
ছবি সংগৃহীত
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় ঘোষণা দিয়েছেন যে, বাংলাদেশকে একটি জবাবদিহিমূলক, মানবিক, গণতান্ত্রিক ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার শপথ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, "আমরা কোনো নিপীড়নের কাছে মাথা নোয়াবো না। জুলাই শহীদদের আত্মত্যাগ বৃথা যেতে দেব না। তাদের স্বপ্নই হবে নতুন বাংলাদেশের রূপরেখা।"
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ইতিহাস স্মরণ
প্রধান উপদেষ্টা তাঁর ভাষণে ২০২৪ সালের জুলাই মাসের গণ-অভ্যুত্থানের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, "১৬ বছরের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে তরুণরা রাস্তায় নেমেছিল। চাকরি, শিক্ষা ও ন্যায়বিচারের দাবিতে তাদের আন্দোলন রক্তাক্ত হয়েছিল। ফ্যাসিবাদী শাসন গুলি চালিয়ে, ইন্টারনেট বন্ধ করে ও হাসপাতালে চিকিৎসা বন্ধ করে প্রতিবাদ দমন করতে চেয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জনতার জয় হয়েছে।"
তিনি জুলাই মাসের শহীদদের স্মরণ করে বলেন, "আমরা তাদের আত্মত্যাগকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। তাদের পরিবার ও আহতদের জন্য সরকার নানামুখী সহায়তা প্রদান করছে।"
শহীদ ও আহতদের জন্য সরকারি সহায়তা
ইউনূস জানান, এ পর্যন্ত ৮৩৬টি শহীদ পরিবারের মধ্যে ৭৭৫টি পরিবারকে ৯৮ কোটি ৪০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ও মাসিক ভাতা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ১৩ হাজার ৮০০ আহতকে ১৫৩ কোটি ৪ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। ৭৮ জন গুরুতর আহতকে সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও তুরস্কে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে, যার জন্য ৯৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়েছে।
ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, "জুলাইয়ের সংগ্রাম তখনই সার্থক হবে, যখন বাংলাদেশ একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক ও ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্রে পরিণত হবে। আমরা এমন একটি ব্যবস্থা গড়ে তুলব, যেখানে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও মাফিয়াতন্ত্রের কোনো স্থান থাকবে না।"
তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনা পুনরুদ্ধারের অঙ্গীকার করে বলেন, "১৯৭১ সালে আমরা স্বাধীনতা চেয়েছিলাম শোষণমুক্তির জন্য। আজ আমাদের নতুন সংগ্রাম একটি সুশাসিত, জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার।"
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবসে দেশজুড়ে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে, যেখানে শহীদদের স্মরণ ও নতুন বাংলাদেশ গঠনের শপথ নেওয়া হচ্ছে।
ইউ