
পরিবার কল্যাণ সেবা ও প্রচার সপ্তাহের উদ্বোধন করলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক ................................. ছবি: সংগৃহীত
‘নিরাপদ মাতৃত্ব পরিকল্পিত পরিবার, স্মার্ট বাংলাদেশ হোক আমাদের অঙ্গীকার’ স্লোগান নিয়ে পরিবার কল্যাণ সেবা ও প্রচার সপ্তাহের উদ্বোধন করলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক।
বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন হলে এ উপলক্ষে এ কর্মসূচির আয়োজন করে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, দেশে এখনও প্রতিবছর ৬৫ হাজার শিশু মৃত্যুবরণ করে। এছাড়া প্রায় সাড়ে চার হাজার নারী শিশু জন্ম দিতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেন। এটা আগে দ্বিগুণের বেশি ছিল, তবে বর্তমানে অনেক কমেছে। গত বছরে তুলনায় চার-পাঁচ শতাংশ কমেছে। কিন্তু এখনও অনেক বেশি আছে।
মন্ত্রী আরো বলেন, মা ও শিশুর স্বাস্থ্য পুরোপুরি নিরাপদ হয়ে ওঠেনি। তবে আমরা চেষ্টা করছি। ভবিষ্যতে যারা মা হবেন, তাদেরকে নিরাপদ মাতৃত্ব কি সেটা বোঝাতে হবে। আমাদের বাল্যবিয়ে পরিহার করতে হবে। দেশে এখনও ৫০ শতাংশ বাল্যবিয়ে হয়ে থাকে। বাল্যবিয়ের কারণে মাতৃমৃত্যু এবং শিশু মৃত্যুর হার অনেক বেড়ে যাচ্ছে। বাল্যবিয়ে আমাদেরকে কমাতে হবে। বাচ্চা প্রসবের জন্য সঠিক মানের ক্লিনিক ও হাসপাতাল থাকতে হবে। সরকার এই বিষয়ে যথেষ্ট পদক্ষেপ নিয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক আরও বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে মাতৃমৃত্যুর হার ৭০ এ নামিয়ে আনতে হবে, যেটা বর্তমানে ১৫৬ আছে। শিশু মৃত্যুর হার ১২ তে নামিয়ে আনতে হবে, এখন যেটা ২২ এ রয়েছে। অর্থাৎ বর্তমানে যা আছে তার অর্ধেকে নামিয়ে আনতে হবে। আগামী ৭ বছরের মধ্যে এটা আমাদের করতে হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি'র লক্ষ্যমাত্রা-৩ অর্জনে তথা মাতৃ ও শিশু মৃত্যু রোধে সেবা ও প্রচার সপ্তাহ-২০২৩ ব্যপক কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী পরিবার কল্যাণ সেবা ও প্রচার সপ্তাহ উপলক্ষ্যে জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা সেবা পৌঁছে দিতে এবং সেবাকেন্দ্র থেকে স্বাভাবিক প্রসবসেবা দিতে প্রতিটি উপজেলার একটি করে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের মডেল কেন্দ্রগুলোকে সঠিকভাবে কার্যকর করার আহ্বান জানান। সবাইকে সেবা ও প্রচার সপ্তাহ সফলভাবে উদযাপন করার আহ্বান জানিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মোঃ আজিজুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মোঃ টিটু মিয়া, স্বাস্থ্য সেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোঃ খুরশিদ আলম প্রমুখ। আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাহান আরা বানু।
এসময়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর মত তাঁর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা স্বাস্থ্যবান্ধব নীতিমালা প্রণয়ন, উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিশু ও মায়েদের স্বাস্থ্যের প্রতি অত্যন্ত মনোযোগী। তার উদ্যোগের কারণে শিশু ও মাতৃ মৃত্যুহার হ্রাস পেয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে চলমান ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেড়ে গেছে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গৃহীত উদ্যোগ সারাবিশ্বে আলোড়ন তুলেছে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা তিনি বিশ্ব নেতাদের জাগ্রত করেছেন। অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে জ্বালাও পোড়াও অপরাজনীতির বিরুদ্ধে কাজ করতে হবে।
উক্ত উদ্বোধনী ও আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে শুদ্ধাচার পুরস্কার ২০২২-২৩ প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানটি সঠিকভাবে পরিচালনা ও আয়োজনের দায়িত্বে ছিলেন- জনাব আবদুল লতিফ মোল্লা, পরিচালক (আইইএম), পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর।
//জ//