
ছবি: সংগৃহীত
বাজারের ধোঁয়া ওঠা চায়ের উষ্ণতায় জমিরউদ্দীন টের পায় না বাইরে শীতের রাত যুতমতো জমাট বেঁধেছে। ইলেকট্রিসিটির হলুদ আলো টপকে সে যখন পথ সংক্ষিপ্ত করার তাগিদে ক্ষেতের আল ধরে সামনে হাঁটে তখন আকাশ উপচানো চান্দের পসর থাকে একমাত্র ভরসার সঙ্গী। পর্যাপ্ত সার আর ডিপটিউবওয়েলের পানি খেয়ে খেয়ে আমন ধান গাছের গতরে যৌবন বলকে উঠেছে। সবুজ চিকন ছিঁড়ে ফেঁড়ে ডাঁটালো ধানের শিষের ভারে সমৃদ্ধ গাছগুলো তবু ঋজু ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে বিশাল প্রান্তরজুড়ে। রাতের মিহিন নির্জনতায় ফজলু মিঞা, ধনু শেখ, মোন্নাফ আলীদের সমস্ত জমিন গলাগলি করে শুয়ে থাকে। ধান গাছের সতেজ উচ্চতায় ক্ষেতের আলগুলো সব অদৃশ্য। পঁয়ষট্টি উত্তীর্ণ জমিরউদ্দীনের খোলা কান দিয়ে মাঠালি ঠান্ডা হাওয়া ঢোকে। কিছুক্ষণের মধ্যে শীতার্ত হয়ে উঠলে ‘আর এট্টু আগে রওনা দেওনের কাম আছলো’ কথাটা না ভেবে পারে না জমির। ঘরে অবশ্য স্ত্রী নেই যে, লেপের ওম থেকে বেরিয়ে দরোজা খুলে কালো মুখে ঝনাৎ করে উঠবে : শীতলা রাইতে কেউ এতডা দিরং করে?
দিন বিশেক আগে জমিরউদ্দীনের স্ত্রী তজেরন্নেসা ইন্তেকাল করেছে। কুড়ি দিনের মধ্যে কাঁচা শোকের ওপর পাতলা মশারি আবরণ পড়ে গেছে একটা। নির্জনতার জোরালো বাতাসে ওঠা এদিক-ওদিক সরে কখনো সখনো তাকে দুখী করে তোলে বৈকি।
বয়সের তুলনায় জমিরউদ্দীনের বেটে-খাটো শরীর এখনো ভালো শক্ত-পোক্ত বলা চলে। বাজারে আজ স্ত্রীর চল্লিশার জিয়াফত বিষয়ক কথাবার্তায় সময়ের হিসাব গোলমাল হয়ে গেছে। গাঁও-গেরাম হইলে কী! কারেন্টের জমকালো পসরে শীতের বাজার সহজে ভাঙে না আজকাল।
ইদানীং সন্ধ্যার পর বাজারে বসে চা খাওয়া আর আড্ডা মারা জমিরউদ্দীনের কাছে বিনোদন হয়ে উঠেছে। এলাকার ছেলে ছোকরা, দুই-চারটা বয়স্ক হাত তাকে সালাম-টালাম দেয়, কেউ কেউ চা-টা, পানটা খাওয়ায়। জমিরের দুই ছেলে ভালো কামাই রুজিদার। বড়জন টিঅ্যান্ডটির লাইন অপারেটর হয়ে ঢুকলেও ইউনিয়নের নেতা বনে ঢাকার নীলক্ষেতে পাঁচতলা বাড়ি তুলে ফেলেছে। ছোট ছেলে ম্যাট্রিক পাসের পর নেভি ক্যাডেটের ট্রেনিং করে বিআইডব্লিউটিসিতে হুইল শুকানি হয়ে ঢুকে নানান কায়দা কানুনে এখন জাহাজের ফার্স্ট ক্লাস মাস্টার। বেতন-টেতন যেমন হোক, উপরি টাকায় বছর বছর জমি রাখে। জাহাজের চাকরি। বৌ-বাচ্চা বাড়িতেই থাকে। মিলিয়ে ঝিলিয়ে বলতে গেলে জমিরউদ্দীন এখন সম্পন্ন গৃহস্থ। জংধরা একচালা টিনের ঘর বিল্ডিং হয়েছে, সেও বছর সাত-আটের আলাপ। অবস্থা ফিরলেও জমিরের জীবনযাপনের অভ্যাসে তেমন ফারাক লক্ষ হয় না
তার ঘরে তিন সেরি ভাতের ডেকচিতে এখনো ইরি-ফাইভ এইট ধানের মোটা চাল রান্না হয়।
গরুর ঘাস বিচালি কাটার কামলাটা না এলে নিজের হাতে সে এ কাজটা পছন্দ নিয়ে করে।
দু-তিনটা তোলা পাঞ্জাবি (পায়জামা পরতে এখনো সে সংকোচ বোধ করে) থাকলেও ঢাকায় ছেলের বাসায় বা কটুম বাড়ি যাওয়া ছাড়া সেগুলো পরা হয় না। বাজারেও পুরনোগুলো পরে যায়।
হাঁটতে হাঁটতে হাত বাড়িয়ে এক ছড়া ধান ছিঁড়ে টিপে টিপে দেখে সে। পুচ করে সাদা দুধ বেরোয় ধান পুষ্ট অইতে আরও কয়দিন লাগবো... অভিজ্ঞ কৃষকের বুঝদার অভিমত। ধানের দুধ পাঞ্জাবিতে মুছতে ইতস্তত করে সে, চাঁদের ধবধবে আলোয় পিরহানের ময়লা হলুদ রঙ চোখে ধাক্কা মারে : জব্বর মইলা অইছে কুর্তাডা! কাইল না ধইলেই না! ধানের সাদা তরলে তর্জনী আর বুড়া আঙুল চটচটে হয়ে উঠলে মুখের ভেতর ঢুকিয়ে একটু চেঁটে নেয়, চিকনা স্বাদে জিভের ডগা চনমন করে। সঙ্গে মনও। আশপাশের খন্দগুলোর প্রায় সব জমি তাদের নিজের। ফসল উঠলে শ’তিন মণ ধানের কম হবে না। মনটা সাহসী হলে জমিরউদ্দীন সিদ্ধান্ত নেয়, বাজারে আসা-যাওয়ার জন্য সাদা চিকন কাপড়ের একখান পাঞ্জাবি বানাবে। চা দোকানের নীল দেওয়া ফর্সা আলোয় এই বদসুরত ময়লা কুর্তা গায়ে গাল গপ্প করে এলো এটা ভেবে শরমিন্দা বোধ করে জমিরউদ্দীন। লজ্জাটা ঢোক দিয়ে গিলতে গিয়ে সে টের পায় জিহ্বায় ধানের দুধ লেগে বাজারে পান করে আসা চায়ের স্বাদটা চেপ্টে গেছে। চায়ের উষ্ণতা, না ধানের চিকনাই কোনটা বেশি মজার এ নিয়ে খানিকটা দ্বন্দ্বে পড়ে জমির। পুব থেকে ধেয়ে আসা কুয়াশা ভারি একটা ঠান্ডা বাতাস জমিরউদ্দীনের দুই কানে, গালে বেশুমার শীত ঢেলে কাঁপন ধরালে তার বুড়া হাড্ডি কনকনিয়ে কেঁদে ওঠে। আজাইরা ভাবনায় মগ্ন থাকতে চাইলেও ঠান্ডা বাতাস রেহাই দেয় না লোকটাকে। ঝাপটা দিয়ে তার আশপাশেই ওড়াউড়ি করে শীত। মাফলার না আনার অনুশোচনায় ঠিরঠির করে কাঁপে বুড়া। বুদ্ধি করে পাঞ্জাবির নিচে পরা জাম্পারের হাতা দুটো টেনে কানে জড়িয়ে ধরে, সঙ্গে পায়ের গতি দ্রুত করে। ঠান্ডা একটু বাগে আসতে আবার ভাবনার হিজিবিজি শুরু হয়। স্ত্রীর মৃত্যুশোক কাঁচা থাকতে জমির ছেলেদের কাছে প্রস্তাব তুলেছিল ‘বাবা সকল, তুমরার নেকদার আম্মার লাগি একটা দোয়া খায়েরের ব্যবস্থা কর। দোয়ায় লোকজন যত বেশি হইবো রুহের মাগফিরাতের জন্যি আল্লাহর দরবারো তত বেশি হাত উঠবো। বিদেহী আত্মার শান্তি হইবো তাতে।’ বড় ছেলে আপত্তি তোলে ‘আব্বা, এসব দাওয়াত, চল্লিশাকরণের বিধান ধর্মে নাই, তারচেয়ে এতিমখানায় খাওন পাঠায়া দেওন ভালা।’ কথা শোনে জমিরউদ্দীন উষ্মায় জ্বলে উঠতে গিয়েও বুদ্ধিমানের মতো নিজেকে সংযত করে। বুঝদার গলায় বলে ‘তুমরার মারে চিনে এলাকার মানুষ, তার জন্য দরদ আছে এই গেরামির; এতিমখানার পুলাপাইন দোয়ার কী জানে! এলাকার মানুষ যতডা খাসদিলে দরদ নিয়া আল্লাহপাকের কাছে হাত পাতবো, ছুটকা কাইচ্চা বাইচ্চা তার কী বুঝব?’ স্পর্শকাতর বিষয়টা নিয়ে বাপের সঙ্গে আর অমত করে না ছেলেরা।
দোয়ার দিন তারিখ, রান্নাবান্নার আয়োজন পাক্কা হয়্যা গেছে। গ্রামের নামকরা মিন্নত বাবুর্চির দেওয়া ফর্দও রেডি।
বাড়িতেই পরেশ ময়রা একশ পাতিল দই পাতবো।
গরু জবেহ হইবো দুইটা।
গরু গোস্ত ছাড়াও রান্না হইবো দশ কেজি মাষকলাইয়ের ডাল। ডালের সঙ্গে শোল বা টাকি মাছ।
ভাত দেড় মণ চাউলের।
আলেম ও বিশিষ্টজনের জন্য বিশ কেজি চিকন আতপ চালের পোলাও, একশো পিস মুরগির রোস্ট।
মিষ্টান্ন হিসেবে সবাইকে খাওয়ানো হইবো খেজুর গুড়ের পায়েস... এসব সুখকর ভাবনা ঘুরে ঘুরে জমিরউদ্দীনের মগজে নাচন জুড়ে। ক্রমে এই বোধ রক্তপ্রবাহের মতো ছড়িয়ে পড়ে মনের অলিগলিতে। প্রগাঢ় তৃপ্তির ভাপে তার আশপাশে প্রবাহিত বাতাসও যেন উষ্ণ হয়ে ওঠে। বাড়ির উঠানে লাল, নীল, সাদা সবুজ কাপড়ের প্যান্ডেল বাঁধা-ছাঁদার দৃশ্য কল্পনা করে শোক রহিত জমিরউদ্দীনের ঘাড় গর্বের ওজনে সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ে খানিকটা। মরহুমা বিবির জীবিত ছবি কল্পনা করে তার অদৃশ্য উপস্থিতিকে স্বীকৃতি দিয়ে স্ত্রীর উদ্দেশে বলে তজেরন, তুমি বড় ভাগ্যশিলাগো, পুলারা তুমার রুহের শান্তির লাগি কত খরচাপাতি, কত পেরেশানি কবুল কইরা নিছে, সাত গেরামে মাথা উঁচা কইরা কওনের মতো চল্লিশা হইবো... যেন মৃত স্ত্রী নয়, বাতাসের সঙ্গে কথা বলে উচ্চাভিলাষী বৃদ্ধ। দিলের মধ্যে আল্লাহপাকের দরবারে শোকর জানানোর আকুল তাগাদা টের পায় সে। জাম্পারের হাতায় ঢোকানো করতল দুটো মুক্ত করে দোয়ার জন্য উপরে হাত ওঠায়। তার মেলে ধরা দশ আঙুলের ডগা ভিজিয়ে কুয়াশা ভারি বাতাস যাওয়া-আসা করলে তীব্র শীতে আবার কাবু হয়ে পড়ে। তখনই ধানক্ষেতের চিরল অন্ধকারে একটা সড় সড় আওয়াজ হয়। অবাধ্য ভয়ে কেঁপে ওঠে জমিরউদ্দীন। তজেরন্নেসার রুহু কী শোকরানা জানান দিল! প্রিয়তমা স্ত্রীকে দৃশ্যমান দেখার ডরে চোখ বন্ধ করে ফেলে বুড়া। ভয় তাড়ানোর জন্য আয়াতুল কুরসি তেলাওয়াত করতে গিয়ে টের পায় জিভ দুই সারি দাঁতের ফাঁকে আটকে আছে। অস্থিরতায় বন্ধ চোখের পাতা খুলে যায় আবার। সে চোখ দেখে, আমন ক্ষেতের সবুজ প্রান্তরে ভরা যৌবনবতী তজেরন্নেসা লীলায়িত ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে। মুখে লেপ্টে আছে শরমের বেগুনি আভা। এ দৃশ্যে প্রীত হওয়া দূর, কলিজা কেঁপে ওঠে তার। বয়সী দুপায়ে দৌড়ানোর আপ্রাণ চেষ্টা চালায়। কিন্তু পায়ের পাতা কই তার! শীতের খটোমটো আইলে এত প্যাঁক কাদা আসলো কেমনে! দুই পা কাদায় গেঁথে আছে। অসহায় দিলে নাকাল হয়ে ভাবে তজেরনকে ডাক দিয়য় কইবে না-কি- বিবিজান, দয়া কইরা নজর থাইকা তফাত যাও। তুমার এই সুরৎ সইহ্য করবার পারতাছি না; জিন্দাকালে তুমারে যত গাইল-মন্দ, মাইর ধুর করছি সব মাফ কইরা দেও, মিনতি করি...। সম্ভবত স্বামীর এহেন আচরণে তজেরন ব্যথিত হয়। মিহিন কুয়াশার ভেতর নিমিষে মিলিয়ে যায় তজেরনের সুরৎ। পা দুটো জমিনের আইলে আবার খুঁজে পায় জমির। কাঁদার ফাঁদ থেকে উদ্ধার পেতে না পেতে আরেক আপদের আবির্ভাব ঘটে। তিন-চারটা কালো চামচিকা অ্যারোপ্লেনের মতো তার মাথার ওপর চক্কর মারা শুরু করে। কাছের কোনো গাছ থেকে কর্কশ গলায় একটা তক্ষক ডেকে উঠলে জমিরউদ্দীনের জ্ঞান হারানোর উপক্রম হয়। তবে এ সময় জিভটা দাঁতের ফাঁক থেকে ছাড়া পেলে সে উন্মাদের মতো দোয়া দুরুদ পড়া শুরু করে। শেয়ালের ডাক শোনা গেলে দোয়া কালাম পড়াও বন্ধ হয়ে যায়। তার ভীত দৃষ্টি দেখে, ভরা আমন ক্ষেতের পেট বরাবর হেঁটে যাচ্ছে দুইটা ধাড়ি শেয়াল। ওদের গন্তব্য কাছের গোরস্তানের দিকে। যেখানে বিশ দিন আগে তজেরনকে কবর দেওয়া হয়েছে। একটা কাঁটাওয়ালা ভয় কলিজা খামচে ধরলে জমিরউদ্দীন পড়িমরি দৌড় লাগায়। বাড়িতে ফিরে অসহিষ্ণু হাতে দরজা ধাক্কাতে থাকলে ছেলের বৌ ঘুমভরা বিরক্ত হাতে দরোজা খুলে দেয়। পুত্রবধূর ক্ষোভ বিজবিজে মুখের দিকে তাকিয়েও স্বস্তি আসে তার। ত্রস্তপায়ে ঘরে ঢুকে জমিরউদ্দীন। শীতের জন্য সমস্ত দরোজা-জানালা বন্ধ দেখে আশ্বস্ত হয় সে। সিলিংয়ের একটা-দুইটা ফুটা গলে চাঁদের পশর বিনা অনুমতিতে ঘরে ঢুকে গেছে। এ অযাচিত আলো সহ্য হয় না জমিরউদ্দীনের। সিদ্ধান্ত নেয় কাইলই পুটিং মাইরা ফুটা বন্ধকরণ লাগব। ছেলে বউকে বলে আইজ লাইট জ¦ালায়া ঘুমাই, জব্বর জার পড়ছে। শ^শুরের কথায় ঘুম জবজবা চোখেও বৌ বিস্মিত না হয়ে পারে না। ঘর কবরের মতো আন্ধার না বানিয়ে যে লোক ঘুমায় না তার মুখে কী কথা! এ নিয়ে আর কিছু বলে না, ঘুমের ভারে দাঁড়িয়ে থাকতে পারছে না বেচারি।
জমিরউদ্দীনের খাটের পাশের চৌকিতে নাতিরা ঘুমাচ্ছে। দুজনেই মাশাল্লাহ নাদুস-নুদুস, সুন্দর ঢংয়ের। এদের দুষ্টামি আর মাত্রাতিরিক্ত দুরন্তপনায় জমিরউদ্দীন প্রায়ই রাগারাগি করে। আজ চোখের সামনে শায়িত নাতিদের বুকের ওঠানামা, ঘুমের ঘোরে এপাশ-ওপাশ মোড়ামুড়ি দেওয়া, সব কিছু জমিরউদ্দীনের জমে যাওয়া রক্তে দানাদার উষ্ণতা তৈরি করে। দাদা হলেও নাতিদের তেমন প্রশ্রয় দেয় না। আজ নিজের বিছানায় না গিয়ে পা টিপে টিপে ওদের কাছে এগিয়ে যায় বুড়া। সুরা পড়ার মতো তার ঠোঁট বিড়বিড়ায় ও সোনার চান্দেরা আমার, কইলজার ধনেরা! আমার জান পাখিরা! আইজ তরার সঙ্গে ঘুমাইবাম আমি। বৃদ্ধ তার খসখসে করতল দুটো দুই নাতির মাথায় স্থাপন করে উপুড় হয়ে চুমা দেওয়ার ভঙ্গি করে। বেশি নুতে পারে না। গেল মাসে কোমরে টাস মারার পর ব্যথা সারলেও ভীতি কাটেনি তার। ছেলে দুটো আধ বোজা পাপড়ি খুলে আবার ঘুমে তলিয়ে যায়। জমিরউদ্দীন বেলাজার মতো আবার তাদের ডাকে ময়না পক্ষীরা এট্টু হুতনের জায়গা দে আমারে। ওদের দুজনের মাঝখানে বেটে খাটো জমির চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ে। প্রসারিত দুই হাত আলতো করে নাতি দুজনের শ্বাস-প্রশ্বাসে ব্যস্ত বুকের ওপর স্থাপন করে। ক্রমে গভীর হওয়া নির্জন রাতের স্থবিরতাকে আর ভয় লাগে না জমিরউদ্দীনের। লালশালু কাপড়ের তুলো ভরা ওমের নিচে তিনটা হৃৎপিণ্ড সতেজ ওঠানামা করে।
//জ//