
সংগৃহীত ছবি
বিশ্বের বেশিরভাগ ক্যাফে এবং চা-ঘরে অতিথিদেরই ‘রাজা’ মনে করা হয়। কিন্তু পোল্যান্ডের এক চা-ঘরের ‘রাজা’ হলো ছয়টি বিড়াল। অতিথিদের সেসব বিড়ালদের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হয়। তারা সেটি পছন্দও করেন। বিড়ালদের সঙ্গে সময় কাটাতেই অতিথিরা ঐ চা-ঘরে যান।
পোলিশ শহর লটশ-এ অবস্থিত ঐ চা-ঘরের নাম কোসি ওসি অর্থাৎ বিড়ালের চোখ। সেখানকার একটি বিড়ালের নাম ওলা। সম্প্রতি তার ১০তম জন্মদিন পালন করা হয়। চা-ঘরের মালিক আনিতা লিস ২০১৫ সালে ওলাকে উদ্ধার করে নিয়ে এসেছিলেন। তখন ওলার কোনো মালিক ছিল না। আর আজ সে রানী, এবং চা-ঘরটি তার রাজ্য।
লিস জানান, চা-ঘরের বিড়ালদের মধ্যে ওলা সবচেয়ে ছোট। তবুও সে সবার উপর আধিপত্য বিস্তার করে। যে-কোনোভাবেই হোক, সে অন্য সব বিড়ালদের বশীভূত করতে সক্ষম হয়েছ। তাই যখন তারা মারামারি করে তখন ওলা তাদের আলাদা করে দেয়। সে একটি বিশেষ বিড়াল।
ওলার জন্মদিনের পার্টিটি সম্ভবত পোল্যান্ডের সবচেয়ে শান্ত জন্মদিনের পার্টি হতে পারে। কারণ, বিড়ালরা জোরে শব্দ বা হঠাৎ নড়াচড়া পছন্দ করে না এবং ওলার অতিথিরা এই বিষয়টিকে সম্মান করে। সবাই শান্তভাবে কথা বলছিলেন। একইসঙ্গে চা, কেক আর সেখানে বসবাস করা ছয়টি বিড়ালের সাহচর্য উপভোগ করেছিলেন।
পার্টিতে আগত অতিথি ফিলিপ বলেন, এই জায়গার পরিবেশ খুবই শান্ত। এটা আমাকে স্বস্তি দেয়। বিড়ালগুলোও শান্ত বলে মনে হচ্ছে। তাদের জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করছে, তারা সুন্দর।
পোল্যান্ডে হাজার হাজার বিড়াল রাস্তায় বসবাস করে। তাদের অনেককেই তাদের মালিকরা পরিত্যক্ত করে রেখেছে। এই চা-ঘরে ছয়টি বিড়াল আছে, যাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়েছে। সেখানে তারা যা খুশি করতে পারে: টেবিলে ঘুমানো, আলমারিতে লাফ দিয়ে ওঠা, কিংবা খালি চেয়ারে উঠে সেখানে ঘুমিয়ে থাকা।
আনিতা লিস বলেন, তারা সবাই পরিত্যক্ত এবং গৃহহীন ছিল। এখানে তারা একটি বাড়ি, নিরাপত্তা আর খাবার পেয়েছে। তারা আমার এবং আমার কর্মীদের হৃদয় জয় করেছে। দশ বছর আগে চা-ঘরটি চালুর পর থেকে সেখানে সবকিছু বিড়ালের কথা মাথায় রেখে সাজানো হয়েছে। অতিথিদের অনেকে তাদের প্রিয় বিড়ালের মূর্তি বা ছবি দান করেছেন। যারা বিড়ালের আচরণ আরও ভালভাবে বুঝতে চান তাদের জন্য কর্মশালার আয়োজনও করে এই চা-ঘর।
পার্টি শেষে ওলাকে এখানে বাইরে হাঁটাতে নিয়ে যাওয়া হয়। ছয়টি বিড়ালের মধ্যে সেই একমাত্র, যে শহরের কোলাহলকে ভয় পায় না। চা-ঘরের মতোই ওলা বাইরেও ঠিক করে, সে কোথায় যাবে। তাই হয়তো পুরনো কথাটিতে কিছুটা সত্য আছে- যে বিড়ালদের মালিক নেই, তাদের কর্মচারী আছে।
//এল//