ঢাকা, বাংলাদেশ

সোমবার, , ১৩ অক্টোবর ২০২৫

English

জাতীয়

রাজনীতিতে নারীর ৫০% প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতের দাবি

উইমেনআই প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৭:২৫, ১১ অক্টোবর ২০২৫

রাজনীতিতে নারীর ৫০% প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতের দাবি

ছবি সংগৃহীত

বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে পূর্ণতা দিতে হলে সংসদে দেশের মোট জনসংখ্যার ৫১ শতাংশ নারীর জন্য ৫০ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা কেবল ন্যায়সঙ্গত নয়, এটি সংবিধানের সমতার নীতির সরাসরি বাস্তবায়ন। বিশিষ্টজনেরা এই দাবি তুলেছেন।

বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকার খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের থ্রি-ডি সেমিনার মিলনায়তনে 'নারীর রাজনৈতিক অধিকার ফোরাম'-এর আয়োজনে 'জাতীয় রাজনীতিতে নারীর অর্থপূর্ণ প্রতিনিধিত্বের দাবিতে' অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে তারা এই দাবি জানান।

'সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারীরা কোথায়?' প্রতিপাদ্য নিয়ে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বক্তারা রাজনীতিতে নারীর কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য আইনি ও কাঠামোগত পরিবর্তন আনার ওপর জোর দেন।

প্রতিবেদনের মূল বিষয়গুলো (পয়েন্ট আকারে):

১. সমতার নীতি ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সংসদ:

  • প্রতিনিধিত্বের দাবি: দেশের ৫১ শতাংশ নারীর জন্য সংসদে ৫০ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা।

  • সংবিধানের বাস্তবায়ন: এটিকে কেবল ন্যায়সঙ্গত নয়, সংবিধানের সমতার নীতির সরাসরি বাস্তবায়ন হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

  • ঐকমত্য কমিশনে নারীর অনুপস্থিতি: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, ঐকমত্য কমিশন যখন বসে বা গ্রুপ ছবি তোলে, তখন সেখানে নারী খুঁজে পাওয়া যায় না, যা খুবই লজ্জাজনক।

২. সংরক্ষিত আসন ও সরাসরি নির্বাচন:

  • সংরক্ষিত আসনের উদ্দেশ্য: উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, সংরক্ষিত নারী আসন রাখার মূল উদ্দেশ্য হলো সাধারণ আসনগুলোতে ধীরে ধীরে নারীদের ৫০ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা।

  • সরাসরি নির্বাচন: তিনি রাজনৈতিক দলগুলোকে সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের বিষয়ে মত দিতে আহ্বান জানান।

  • ক্ষতিপূরণ: বিএনপি নেত্রী নিলুফা চৌধুরী মনি সংরক্ষিত কোটায় এমপি হওয়ায় 'দ্বিতীয় শ্রেণির' হয়ে যাওয়া এবং পুরুষ সংসদ সদস্যদের চেয়ে কম সময় (৮ মিনিটের বদলে ৪ মিনিট) কথা বলার সুযোগ পাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে 'সংরক্ষিত' ব্যাপারটিকে সম্মানজনক নয় বলে মন্তব্য করেন।

  • শামা ওবায়েদ: বিএনপি নেত্রী শামা ওবায়েদ সরাসরি নির্বাচনের পক্ষে মত দিলেও এখনই সংরক্ষিত আসন বাদ দেওয়ার পক্ষে নন।

৩. নারীর সক্ষমতা ও নেতৃত্ব:

  • দক্ষতার প্রমাণ: নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন মুরশিদ বলেন, মেয়েরা শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে জয় করেছে, কিন্তু রাজনীতিতে এখনও পিছিয়ে। সম্মিলিতভাবে কাজ করে তাদের রাজনীতিতে এগিয়ে আনতে হবে।

  • বৈশ্বিক উদাহরণ: ফরিদা আখতার মধ্য ভূমধ্যসাগরে ফ্লোটিলায় নারী নেতৃত্ব (গ্রেটা থুনবার্গ) দেওয়ার উদাহরণ টেনে বলেন, মাঝসমুদ্রেও নারীরা নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং তাদের থামানো যাচ্ছে না; বাংলাদেশের নারীদেরও থামানো যাবে না।

  • গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ: উপদেষ্টা শারমীন মুরশিদ জানান, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে প্রায় ৬৫ শতাংশ মেয়ে 'জুলাই যোদ্ধা' হিসেবে নেতৃত্বে এসেছে।

  • ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা: তিনি আরও বলেন, ইসলামসহ কোনো ধর্মই নারীর প্রতি বৈষম্য সমর্থন করে না। ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা ব্যবহার করে নারীকে পশ্চাৎপদ রাখার চেষ্টা আজকের দিনে দুঃখজনক।

৪. রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান:

  • মনোনয়ন ও কাঠামো: শারমীন মুরশিদ রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় নারীর পূর্ণ অংশগ্রহণ এবং দলীয় কাঠামোর প্রতিটি স্তরে নারীর উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করার দাবি জানান।

  • দলের অভ্যন্তরে কথা বলা: আইনজীবী সারা হোসেন বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর যারা এই সম্মেলনে আছেন, তাদের নিজেদের দলেও নারীর সমান অধিকার নিয়ে কথা বলতে হবে।

৫. নারীর প্রতি প্রতিকূলতা ও বুলিং:

  • প্রতিকূল পরিবেশ: গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, রাজনৈতিক অঙ্গনে নারীর জন্য কতটা পরিবেশ তৈরি করা যায়, সেটাই বড় চ্যালেঞ্জ। নারী রাজনীতিতে এলে যে বুলিংয়ের শিকার হন, তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

  • সিদ্ধান্ত গ্রহণে বাধা: উমামা ফাতেমা অভিযোগ করেন, করপোরেট সেক্টর বা রাজনীতিতে নারীরা যেন সিদ্ধান্তগ্রহণের পর্যায়ে না আসতে পারে, তার সুচারু ব্যবস্থা তৈরি করে রাখা হয়েছে।

৬. সম্মেলনের মূল দাবিগুলো: সম্মেলনে রাজনৈতিক অধিকার ফোরামের পক্ষ থেকে কয়েকটি মূল দাবি তুলে ধরা হয়:

  • আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব: জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে নারীর রাজনৈতিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।

  • ১০০ আসনে সরাসরি নির্বাচন: কেবল ২০২৬ সালের জন্য সাময়িক ব্যবস্থা হিসেবে সংরক্ষিত ১০০ আসনে নারীদের সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচন নিশ্চিত করা।

  • প্রার্থী মনোনয়ন: রাজনৈতিক দলে ন্যূনতম ৩৩ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়ন বাধ্যতামূলক এবং ধাপে ধাপে ৫০ শতাংশে উন্নীত করা।

  • নির্বাচনী ব্যয় বহন: সব নারী প্রার্থীর জন্য নির্বাচনী ব্যয়সীমার সমপরিমাণ অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে মঞ্জুরী হিসেবে বরাদ্দ দেওয়া।

  • নিরাপত্তা: শারীরিক ও অনলাইন সহিংসতা প্রতিরোধে নির্বাচন কমিশনকে কার্যকর নীতি ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

  • 'না ভোট' বিধান: বর্তমানে কেবল একক প্রার্থীর জন্য প্রযোজ্য 'না ভোট' বিধান সকল আসনে কার্যকর করতে হবে।

ইউ

সেফ এক্সিট নিয়ে যে মন্তব্য করলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

রাজনীতিতে নারী-প্রতিবন্ধীর বাধা: মূল কারণ প্রবেশগম্যতা

তালেবানের দাবি: ৫৮ পাক সেনা হত্যা, সীমান্ত বন্ধ

নতুন রাজনৈতিক দলের তথ্য আবার যাচাই করবে ইসি

শিক্ষকদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু সোমবার

নিরাপদ আবাসন: রাষ্ট্রের মূল দায়িত্ব

বন্দিদশার ভয়াবহ বর্ণনা দিলেন শহিদুল আলম

অভিযুক্ত ১৫ সেনা কর্মকর্তা হেফাজতে নিল সেনাবাহিনী

অনুষ্ঠান বন্ধ করায় উদীচীর ক্ষোভ, শাস্তি দাবি

নোবেলজয়ী মাচাদো: গণতন্ত্র, নারী নেতৃত্ব ও ত্যাগের প্রতীক

রাজনীতিতে নারীর ৫০% প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতের দাবি

স্তন ক্যান্সার সচেতনতা দিবস: জেনে নিন, জেগে উঠুন

পরিবেশ কর্মীদের নিরাপত্তায় আইনি কাঠামো জরুরি: রিজওয়ানা

জাতীয় পার্টির সমাবেশ ঘিরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, টিয়ারশেল নিক্ষেপ

ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে প্রবেশে এবারও শীর্ষে বাংলাদেশিরা