ঢাকা, বাংলাদেশ

শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

English

মতামত

প্রধানমন্ত্রীর ত্রিদেশীয় সফরে অনন্য উচ্চতায় দেশ

ফরিদা ইয়াসমিন

প্রকাশিত: ১৫:৪২, ১৫ মে ২০২৩; আপডেট: ১৭:৪৫, ১৭ মে ২০২৩

প্রধানমন্ত্রীর ত্রিদেশীয় সফরে অনন্য উচ্চতায় দেশ

ছবি: ফরিদা ইয়াসমিন, জাতীয় প্রেসক্লাব সভাপতি

বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি ১৫ দিনের রাষ্ট্রীয় সফর শেষ করে দেশে ফিরেছেন। জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য সফরে প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন। ভোর থেকে রাত অবদি নানা কর্মসূচি ও সাইডলাইন বৈঠকে অংশ নেন। কখনও তাকে ক্লান্ত হতে দেখিনি। কাছ থেকে দেখেছি খুব পরিশ্রমী অসাধারণ এক শেখ হাসিনাকে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সফরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে নতুন করে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন । বৈঠকের নানা কর্মসূচি, প্রাপ্তি, তাই প্রমাণ করে। বিশ্ব নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশের অব্যাহত অর্থনৈতিক উন্নয়নের  ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক শেখ হাসিনাকে অর্থনৈতিক নেতা আখ্যায়িত করে বলেছেন “আপনি আমাদের অনুপ্রেরণা”। যুক্তরাজ্যে  রাজা তৃতীয় চার্লসের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসা বিভিন্ন দেশের নেতাদের সংগে প্রধানমন্ত্রী সাইডলাইন বৈঠক করেন। তিন দেশেই শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে বিশ্ব নেতাদের মনোযোগ আকর্ষণ করেন এবং রোহিঙ্গা সমাধানে কার্যকর ভূমিকা নেয়ার আহ্বান জানান। প্রতিটি দেশেই তিনি নাগরিক সংবর্ধনায় বক্তব্য রাখেন। এই সফরের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা দেশগুলোর সংগে একাধারে ব্যবসায়িক, মানবিক ও জলবায়ু পরিবর্তনে কাজ করার অংশীদারিত্ব গড়ে তুলেছেন। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিন দেশ সফর শুরু করেন ২৫ এপ্রিল। তিনি দেশে ফিরে আসেন ৯ মে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফোমিও কিসিদার আমন্ত্রণে শেখ হাসিনা প্রথমে টোকিও সফর করেন। তারপর যুক্তরাষ্ট্র যান বিশ্বব্যাংকের আমন্ত্রণে। বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনি লন্ডনে যান। লন্ডনে শেখ হাসিনা রাজা তৃতীয় চার্লসের অভিষেকে যোগ দেন। মূল কর্মসূচির বাইরে তিনি দ্বিপাক্ষিক ও সাইডলাইন বৈঠক করেন। প্রতিটি দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীদের সংগে বৈঠক করেন এবং বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। 

২৫ এপ্রিল সকাল ৭টা ৫৬ মিনিটে বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসাবে জাপানের উদ্দেশ্যে যাত্রা করি। বাংলাদেশ সময় বেলা ১টা ৪৮ মিনিট ও স্থানীয় সময় বেলা ৪টা ৪৮ মিনিটে টোকিওর হানেদা আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরে বিমানটি অবতরণ করে। হানেদা আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জাপানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তাকেই সানসুকে এবং জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাহাবুদ্দিন আহমদ স্বাগত জানান এবং আনুষ্ঠানিকভাবে লাল গালিচা অভ্যর্থনা এবং গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর ব্যক্তিগত স্টাফ এবং তিনজন পূর্ণমন্ত্রী ও একজন উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন আকাসাকা প্যালেসে নিয়ে যাওয়া হয়। আমরা সফরসঙ্গীরা যাই পাঁচতারকা হোটেল নিউ ওতানি। ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন জাপান সফরে যান তখন তিনি এই হোটেলটিতে উঠেছিলেন। সেসময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন ছোট মেয়ে শেখ রেহানা ও কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সফরে চারদিন জাপান ছিলেন। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে ৮টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। সামরিক সহযোগিতা, শিপ রিসাইক্লিং, শুল্ক সংক্রান্ত, তথ্য প্রযুক্তি ও সাইবার সিকিওরিটি, শিল্পোন্নয়ন, কৃষি, মেধা সম্পদ ও মেট্রোরেল ইত্যাদি বিষয়ে চুক্তি ও সমঝোতা হয়। মহেশখালি-মাতারবাড়ি সমন্বিত অবকাঠামো উন্নয়ন উদ্যোগ ( এমআইডি) এবং বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট  অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব নিয়ে আলোচনা করেন দুই প্রধানমন্ত্রী। জাপানের উন্নয়নসংস্থা জাইকার (জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো অপারেশন এজেন্সি) অর্থায়নে মহেশখালীর মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ হচ্ছে। ১৭ হাজার কোটি টাকা ব্যায়ে এই বন্দর নির্মাণ করছে জাপান। ইতিমধ্যে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জাহাজ ভিড়েছে এই বন্দরটিতে। এই গভীর সমুদ্র বন্দর থেকে বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় পণ্যপরিবহনের সুবিধা পাওয়া যাবে। দুই বৃহৎ পরাশক্তি ভারত ও চীন এই দুই দেশই এই বন্দর নির্মাণে আগ্রহী ছিল। তবে ভারত ও চীনের রাজনৈতিক প্রতিযোগিতাকে পাশ কাটিয়ে জাপানকে বন্দর নিমার্ণের অনুমতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দূরদর্শিতার প্রমাণ। জাপান বাংলাদেশের বৃহত্তম উন্নয়ন সহযোগী দেশ। উন্নয়ন অংশীদারিত্বে জাপানের যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। দেশের সমুদ্র বন্দর, বিমান বন্দর, সড়ক যোগাযোগ ইত্যাদি অবকাঠামো উন্নয়নে জাপান বাংলাদেশকে সহযোগিতা দিয়ে আসছে। ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত বাংলাদেশ হওয়ার চলমান প্রচেষ্টায় সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যে সহযোগিতা আরও জোরদার হতে যাচ্ছে। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে শেখ হাসিনা জাপানের প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতার আশ্বাস আদায় করেন। ঢাকা- নারিতা সরাসরি বিমান চলাচল শুরু হতে যাচ্ছে এবছরেই। দুই নেতা ব্যবসা বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তা বিষয়ে কথা বলেছেন। জাপান বাংলাদেশের মধ্যে সামরিক সহযোগিতায় ঢাকা টোকিও থেকে সামরিক অস্ত্র ও সরঞ্জামাদি কিনবে। প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় সমরাস্ত্রের ভান্ডার বৃদ্ধি ও যুদ্ধ কৌশলগত সক্ষমতা বৃদ্ধির কথা রয়েছে। এছাড়া প্রতিরক্ষা সফর বিনিময়,সংলাপ, সেমিনার, প্রশিক্ষণ, ওয়ার্কশপ ইত্যাদি রয়েছে। 

ভারতের সাথে সীমান্তবর্তী দেশ বাংলাদেশ। বাংলাদেশ দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া ও দক্ষিণ এশিয়ার প্রবেশপথ হিসেবে কাজ করতে পারে। এসব বিবেচনায় বাংলাদেশ কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। ইন্দোপ্যাসিফিক অঞ্চলের স্থিতিশীলতায় বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে এই হিসেবে জাপান বাংলাদেশকে গুরুত্ব দিচ্ছে। এই কারণেই বাংলাদেশের যোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়ন ও শিল্প উৎপাদন বৃদ্ধিতে জাপান সহযোগিতা করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরের মধ্যদিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় উঠেছে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার সংগে যৌথ বৈঠক শেষে দুই প্রধানমন্ত্রী যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন। জাপানের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রশংসা করে বলেন, অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা ও বিনিয়োগ পরিবেশের উন্নতি দুই দেশের সম্পর্ককে আরও গতিশীল করবে। এর আগে মার্চমাসে ভারত সফরের সময় জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা নয়াদিল্লিতে তার বক্তব্যে এই অঞ্চলের জন্য নয়া পরিকল্পনার কথা জানান। সেখানে তিনি অংশাদারিত্ব চুক্তিসহ বাংলাদেশের সাথে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছিলেন। 

রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধ, পোষ্ট কোভিড ও বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার এই সময়টাতে জাপান সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে যখন বিশ্ব এক নতুন মেরুকরণের দিকে যাচ্ছে। যেখানে চীন ও রাশিয়াকে জাপান ইন্দোপ্যাসিফিক ও ইউরোপের নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে করে। সেখানে বাংলাদেশের সংগে কৌশলগত সম্পর্ক তৈরিতে আগ্রহী হয়ে উঠছে জাপান। যৌথ বিবৃতিতে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী দুই দেশের সামরিক সম্পর্ক স্থাপনে আস্থা স্থাপন করেছেন। যেখানে সমরাস্ত্রের ভান্ডার বৃদ্ধি ও যুদ্ধ কৌশলগত সক্ষমতা বৃদ্ধির কথাও বলা হয়েছে। ফলে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে অর্থনৈতিক ও সামরিক সহযোগিতার অঙ্গীকার হয়েছে বলা যায়। এতে বাংলাদেশ জাপানের মধ্যে সম্পর্ক ব্যাপক অংশীদারিত্ব থেকে কৌশলগত অংশীদারিত্বে পৌঁছেছে। ১৯৭২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি যে কয়েকটি দেশ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল তার মধ্যে জাপান অন্যতম। পরের বছর জাপান সফরের মধ্য দিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দুই দেশের মধ্যে ভ্রাত্বৃত্বের সম্পর্কের সূচনা করেছিলেন। 

চারদিনের সফরে ইম্পেরিয়াল প্যালেসে সম্রাট নারুহিতের সংগে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। বৈঠক করেছেন জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োশিমাসা হায়াশি, জাইকা প্রেসিডেন্ট, জেট্রো চেয়ারম্যানের সংগে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখা কয়েকজন জাপানির হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন। জাপান সরকার বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই সফরকে অত্যন্ত গুরুত্বের সংগে দেখেছে। টোকিওর সড়কগুলো বাংলাদেশ ও জাপানের পতাকা দিয়ে সজ্জিত করা হয়। বিমানবন্দরে লাল গালিচা সংবর্ধনা এবং গার্ড অব অনার দেয়া হয়।

জাপানের চারদিনের সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রে যান। দুর্নীতি হয়েছে বলে বিশ্বব্যাংক পদ্মাসেতু নির্মাণে বাংলাদেশকে ঋণ সহায়তা দেয়নি। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের পর বিশ্বব্যাংকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতি একটি নতুন মাত্রা দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সে অনুষ্ঠানে বিশ্বব্যাংক প্রধান ডেভিড মালপাসকে পদ্মাসেতুর একটি ছবি উপহার দেন। শেখ হাসিনা তাঁর বক্তব্যে দৃঢ়তার সংগে বলেছেন, আমরা ভিক্ষা নিতে আসিনি, ঋণ নিতে এসেছি। বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে ২২৫ কোটি ডলারের ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। আঞ্চলিক বাণিজ্য ও যোগাযোগ, দুর্যোগ প্রস্তুতি ও পরিবেশ ব্যবস্থাপনার ৫টি প্রকল্পে এই অর্থ দেয়া হবে। এসব প্রকল্পের মধ্যে ডেল্টা প্লান ২১০০ বাস্তবায়নে প্রথম একটা বড় ধরনের বিনিয়োগ প্রকল্প রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে শেখ হাসিনা ব্যবসায়ীদের সংগে বৈঠকে বাংলাদেশে বিনিযোগের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠনের প্রস্তাব দেন।

যুক্তরাজ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজা তৃতীয় চার্লসের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ৪ মে লন্ডন পৌঁছান। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করে বলেছেন, তার স্ত্রী ও দুই কন্যা শেখ হাসিনার ভক্ত, তিনি  দক্ষিণ এশিয়ার নেতাদের জন্য অনুপ্রেরণা। ঋষি সুনাক বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উচ্চ প্রবৃদ্ধির প্রশংসা করেন। রাজা তৃতীয় চার্লসের অভিষেক অনুষ্ঠানের আগের দিন কমনওয়েলথ রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে  দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় ঋষি সুনাক শেখ হাসিনাকে এসব কথা বলেন। অত্যন্ত হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশে দুই নেতা আলোচনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তিন দেশের রাষ্ট্রীয় সফরে যাওয়ার আগেই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইন্দোপ্যাসিফিক কৌশলে বাংলাদেশের অবস্থান সুস্পষ্ট করে। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ইন্দো প্যাসিফিক রুপরেখায় বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরেন। ভারত মহাসাগর থেকে প্রশান্ত মহাসাগরের দেশগুলোর সাথে ব্যবসাবৃদ্ধি ও নিরাপত্তা রক্ষায় পারস্পরিক আস্থা ও সহযোগিতার কথা রয়েছে এই কৌশলে। ইন্দো প্যাসিফিক অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও জাপান, চীন, অষ্ট্রেলিয়া, ভারত ও বাংলাদেশসহ অনেক দেশ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ইন্দো প্যাসিফিক অঞ্চলের যে কৌশল নেয়া হয়েছে শেখ হাসিনার সফরের তিনটি দেশই সেখানে রয়েছে। ফলে এই তিনটি দেশ সফরই এই মুহূর্তে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ব্রিটিশ সরকার বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়া ডেস্ক থেকে ইন্দোপ্যাশিফিক অঞ্চলে স্থানান্তর করেছে। বাংলাদেশকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে কমনওয়েলথ রাষ্ট্রপ্রধানদের সংবর্ধনায় রাজা তৃতীয় চার্লস প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংগে কথা বলেন। রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের কন্যা প্রিন্সেস অ্যান প্রধানমন্ত্রীর সংগে আগ্রহভরে কথা বলেন এবং তাঁর আশ্রায়ণ প্রকল্পের খোঁজ খবর নেন। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি এমপি সস্ত্রীক শেখ হাসিনার হোটেলে এসে সৌজন্য সাক্ষাত করেন। এটি পূর্ব নির্ধারিত কোন বৈঠক ছিল না। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে। এছাড়া সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার শেখ হাসিনার সংগে সাক্ষাত করেন। সাতজন সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধান শেখ হাসিনার সাথে হোটেল স্যুইটে এসে সাইডলাইন বৈঠক করেন। এদের মধ্যে সিঙ্গাপুর, শ্রীলংকা, ভুটান রয়েছে। প্রত্যেকে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার প্রশংসা করেন। তারা প্রত্যেকেই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় শেখ হাসিনার মানবিকতার প্রশংসা করেন। শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

বাংলাদেশ এক তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে আজ উন্নয়নের মহাসড়কে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নিমার্ণ, কর্ণফুলি টানেল, মেট্রোরেল, রুপপুর পারমাণবিক প্রকল্প, গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ, কোভিড ১৯ ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি দৃষ্টি কেড়েছে বিশ্ববাসীর। ডিজিটাল বাংলাদেশ শেষ করে এখন যাত্রা স্মার্ট বাংলাদেশের। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশ এখন প্রস্তুত। এসবকিছুই বদলে দিচ্ছে বাংলাদেশকে। শেখ হাসিনার সাহস, দৃঢ়তা আর নেতৃত্বের প্রশংসা করেন বিশ্বনেতৃবৃন্দ। শেখ হাসিনার দুরদর্শী নেতৃত্বের কারণেই বাংলাদেশ আজ মর্যাদার আসনে। এই ত্রিদেশীয় সফর বাংলাদেশের সফল আর দূরদর্শী কূটনীতির উদাহরণ। এসবকিছুই ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশ হওয়ার চলমান প্রক্রিয়ায় নতুন মাত্রা যোগ করবে। 

লেখক: সভাপতি, জাতীয় প্রেস ক্লাব
সম্পাদক, দি বিজনেস আই

ইউ

বৃষ্টি কবে হবে, জানাল আবহাওয়া অফিস

নারীর প্রতি বৈষম্য দূর করতে সরকার নিরন্তর কাজ করছে

গরমে চা খাওয়া কি ঠিক?

তাপমাত্রা কমাতে হিট অফিসারের নতুন উদ্যোগ

কোথায় হবে অনন্ত এবং রাধিকার বিয়ে?

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা

বেড়েছে সবজি-মাংসের দাম

উনার মনে হয় ডাক্তার দেখানো উচিত, বুবলীকে অপু 

চলমান তাপপ্রবাহ রেকর্ড ভেঙেছে ৭৬ বছরের

৭৫ নেতাকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার

ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তা সম্মেলন অনুষ্ঠিত

চিকিৎসা খাতে থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

নরসিংদীতে ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে প্রেমিকের আত্মহত্যা

এক মিনিটের জন্য শেষ বিসিএসের স্বপ্ন

ধর্মীয় বিষয় নিয়ে বিদ্যা বালানের বিস্ফোরক মন্তব্য