
ফাইল ছবি
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে বিরোধী মতাদর্শের লোকদের গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় দায়ের হওয়া মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নিয়েছেন। এই দুই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে মোট ৩০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
বুধবার (৮ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল অভিযোগগুলো আমলে নিয়ে এই আদেশ দেন।
প্রতিবেদনের মূল পয়েন্টসমূহ
এখানে অভিযোগ আমলে নেওয়া এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির ঘটনা সংশ্লিষ্ট মূল তথ্যগুলো পয়েন্ট আকারে দেওয়া হলো:
-
অভিযোগের বিষয়: আওয়ামী লীগের শাসনামলে (২০০৯-২০২৪) বিরোধী মতাদর্শের রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক ব্যক্তি, লেখক-সাংবাদিকদের গুম করে র্যাবের টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন (টিএফআই) সেল এবং জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেন্টারে (জেআইসি) বন্দি রেখে নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
-
মামলার সংখ্যা ও আসামি: মানবতাবিরোধী অপরাধের মোট দুটি মামলায় অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়েছে।
-
মোট আসামি: দুই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান করে মোট ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
-
-
আদেশ প্রদানকারী ট্রাইব্যুনাল: ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এই অভিযোগ আমলে নিয়েছেন এবং আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
-
প্রসিকিউশনের বক্তব্য: চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ট্রাইব্যুনালে শুনানি করেন। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ভিন্ন মতাদর্শের লোকজনকে তুলে নিয়ে গোপন বন্দিশালায় রেখে নির্যাতনের ভয়াবহ বর্ণনা তুলে ধরে অভিযোগ আমলে নেওয়ার আবেদন জানান।
-
টিএফআই সেলের মামলার আসামিরা (১৭ জন): অপহরণ, গুম ও নির্যাতনসহ পাঁচটি অভিযোগে এ মামলাটি হয়েছে।
-
প্রধান আসামি: শেখ হাসিনা।
-
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ আসামিরা: মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক (সাবেক প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা), আসাদুজ্জামান খান কামাল (সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী), বেনজির আহমেদ (সাবেক আইজিপি), এম খুরশিদ হোসেন (র্যাবের সাবেক ডিজি), ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ (র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক) সহ আরও ১১ জন র্যাব ও সেনা কর্মকর্তা।
-
-
জেআইসি সেলের মামলার আসামিরা (১৩ জন): গুমের অভিযোগে এ মামলাটি হয়েছে।
-
প্রধান আসামি: শেখ হাসিনা।
-
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ আসামিরা: মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক এবং ডিজিএফআই ও সামরিক বাহিনীর সাবেক ও কর্মরত কর্মকর্তাগণ, যাদের মধ্যে রয়েছেন লে. জেনারেল (অব) মোহাম্মদ আকবর হোসেন, সাবেক ডিজি মেজর জেনারেল (অব) সাইফুল আবেদিন প্রমুখ।
-
-
পদাধিকারীদের বিষয়ে আইন: চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সংশোধিত আইন অনুযায়ী, এই মামলায় অভিযুক্ত কর্মরত চারজন সেনা কর্মকর্তা আর কোনো পদে থাকতে পারবেন না।
-
মামলার প্রেক্ষাপট: ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের শাসনামলে বহু মানুষ গুমের শিকার হন। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ব্যারিস্টার মীর আহমদ বীন কাশেম, আবদুল্লাহিল আমান আযমীর মতো গুমের শিকার ব্যক্তিরা বন্দিশালা থেকে মুক্তি পান। তাদের অভিযোগের ভিত্তিতেই ট্রাইব্যুনালে গুমের এই দুটি মামলা হয়।
ইউ