ছবি: প্রশিক্ষণ কর্মশালায়...
‘নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা –মানবাধিকার লঙ্ঘন-আসুন সহিংসতার শিকার নারী ও কন্যার জন্য সমন্বিত সেবা নিশ্চিত করি’’-প্রতিপাদ্যে ঢাকার উদ্যোগে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কার্যক্রম আরো সমন্বিতভাবে করার লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (২৬ অক্টোবর) সকাল ১০টায় রাজধানীর তেজগাঁও উইমেন সাপোর্ট এন্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের অডিটোরিয়ামে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ও উইমেন সাপোর্ট এন্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন’র উদ্যোগে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপারেশনস), ডিএমপি, একে এম হাফিজ আক্তার বিপিএম বার; বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মাসুদা রেহানা বেগম। সভাপতিত্ব করেন উইমেন সাপোর্ট এন্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের পিপিএমবার উপ-পুলিশ কমিশনার জনাব হামিদা পারভীন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জনাব একে এম হাফিজ আক্তার বলেন, ‘সারা বিম্বে নারী নির্যাতন এবং সাইবার ক্রাইম বাড়ছে। সাম্প্রতিক সময়ে করোনা ও যুদ্ধ পরিস্থিতি নারী প্রতি সহিংসতাকে আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। এরকম পরিস্থিতিতে তিনি নারীদের সাইবার ক্রাইম থেকে রক্ষা পেতে সচেতন হওয়ার জন্য আহ্বান জানান। তিনি এসময় ধর্ষণের ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের জন্য আলামত সংরক্ষণের উপর জোর দেন।’ পাশাপাশি ধর্ষণের শিকার নারীদের জন্য মানসিক সহায়তা দেয়ার কথা উল্লেখ করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অ্যাড. মাসুদা রেহানা বলেন, ‘নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধের লক্ষ্যে আমরা দীর্ঘদিন ধরে একত্রে কাজ করে আসছি। ক্ষেত্রবিশেষে আমরা আন্দোলন করেছি, এ্যাডভোকেসি ও লবি করেছি। উইমেন সাপোর্ট এন্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন ভিকটিমদের সহায়তার জন্য আন্তরিকতা, মানবিকতার সাথে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। সমন্বিতভাবে কাজগুলো সঠিকভাবে করতে পারলে এই সেল গুলো ভিকটিমদের সেবাদানে আরো উন্নত হবে।’
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের লিগ্যাল এইড সম্পাদক রেখা সাহা বলেন, ‘নারীর অগ্রগতির অন্যতম উদাহরণ আজ পুলিশ প্রশাসনে যেসকল নারীরা কাজ করছেন তারা প্রত্যেকেই। নারীকে এমন অবস্থানে আসতে পরিবার ও সমাজের সকল প্রতিক’ল পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। নারীর অধিকারের ক্ষেত্রেও চিন্তা ও চেতনার পরিবর্তন হচ্ছে। ক্ষমতায়নের উচ্চ পর্যায়ে নারীর উপস্থিতি থাকলেও তার সিদ্ধান্তগ্রহণ, অংশীদারিত্ব এবং অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের এখনো কাজ করতে হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে উইমেন সাপোর্ট এন্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের পিপিএমবার উপ-পুলিশ কমিশনার হামিদা পারভীন বলেন, ‘নানা সীমা বদ্ধতা থাকলেও ভিকটিমদের সর্বোচ্চ সহায়তা দিতে উইমেন সাপোর্ট এন্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন আন্তরিকভাবে কাজ করছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন বাস্তবায়নে ডিভিশন কাজ করছে এটি আমাদের গর্বের জায়গা।’; নারীদের নিরাপত্তার জন্য সকলকে সচেতন করতে তিনি সমন্বিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে ১ম কর্মঅধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। অধিবেশনে নারীর মানবাধিকার ও জেন্ডার ধারনা নিয়ে আলোচনা করেন কেন্দ্রীয় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদেও লিগ্যাল এইড উপ-পরিষদ সম্পাদক রেখা সাহা; নারীর অধিকার রক্ষায় মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা সম্বলিত কতিপয় রায় বাস্তবায়ন বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করেন বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের অ্যাডভোকেট ও বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের জাতীয় পরিষদ সদস্য অ্যাড. মাকছুদা আখতার; পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন, ২০১০ বিষয়ে আলোচনা করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাড. রাম লাল রাহা।
১ম কর্মঅধিবেশন শেষে দ্বিতীয় কর্মঅধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। অধিবেশনে নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে চ্যালেঞ্জ ও করনীয়; গণপরিবহন ও গণপরিসরে যৌন সহিংসতা প্রতিরোধে করণীয় এবং পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধের ঘটনার ক্ষেত্রে করনীয় বিষয়ে দলীয় কাজ অনুষ্ঠিত হয়। দলীয় কাজ শেষে নারী ও কন্যা নির্যাতন প্রতিরোধ ও নির্মূলের ক্ষেত্রে কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে আলোচনা করেন অংশগ্রহণকারীরা।
প্রশিক্ষণ কর্মশালায় উইমেন সাপোর্ট এন্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের কর্মকর্তা, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের নেত্রীবৃন্দ ও কর্মকর্তা সহ ৭০ জন উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মহিলা পরিষদের আইনজীবী অ্যাড. ফাতেমা খাতুন।
ইউ