
ছবি সংগৃহীত
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস শেয়ারবাজারের উন্নয়ন এবং শক্তিশালীকরণের লক্ষ্যে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছেন।
রবিবার (১১ মে) যমুনা পাড়ে তার বাসভবনে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তিনি এসব নির্দেশনা প্রদান করেন।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (অর্থ মন্ত্রণালয়) আনিসুজ্জামান চৌধুরী, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক এবং বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের কাছে বৈঠকের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।
শেয়ারবাজারের বর্তমান অবস্থা এবং সংশ্লিষ্ট সংস্কারের বিষয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ একটি বিস্তারিত ব্রিফিং দেন। তিনি জানান, গত নয় মাসে শেয়ারবাজারে কিছু সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে, এবং কিছু সংস্কার এখনও চলমান রয়েছে। এসব আলোচনা শেষে প্রধান উপদেষ্টা পাঁচটি নির্দেশনা দিয়েছেন:
প্রথম নির্দেশনা:
প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশে বিদেশি কোম্পানির শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্তির ত্বরান্বিত করার কথা বলেছেন। বিশেষ করে, সরকারের অংশীদারিত্বের থাকা বিদেশি কোম্পানিগুলোকে দ্রুত আইপিওর মাধ্যমে শেয়ারবাজারে আনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এর মধ্যে ইউনিলিভারসহ অন্যান্য কোম্পানি রয়েছে।
দ্বিতীয় নির্দেশনা:
বাংলাদেশে বর্তমানে বড় বড় প্রাইভেট কোম্পানি রয়েছে যাদের বার্ষিক টার্নওভার বিলিয়ন ডলার। প্রধান উপদেষ্টা এসব কোম্পানির শেয়ার বাজারে আনার জন্য প্রয়োজনীয় প্রণোদনা ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
তৃতীয় নির্দেশনা:
পুঁজিবাজারে অনেকের ভেস্টেড ইন্টারেস্ট রয়েছে, যা রিফর্ম কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। প্রধান উপদেষ্টা পুঁজিবাজারে গভীর সংস্কারের প্রয়োজনে এসব সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেন।
চতুর্থ নির্দেশনা:
পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং অন্যান্য এজেন্সিতে দুর্নীতির বিষয়ে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা এসব অভিযোগের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন, যাতে একটি সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
পঞ্চম নির্দেশনা:
বাংলাদেশের বড় বড় কোম্পানি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বড় ফান্ড তৈরি করে। এ ধরনের ঋণ নেওয়ার প্রক্রিয়া নিরুৎসাহিত করে কোম্পানিগুলোকে বন্ড ইস্যু কিংবা শেয়ারবাজারের মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহের পরামর্শ দেন প্রধান উপদেষ্টা।
শফিকুল আলম জানান, বৈঠকে গভীর আলোচনা হয়েছে এবং শেয়ারবাজারের সংস্কারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, শিগগিরই বাজারে স্পষ্ট ও কার্যকর সংস্কারের ফলাফল দেখা যাবে, যা পুঁজিবাজারের সকল স্টেকহোল্ডারের জন্য উপকারী হবে।
এছাড়া তিনি বলেন, সরকারের উচ্চ পর্যায়ের এই বৈঠক থেকে আসা সিদ্ধান্তগুলোর বাস্তবায়ন হলে শেয়ারবাজার আরও শক্তিশালী ও প্রাণবন্ত হবে।
ইউ