
ফাইল ছবি
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার আহলাদপুর গ্রামে গত ২৬ ও ২৭ জুলাই সনাতন ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায়ের ১৪টি বসতঘরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় উদ্বেগ ও সুষ্ঠু তদন্ত, দায়ী ব্যক্তিদের বিচার এবং ক্ষগ্রিস্তদের ক্ষতিপূরণ প্রদানসহ পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছে ব্লাস্ট।
সোমবার (২৮ জুলাই) এক বিবৃতিতে এ দাবি জানায় ব্লাস্ট।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায় যে, ধর্মীয় অবমাননাকর কটূক্তির অভিযোগ তুলে ১৭ বছরের এক শিশুকে গ্রেপ্তারের পর স্থানীয় “উত্তেজিত জনতা” তার বাড়িসহ আশপাশের হিন্দু সম্প্রদায়ের ১৪টি বসতবাড়িতে ২৬ জুলাই (শনিবার) রাতে এবং ২৭ জুলাই (রবিবার) বিকেলে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়, যাতে বহু মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শিশুটি একটি বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী এবং তার বিরুদ্ধে সাইবার সুরক্ষা আইনে মামলা করা হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে সম্মিলিত শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। যেহেতু অভিযুক্ত একজন শিশু, তাই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সংক্রান্ত সব আইনগত প্রক্রিয়া শিশু আইন ২০১৩ অনুযায়ী পরিচালিত হওয়া উচিত। সংবিধান ও আন্তর্জাতিক শিশু অধিকার সনদের (সিআরসি) আলোকে, শিশুটির প্রতি যথাযথ আইনগত প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে হবে। যেমন, আইনী পরামর্শের সুযোগ, পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ, এবং কোনোরূপ অবমাননাকর বা কঠোর আচরণের নিষেধাজ্ঞা।
এক্ষেত্রে, ঐ শিশুটির বিরুদ্ধে অভিযোগে যথাযথ তদন্ত ও আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে হবে। এবং শিশু হিসেবে তার বিশেষ সুরক্ষার অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বিচারের প্রক্রিয়া পরিচালিত হওয়া আবশ্যক।
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা বা যে কোন অপরাধের ঘটনায় কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকলে কোনো গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের উপর এ ধরনের সহিংসতা সম্পূর্ণ ভাবে আইন ও মৌলিক মানবাধিকার পরিপন্থী। সংবিধানের ২৭, ২৮, ৩১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রত্যেক নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ ও জাতিগোষ্ঠী নির্বিশেষে নিরাপত্তা ও আইনের সুরক্ষা পাওয়ার অধিকার রাখে এবং অনুচ্ছেদ ৩৫(৫) অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তিকে নিষ্ঠুর, অমানবিক বা অবমাননাকর আচরণের শিকার করা যাবে না।
ভুক্তভোগীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে, দ্রুত নিরপেক্ষ তদন্ত স্বাপেক্ষে দোষীদের বিচার করতে ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন দিতে ব্লাস্ট দাবি জানাচ্ছে এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে আরও সক্রিয় ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার জোর দাবি জানিয়েছে।
ইউ