
ছবি সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের ওপর শুল্ক বাড়ানোর হুমকি দেওয়ার পর, ভারত কড়া ভাষায় এর প্রতিবাদ জানিয়েছে। রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনার কারণে ভারতকে একচেটাভাবে টার্গেট করা হচ্ছে—এমন অভিযোগ তুলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, “যাঁরা আমাদের সমালোচনা করছেন, তাঁরা নিজেরাই রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।”
ভারত জানায়, ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ইউরোপ যখন রাশিয়ার বদলে অন্য উৎস থেকে তেল সংগ্রহ শুরু করে, তখন ভারত বাধ্য হয়ে রাশিয়ার তেলের ওপর নির্ভরশীল হয়।
তেল নিয়ে ট্রাম্পের অভিযোগ
সোমবার রাতে ট্রাম্প এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে বলেন, তিনি ভারতের ওপর শুল্ক “অনেক বাড়িয়ে দেবেন।” কয়েক দিন আগেই তিনি ২৫% শুল্ক এবং একটি “শাস্তিমূলক পদক্ষেপের” ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।
তিনি অভিযোগ করেন, ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে সস্তায় তেল কিনে আন্তর্জাতিক বাজারে বেশি দামে বিক্রি করছে।
পরিসংখ্যানে কী দেখা যাচ্ছে?
২০২৫ সালের মার্চে শেষ হওয়া বছরে ভারত-রাশিয়ার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ৬৮.৭ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে, যা মহামারি-পূর্ব সময়ে ছিল মাত্র ১০.১ বিলিয়ন ডলার।
অন্যদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০২৪ সালে রাশিয়ার সঙ্গে ৬৭.৫ বিলিয়ন ইউরো মূল্যের পণ্য ও ১৭.২ বিলিয়ন ইউরো মূল্যের সেবা বাণিজ্য করেছে।
ভারতের প্রশ্ন:
“আমরা তেল কিনি জাতীয় স্বার্থে, কিন্তু ইউরোপ ও আমেরিকা তো ব্যবসা করছে কোন প্রয়োজনে?”
ভারত আরও জানায়, আমেরিকাও এখনো রাশিয়া থেকে পারমাণবিক শিল্পের জন্য ইউরেনিয়াম হেক্সাফ্লোরাইড, ইভি খাতে প্যালেডিয়াম, এবং বিভিন্ন সার ও রাসায়নিক আমদানি করছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভাষায়:
“এই পরিস্থিতিতে শুধু ভারতকে নিশানা করা অযৌক্তিক এবং অগ্রহণযোগ্য। আমাদের জাতীয় স্বার্থ ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
আসলে আমেরিকাই কী উৎসাহ দিয়েছিল
ভারত জানায়, যুদ্ধের শুরুর দিকে আমেরিকাই তাদের রাশিয়ার তেল কিনতে বলেছিল।
সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত এরিক গারসেটিও এক বক্তব্যে বলেছিলেন,
“আমরা চেয়েছিলাম কেউ যেন রাশিয়ার তেল কিনে।”
বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন
বিশ্লেষক র্যাচেল জিম্বা বলেন, “ভারতের উদ্বেগ অনেকটাই যৌক্তিক। আমেরিকার আগের প্রশাসনই যে মূল্যসীমা নির্ধারণ করেছিল, তাতে ভারতকে তেল আমদানিতে উৎসাহ দেওয়া হয়েছিল।”
ভারতের সাবেক অর্থ সচিব সুবাশ গার্গ বলেন,
“আমার মনে হয় না আমেরিকার সঙ্গে ভারতের শিগগির কোনো বাণিজ্য চুক্তি হবে। বরং ভারত যদি কিছু রপ্তানি হারায়, সেটি ঘরোয়া বাজার বা বিকল্প রপ্তানি গন্তব্য দিয়ে পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব।” সিএনবিসি
ইউ