।
আফগান-বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে তালেবান এমন বার্তা দিতে চাইছে, যাতে তারা ধর্মীয় সহনশীলতার ভাবমূর্তি তুলে ধরতে পারে। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ফেরার আহ্বান এবং কৃত্রিম ভিডিও বিতর্ক— দুটোই এখন তালেবানের ভাবমূর্তির নতুন পরীক্ষা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ইউ