ঢাকা, বাংলাদেশ

বৃহস্পতিবার, , ২১ আগস্ট ২০২৫

English

সাহিত্য

লাবণ্যর চিঠি, অমিতের পথচলা: এক আত্মিক বিদায়ের উপাখ্যান

উইমেনআই প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৬:৩৫, ৮ মে ২০২৫; আপডেট: ১৭:৫০, ৮ মে ২০২৫

লাবণ্যর চিঠি, অমিতের পথচলা: এক আত্মিক বিদায়ের উপাখ্যান

ফাইল ছবি

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপন্যাস ‘শেষের কবিতা’ বাংলা সাহিত্যের এক অনন্য সংযোজন, যেখানে আধুনিকতার ছাপ, প্রেমের দার্শনিক বোধ ও আত্মচেতনার দ্বন্দ্ব এক অপূর্ব সংমিশ্রণ ঘটিয়েছে। এটি কেবল একটি প্রেমের উপন্যাস নয়; বরং এটি প্রেমের প্রকৃতি, আত্মমর্যাদা ও ব্যক্তিত্বের স্বাতন্ত্র্য রক্ষার এক ধ্যানমগ্ন অনুসন্ধান।

মূল বিষয়বস্তু ও বিষয়ভাবনা
উপন্যাসটির কেন্দ্রীয় চরিত্র অমিত রায়-একটি আধুনিক, সাহসী ও বুদ্ধিদীপ্ত চরিত্র, যিনি ইংরেজি শিক্ষা, ধ্রুপদী সাহিত্য এবং আত্মপ্রত্যয়ে ভরপুর। অন্যদিকে, লাবণ্য-a cultured, refined, and deeply rooted character in Bengali tradition—জীবনের গভীরতা ও নিঃসঙ্গ অভিজ্ঞতার প্রতীক। এদের প্রেম একটি পারস্পরিক আকর্ষণ ও উপলব্ধির রূপ নেয়, কিন্তু শেষ পর্যন্ত এটি পরিণয়ে রূপ নেয় না, বরং এক ধ্রুপদী শুদ্ধতায় পরিণত হয়।

উপন্যাসটি প্রেমের সাধারণ পরিণতির বিরুদ্ধে গিয়ে প্রেমের উচ্চতর নৈর্ব্যক্তিক প্রকাশের দিকেই নির্দেশ করে-যেখানে সম্পর্কের অন্তিম লক্ষ্য পরস্পরকে ধরে রাখা নয়, বরং মুক্ত করে দেওয়া।

আবেগ ও অভিজ্ঞতার স্তরবিন্যাস
এই উপন্যাসটির গভীরতা পাঠকের বয়স ও মানসিক পরিপক্বতার সঙ্গে সঙ্গে নানা মাত্রায় উন্মোচিত হয়:

কিশোর বয়সে: প্রেম ও কবিতার আবেশে মুগ্ধতা সৃষ্টি করে। অমিত-লাবণ্যর রোমান্টিক কথোপকথন ও কবিতাময় ভাষা একধরনের স্বপ্নালু মোহ জাগায়।

তরুণ বয়সে: আত্মপরিচয়, ব্যক্তিত্বের সংঘাত, লাবণ্যর আত্মমর্যাদাবোধ, কেটকির শান্ত রূপ-এসব পাঠকের মনে আত্মজিজ্ঞাসার বীজ বপন করে।

যুবক বয়সে: উপন্যাসটি প্রেম, পরিণতি এবং আত্মত্যাগের মাঝে সূক্ষ্ম ভারসাম্যকে এক প্রাজ্ঞ দৃষ্টিতে উপলব্ধি করায়।

মধ্যবয়সে: তখন বুঝা যায়-এই প্রেম পরিণয়ের জন্য ছিল না, ছিল পরিশুদ্ধির জন্য। তখন লাবণ্যর বিদায়পত্র ও শেষ কবিতার আত্মিক গভীরতা পাঠকের আত্মায় অনুরণন তোলে।

লাবণ্যর চিঠি ও শেষ কবিতার বিশ্লেষণ
লাবণ্যর চিঠিতে যে কবিতা রয়েছে তা কেবল একটি বিদায়ের পঙক্তিমালা নয়-বরং এটি এক অলৌকিক মুক্তির ঘোষণা। ‘হে বন্ধু, বিদায়’ দিয়ে শুরু হওয়া কবিতাটি প্রেমের সংজ্ঞা নতুনভাবে নির্মাণ করে-যেখানে প্রেম মানেই ‘প্রাপ্তি’ নয়, বরং আত্মিক ‘উৎসর্গ’।

তিনি বলেন:

‘তোমারে যা দিয়েছিনু তার
পেয়েছে নিঃশেষ অধিকার।’ 

এই চরণে প্রেমকে নিঃস্বার্থ আত্মনিবেদন হিসেবে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।

কেটকির প্রসঙ্গ
কেটকি চরিত্রটি অমিতের জীবনে এক বৈসাদৃশ্য তৈরি করে। তিনি নিঃশব্দ, অনুগত, এবং ‘সামাজিকভাবে উপযুক্ত’। উপন্যাসের শেষে ইঙ্গিত পাওয়া যায়, অমিত হয়তো কেটকিকে বিয়ে করবেন-কিন্তু তার প্রেমের পরিপূর্ণতা রয়ে যাবে লাবণ্যর সঙ্গে সেই আত্মিক স্তরে, যা শারীরিক বা সামাজিক পরিণয় চায় না।

কবিতার অন্তঃপ্রবাহ
‘শেষের কবিতা’ নামটি যেমন উপন্যাসের শেষে একটি কবিতার উপস্থিতিকে নির্দেশ করে, তেমনি সমগ্র উপন্যাসজুড়ে রয়েছে কবিতার মতোই ছন্দ, সৌন্দর্য ও ধ্যানমগ্নতা। প্রায় প্রতিটি সংলাপ ও বিবরণে রবীন্দ্রনাথের কাব্যিক ভাষাশৈলী প্রবাহিত হয়েছে।

‘শেষের কবিতা’ এমন একটি সৃষ্টি যা বারবার পাঠ করেও নতুন অভিজ্ঞতা দেয়। এটি প্রেম, পরিণতি ও আত্মসম্মানের নিঃশব্দ সংলাপ। পাঠক যত বেশি জীবন-পার হয়ে আসে, তত বেশি উপলব্ধি করে-এই উপন্যাসের প্রেম ‘হৃদয়ের স্বাধীনতা’, এবং এর শেষ কবিতা আসলে একটি আত্মিক সূচনা।

ইউ

‘শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সংস্কার নিয়ে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি’

ইতিহাসের ওপর মব আক্রমণ চলছে: সারা হোসেন

ইমরান খানকে ৮ মামলায় জামিন দিল পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট

ফের সংঘর্ষে ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজ শিক্ষার্থীরা

জাতিসংঘের জুলাই গণহত্যা প্রতিবেদন ঐতিহাসিক দলিল

গণঅভ্যুত্থানের ২৬ মামলার চার্জশিট দাখিল

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনে সরকারের প্রস্তুতি চলছে: আসিফ ভূঁইয়া

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের অভিযোগ ভারতের

একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির প্রথম ধাপের ফল প্রকাশ

৭৮ অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে পদোন্নতির সুপারিশ

‘নির্বাচনী রোডম্যাপের খসড়া প্রস্তুত’

আওয়ামী লীগ ছাড়া নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে: জয়

১০ সেপ্টেম্বর ভোটকেন্দ্রের খসড়া তালিকা প্রকাশ করবে ইসি

নোয়াখালীতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি

দক্ষিণ-পশ্চিমে জলবায়ু, স্বাস্থ্য ও জীবিকার বর্তমান চিত্র