
ফাইল ছবি
‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০২৫’ বাতিল করে ন্যায্যতার ভিত্তিতে নারীবান্ধব কোটা পদ্ধতি চালু করার আহ্বান জানিয়েছে নারীপক্ষ।
বুধবার (৩ আগস্ট) এক বিবৃতিতে এ দাবি জানিয়েছে নারীপক্ষ।
বিবৃতিতে বলা হয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় গত ২৮ আগস্ট ২০২৫ ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০২৫’ জারি করেছে। যা শীঘ্রই কার্যকর হতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। এই বিধিমালায় নারীর জন্য পূর্ব নির্ধারিত কোটা পরিবর্তন করে মাত্র ৭ শতাংশ কোটা চালু করা হয়েছে। সহকারী শিক্ষক নিয়োগে কেবলমাত্র সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে প্রাার্থী বাছাই করা হবে। প্রধান শিক্ষক পদের ৮০ শতাংশ পদোন্নতির মাধ্যমে এবং ২০ শতাংশ সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে পূরণ করা হবে। নারীপক্ষ মনে করে, নতুন এই বিধিমালা নারীর কর্ম সংস্থানকে দুর্বল ও অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতাকে বাধাগ্রস্ত করবে। মেয়ে শিক্ষার্থীর হার কমিয়ে দেবে। শিক্ষকতা পেশায় নারীর অংশগ্রহণে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
নারীপক্ষ নারী-পুরুষের সমতায় দৃঢ় বিশ্বাসী কিন্তু সেটা অবশ্যই ন্যায্যতার ভিত্তিতে হতে হবে। বাংলাদেশে নারীরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্যভাবে অগ্রগতি লাভ করেছে কিন্তু সামগ্রিক অর্থে এখনো নারী সামাজিক ও কাঠামোগত বাধার কারণে পিছিয়ে আছে। অনেক ক্ষেত্রেই নারীরা পুরুষের সাথে প্রতিযোগিতায় পেরে ওঠছে না। সেক্ষেত্রে শিক্ষকতা পেশায় নারী কোটার এই ব্যাপক পরিবর্তন নারীকে পুরুষের সাথে এক অসম প্রতিযোগিতার মধ্যে ফেলে দেবে এবং দেশে নারী শিক্ষকের হার অনেকটাই কমে যাবে।
যদিও ২০২৪ সালে কোটা বাতিলের দাবিতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কারণে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পূর্বের কোটা পদ্ধতি বাতিল করেছে কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে প্রাথমিক শিক্ষায় নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কোটা ব্যবস্থা একটি কার্যকর নীতিগত পদক্ষেপ। এটি নারীর কর্মসংস্থানে প্রবেশের সুযোগ সৃষ্টি করে, বিশেষ করে গ্রামীণ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নারীর জন্য।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নারী শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। অপরদিকে, আমাদের বাস্তবতায় এখনো মেয়ে শিক্ষার্থীর জন্য নারী শিক্ষক নিরাপদ, সহানুভূতিশীল ও উৎসাহব্যঞ্জক পরিবেশ তৈরি করে। নারী শিক্ষকের সংখ্যা কমে গেলে নারীবান্ধব শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত হবে, ফলে মেয়েদের বিদ্যালয়ে ভর্তি এবং উপস্থিতি কমে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়বে, যা নারী শিক্ষাকে বাধাগ্রস্ত করবে। নারীর কর্ম সংস্থান কমে যাবে, ফলে তার অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও স্বাবলম্বী হওয়ার পথ দুর্গম হবে। এই অবস্থা নারী-পুরুষের মধ্যকার বৈষম্য আরও বাড়িয়ে দেবে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন বাধাগ্রস্ত হবে।
ইউ