ঢাকা, বাংলাদেশ

মঙ্গলবার, , ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

English

জাতীয়

আজ ভয়াল ২৫ মার্চ

উইমেনআই প্রতিবেদকঃ

প্রকাশিত: ১০:৩৩, ২৫ মার্চ ২০২৫

আজ ভয়াল ২৫ মার্চ

সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশের ইতিহাসে আজ এমন একটি দিন, যা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। বাঙালি জাতির জীবনে ১৯৭১ সালের এইদিন এক বিভীষিকাময় ভয়াল কালরাত নেমে এসেছিল। আজ সেই ভয়াল ২৫ মার্চ, জাতীয় গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এই রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ‘অপারেশন সার্চলাইট’-এর নামে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর নির্বিচারে চালায় বিশ্ব ইতিহাসের নৃশংসতম গণহত্যা।

বাংলাদেশের ইতিহাসে সেই রাতটি ভয়াল কালরাত হিসেবে পরিচিত। ২০১৭ সালের ১১ মার্চ জাতীয় সংসদে প্রস্তাব পাসের মাধ্যমে দিনটিকে ‘জাতীয় গণহত্যা দিবস’ ঘোষণা করা হয়।

১৯৪৭ সালের পর থেকেই পূর্ব পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ নানা নিপীড়নের শিকার হতে থাকে পশ্চিম পাকিস্তানের শাসক শ্রেণির হাতে। পূর্ব পাকিস্তানের মানুষকে তাদের ন্যায্য দাবি আদায়ে বারবার রাজপথে নামতে বাধ্য করা হয়। ফলে বাঙালি ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে ভোটের মাধ্যমে জবাব দেয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে, কিন্তু নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় শাসকশ্রেণি।

ফলে আবার রাজপথে নামতে বাধ্য হয় মানুষ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ২ মার্চ অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন, তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে দীর্ঘ ২৩ বছরের শাসন-শোষণ থেকে মুক্তির লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট রূপরেখা প্রদান করেন। পশ্চিম পাকিস্তানের নেতারা সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে গোপনে অস্ত্র এবং সৈন্য জমা করতে থাকে পূর্ব পাকিস্তানে। ২৪ মার্চ উচ্চপদস্থ জেনারেলরা ঢাকা ত্যাগ করে আন্দোলন দমনে গণহত্যার নীলনকশা প্রণয়ন করেন।

২৫ মার্চও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে প্রহসনের আলোচনার তারিখ ধার্য করা ছিল পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের। কিন্তু গণহত্যার নির্দেশ দিয়ে পাকিস্তান বিমানবাহিনীর বিশেষ বিমানে করে ঢাকা ত্যাগ করেন ইয়াহিয়া। সেদিন রাত ১১টায় ইয়াহিয়ার করাচি পৌঁছার খবর ঢাকায় আসার পরপরই শুরু হয় গণহত্যা।

ঢাকার রাস্তা নেমে আসে ট্যাঙ্ক ও সশস্ত্র সৈন্য। পূর্ব পাকিস্তানের সব ক্যান্টনমেন্ট, ইপিআর, পুলিশ ও আনসার বাহিনীতে কর্মরত বাংলাদেশি অফিসারদের হত্যা ও সাধারণ সৈন্যদের নিরস্ত্র করা ছিল এ অভিযানের লক্ষ্য। সে লক্ষ্যে প্রথমে তারা হামলা চালায় রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স ও পিলখানায় তৎকালীন ইপিআর সদর দপ্তরে।

তবে সব জায়গাতেই পাকিস্তানিরা বাঙালি সৈনিক, পুলিশ, ইপিআর সদস্যদের প্রতিরোধের মুখে পড়ে। ঢাকার বাইরে অন্যান্য ক্যান্টনমেন্ট যথা—চট্টগ্রাম, যশোর, রংপুর ও জয়দেবপুরে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তোলেন বাঙালি সৈনিক ও জওয়ানরা।

রাতে শুরু হওয়া গণহত্যা ২৬ মার্চ বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে। এই অভিযানে কত মানুষ নিহত হয়েছে তার কোনো সঠিক পরিসংখ্যান নেই। শুধু রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সেই সাত শতাধিক পুলিশ নিহত হয়। ২৫ মার্চ হত্যাযজ্ঞ শুরুর পরপরই রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার বাসভবন থেকে আটক করা হয়।

দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের লক্ষ্যে নানাবিধ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। সারা দেশের স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, কারিগরিসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বয়ে ২৫ মার্চ গণহত্যার স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। দিবসটি উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে সকাল ১০টায় অথবা সুবিধাজনক সময়ে গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।

ঢাকাসহ সব সিটি করপোরেশনে গণহত্যার ওপর দুর্লভ আলোকচিত্র ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে এবং গৃহীত কর্মসূচি বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার প্রচার করবে। এ ছাড়া নিহতদের স্মরণে বাদ জোহর অথবা সুবিধাজনক সময়ে সব মসজিদে বিশেষ মোনাজাত এবং অন্যান্য উপাসনালয়ে প্রার্থনার আয়োজন করা হবে। এদিন সারা দেশে রাত ১০টা ৩০ মিনিট থেকে ১০টা ৩১ মিনিট পর্যন্ত প্রতীকী ব্ল্যাক আউট (কেপিআই/জরুরি স্থাপনা ব্যতীত) পালন করা হবে।

প্রধান উপদেষ্টার বাণী: ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস উপলক্ষে এক বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঢাকাসহ সারা দেশে বিশ্বের বর্বরতম হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল। আমি দুঃখভারাক্রান্ত হৃদয়ে স্মরণ করি সেই কালরাতের সব শহীদকে। নারকীয় এই হত্যাযজ্ঞে জাতি আজও শোকাহত।’

তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতা-পরবর্তী যে বাংলাদেশ আমরা চেয়েছিলাম, সে বাংলাদেশে পতিত স্বৈরাচারের শাসনামলে মানুষের কোনো মৌলিক অধিকার ছিল না। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার বীরত্বে জাতি স্বৈরাচারের অত্যাচার-নিপীড়নের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছে। একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণ ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে ধারণ করে এগিয়ে যেতে চায়। নতুন বাংলাদেশ একটি শক্তিশালী, শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে গড়ে উঠবে—গণহত্যা দিবসে এই হোক আমাদের অঙ্গীকার।’

তিনি ২৫ মার্চের কালরাতে সব শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।

//এল//

লালন সম্রাজ্ঞী ফরিদা পারভীন-এর মৃত্যুতে উদীচীর শোক

একসাথে কাজ করার আহ্বান

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত

সাইবার স্পেসে জুয়া, জালিয়াতি ও প্রতারণা দণ্ডনীয় অপরাধ ঘোষণা

নারী কারাবন্দিদের সাজার মেয়াদ কমানোর সিদ্ধান্ত সরকারের

চাকরি করার জন্য মানুষের জন্ম হয়নি: প্রধান উপদেষ্টা

শহীদ মিনারে শেষ শ্রদ্ধায় সিক্ত ফরিদা পারভীন, কুষ্টিয়ায় হবে সমাহিত

জাকসু নির্বাচনে ভিপি স্বতন্ত্রের জিতু, জিএস শিবিরের মাজহার

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের পক্ষে জাতিসংঘে ভোট দিয়েছে ভারত

ডেঙ্গুতে আরও ২ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ২৭৯

পাঁচ বছরেই বাংলাদেশকে স্বর্ণের খনিতে রূপান্তর সম্ভব: বাণিজ্য উপদেষাটা

জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে কিংবদন্তি শিল্পী ফরিদা পারভীন

দায়িত্ব নিয়েই পার্লামেন্ট ভেঙে দিলেন কার্কি, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা

জাকসু নির্বাচন: সন্ধ্যার মধ্যে ফল ঘোষণার আশা নির্বাচন কমিশনের

ড. ইউনূসের চিঠি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কাছে