
ছবি সংগৃহীত
দক্ষ কর্মীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে এইচ-১বি ভিসার ফি ব্যাপক হারে বাড়িয়েছে মার্কিন প্রশাসন। এতদিন এই ভিসার জন্য নিবন্ধিত কোম্পানিগুলোকে বছরে দেড় হাজার ডলার ফি দিতে হতো। নতুন নির্বাহী আদেশে তা বাড়িয়ে এক লাখ ডলার করা হয়েছে, যা কার্যকর হবে ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে। এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রযুক্তি খাতে কর্মরত ভারতীয় ও চীনা কর্মীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঘোষণা ও এর উদ্দেশ্য
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এইচ-১বি ভিসার ফি বৃদ্ধির এই নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন। তাঁর প্রশাসন এই পদক্ষেপের মাধ্যমে অভিবাসন নীতিকে আরও কঠোর করতে চাইছে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো আমেরিকান কর্মীদের প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানকে উৎসাহিত করা। মার্কিন বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লুটনিক জানিয়েছেন, এই পদক্ষেপের লক্ষ্য হলো বিদেশি কর্মীদের বদলে দেশের অভ্যন্তরের দক্ষ কর্মীদের কাজে লাগানো।
প্রভাব এবং প্রতিক্রিয়া
-
প্রযুক্তি শিল্পে প্রভাব: এইচ-১বি ভিসার ওপর নির্ভরশীল প্রযুক্তি খাতের জন্য এই ফি বৃদ্ধি একটি বড় আঘাত হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশেষ করে ভারত ও চীনের মতো দেশ, যেখান থেকে বিপুল সংখ্যক কর্মী যুক্তরাষ্ট্রে যায়, তাদের ওপর এর ব্যাপক প্রভাব পড়বে। নতুন নিয়ম কার্যকর হওয়ার আগে মাইক্রোসফট ও জেপি মর্গানের মতো বড় কোম্পানিগুলো তাদের কর্মীদের দেশে ফিরে না গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে থাকার পরামর্শ দিয়েছে।
-
সমর্থন ও সমালোচনা: এই নীতির সমালোচকরা বলছেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রে উদ্ভাবন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করবে। টেসলার প্রধান নির্বাহী এলন মাস্কের মতো ব্যক্তিরা মনে করেন, প্রতিভার ঘাটতি পূরণে এই ভিসা অপরিহার্য। অন্যদিকে, এই নীতির সমর্থকরা বলছেন, এটি আমেরিকান কর্মীদের চাকরি রক্ষা করবে এবং তাদের মজুরি বাড়াতে সাহায্য করবে।
-
ভারত ও চীনের ওপর প্রভাব: এইচ-১বি ভিসার সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী ভারত ও চীন। ২০২৪ সালে মোট অনুমোদিত ভিসার ৭১% ভারতীয় এবং ১১.৭% চীনা কর্মীরা পেয়েছিলেন। এই সিদ্ধান্তের পর ভারতের ইনফোসিস ও উইপ্রো এবং কগনিজেন্ট টেকনোলজি সলিউশনসের মতো বড় আইটি কোম্পানিগুলোর শেয়ারমূল্য হ্রাস পেয়েছে।
-
ভবিষ্যৎ: বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সিদ্ধান্তের ফলে কোম্পানিগুলো উচ্চ-মূল্যের কাজগুলো বিদেশে স্থানান্তর করতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদে আমেরিকার উদ্ভাবন ক্ষমতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এছাড়াও, এই নীতির বিরুদ্ধে প্রযুক্তি শিল্পের পক্ষ থেকে আইনি লড়াইয়ের সম্ভাবনাও রয়েছে।
ইউ