
ফাইল ছবি
দক্ষিণ এশিয়ার পারমাণবিক শক্তিধর দুই দেশ পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় চলমান যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আগামী ১৮ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র ও উপপ্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বৃহস্পতিবার দেশটির পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটে ভাষণ দেয়ার সময় তিনি জানান, গত ১৪ মে দুই দেশের সামরিক বাহিনীর অপারেশন্স বিভাগের প্রধান (ডিরেক্টর জেনারেল অব মিলিটারি অপারেশন্স-ডিজিএমও) পর্যায়ের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। খবর জিও নিউজের।
উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল ভারতের জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যের পেহেলগামে সংঘটিত সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়ায় ভারত গত ৭ মে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে সেনা অভিযান চালায়। কয়েক ঘণ্টার সেই অভিযানে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরসহ বেশ কিছু এলাকায় সন্ত্রাসী স্থাপনা লক্ষ্য করে ভারতীয় বিমান বাহিনী হামলা করে। এতে পাকিস্তানের ১৩ জন সেনাসদস্যসহ মোট ৫১ জন নিহত এবং ৭৮ জন আহত হন।
এর দুদিনের মধ্যে পাকিস্তান ‘বুনিয়ান উন মারসুস’ নামে পাল্টা সেনা অভিযান পরিচালনা করে। ভারতের সরকারের তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানের সেই অভিযানে ৫ জন ভারতীয় সেনা ও ১৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন।
এই পরিস্থিতিতে গত ১০ মে প্রথমবারের মতো ভারতের ডিজিএমও লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব ঘাই এবং পাকিস্তানের ডিজিএমও মেজর জেনারেল কাশিফ আবদুল্লাহ টেলিফোনে আলোচনা করেন। সেই বৈঠকের পর ১২ মে পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে আরও দুই দফায় দুদিন করে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানো হয়। সর্বশেষ গতকাল দুই দেশের ডিজিএমও পর্যায়ের বৈঠকে যুদ্ধবিরতি ১৮ মে পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে।
গতকাল সিনেটে দেওয়া ভাষণে ইসহাক দার বলেন, “গত ১০ মে সকাল ১০টা ১৫ মিনিটের দিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমাকে টেলিফোন করেন। আমি তার ফোন রিসিভ করার পর তিনি বলেন, ভারত যুদ্ধবিরতির জন্য রাজি।”
তিনি আরও বলেন, “সে সময় আমাদের অপারেশন বুনিয়ান উন মারসুসের প্রথম পর্ব শেষের পথে। আমি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বললাম, নয়াদিল্লি যদি যুদ্ধবিরতির জন্য প্রস্তুত থাকে তাহলে আমরাও রাজি আছি।”
কয়েক দশক ধরে চলমান ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সর্বশেষ উত্তেজনা শুরু হয় গত ৭ মে। সেদিন ভারত পাকিস্তান এবং আজাদ জম্মু ও কাশ্মীরের (এজেকে) বিভিন্ন এলাকায় বিমান হামলা চালিয়ে কমপক্ষে ৩১ জন বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করে। এর জবাবে পাকিস্তান ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে, যার মধ্যে তিনটি রাফায়েল। এছাড়াও ইসলামাবাদ কয়েক ডজন ড্রোনও ধ্বংস করে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, চার দিনের এই সংঘাতে ভারতের কমপক্ষে ১১ জন সেনা ও ৪০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন।
ইউ