
সংগৃহীত ছবি
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল এবং স্থানীয় ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে উত্তরের প্রধান নদী তিস্তার পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সোমবার (২১ জুলাই) সকাল ৯টায় কুড়িগ্রামের তিস্তা পয়েন্টে নদীর পানি রেকর্ড করা হয় ২৯ দশমিক ৯ সেন্টিমিটার, যা বিপদসীমা ২৯ দশমিক ৩১ সেন্টিমিটারের একেবারে কাছাকাছি।
পানির প্রবল চাপ সামাল দিতে দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প ডালিয়া তিস্তা ব্যারেজের সব ৪৪টি জলকপাট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এতে নদীর পানিপ্রবাহ আরও ত্বরান্বিত হয়েছে, ফলে রংপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলার তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র রোববার এক পূর্বাভাসে জানিয়েছে, তিস্তা ছাড়াও ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও দুধকুমার নদ-নদীর পানির স্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই প্রবণতা আগামী ২৪ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে এবং পরবর্তী দুই দিন কিছুটা স্থিতিশীল থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
পাউবোর কুড়িগ্রাম নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, "তিস্তার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। এতে নিম্নাঞ্চলের কিছু ঘরবাড়ি ও কৃষি জমি স্বল্পমেয়াদে প্লাবিত হতে পারে।"
তিস্তা অববাহিকায় গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। রংপুরের কাউনিয়া গেজ স্টেশনে তিস্তার পানি রোববার সকাল ৬টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত ১৪ সেন্টিমিটার বেড়েছে। এসময় পানি বিপদসীমার ৪০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় তিস্তার পানি ইতোমধ্যেই তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল এবং ফসলের মাঠ তলিয়ে দিতে শুরু করেছে। ডাউয়াবাড়ি ও গড্ডিমারী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে বসতবাড়ি ও আবাদি জমিতে পানি ঢুকে পড়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
ডালিয়া ব্যারেজের লেভেল পরিমাপক নুরুল ইসলাম জানান, শুক্রবার রাত থেকেই নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে এবং পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যারেজের সব গেট খুলে রাখা হয়েছে।
ডাউয়াবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান বলেন, “পানি বাড়ায় ইতোমধ্যে কয়েকটি ওয়ার্ডের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। পরিস্থিতির আরও অবনতি হলে দ্রুত ত্রাণ সহায়তার প্রয়োজন হবে।”
পাউবো লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, উজান থেকে পানির ঢল ও স্থানীয় বৃষ্টির ফলে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
//এল//