ঢাকা, বাংলাদেশ

বুধবার, , ২২ অক্টোবর ২০২৫

English

মতামত

যুদ্ধ ভারাক্রান্ত পৃথিবী

আব্দুল্লা রফিক:

প্রকাশিত: ১০:৫২, ২৯ জানুয়ারি ২০২৪

যুদ্ধ ভারাক্রান্ত পৃথিবী

আব্দুল্লা রফিক,সংগৃহীত ছবি

সারা পৃথিবী এখন যুদ্ধ ভারাক্রান্ত, আবার অন্য ভাবে বললে যুদ্ধ দ্বারা আক্রান্ত l পৃথিবী সৃষ্টির শুরু থেকেই দুর্বলের উপর সবলের অত্যাচার, দমন, পীড়ন নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার l তারপর বিবর্তনের ধারায় পৃথিবী একসময় রাষ্ট্র কাঠামোতে অনেকগুলো সার্বভৌম দেশ এ পরিণত হলো l কিন্তূ দমন পীড়ন কিছুতেই থামলো না শুধু ভিন্নতর রূপ ধারণ করলো l অর্থনৈতিকভাবে উন্নত দেশগুলো দুর্বল অর্থনীতির দেশগুলোর উপর খবরদারি অথবা এককথায় একে মাস্তানি শব্দে প্রতিস্থাপন করা যায় l

বর্তমান পৃথিবীতে অর্থনৈতিক ভাবে এবং সমরাস্ত্রের সম্ভারে পরিপূর্ণ দেশ হিসাবে পৃথিবীতে একনম্বর দেশ হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রকে ধরা হয় এবং এব্যাপারে কারো দ্বিমত আছে বলে আমার মনে হয় না l তার সাথে জোট বদ্ধ জি - ৭ ভুক্ত অন্য ছয় টি দেশ কানাডা, ব্রিটেন, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, জাপান, এর সঙ্গে আরো কিছু দেশ আছে যেমন অস্ট্রেলিয়া এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভুক্ত অন্যান্য দেশগুলো l যারা সবাই যুক্তরাষ্ট্র যা বলে সেই একই সুরে কথা বলে, একই নীতি অনুসরণ করে, সময় সময় মনে হয় এটা তাদের জন্য শিরোধার্য্য l

কিন্তূ বর্তমান এ বিশ্বে ভূরাজনীতি অনেক বিবর্তিত হয়েছে, যেমন অর্থনৈতিক সুপার পাওয়ার হিসাবে আবির্ভুত হয়েছে চায়না l যুক্তরাষ্ট্রের পরেই যার অবস্থান, ধীরে ধীরে নিজস্ব টেকনোলজিতে বলীয়ান হয়ে নিউক্লিয়ার পাওয়ার, স্যাটেলাইট পাওয়ার, সমরাস্ত্রের সম্ভার শক্তিশালী করে আমেরিকা এবং তার জোটের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে !তারপর স্নায়ু যুদ্ধের পর সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে রাশিয়া কয়েক দশকের দুর্বলতা কাটিয়ে এখন নতুন শক্তিতে বলীয়ান হয়ে উঠেছে ! পৃথিবীর চতুর্থ শক্তি হিসাবে আগমন ঘটেছে ইন্ডিয়ার ভূরাজনোতিক অবস্থার কারণে আমেরিকার ইন্দো প্যাসিফিক স্ট্রাটেজির বড় অংশীদার হয়ে আবির্ভুত হয়েছে l

বর্তমান বিশ্বে বেশ কয়েকটি চলমান যুদ্ধ যার সব কটিই সূত্রপাত হয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্র আমেরিকার বাইডেন প্রশাসনের যুদ্ধের মাধ্যমে তাদের নীতির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশে বাধ্য করার কৌশল থেকে ! ঐযে আদিম যুগের কৌশল “শক্তি দিয়ে বাগে আনা” l

বাইডেন প্রশাসনের প্রত্যক্ষ ইন্ধনে রাশিয়া / ইউক্রেন যুদ্ধ, রাশিয়ার খায়েস ছিলো তাদের দাবিকৃত ইউক্রেনের কয়েকটি প্রভিন্স তাদের দখলে আনা, আর আমেরিকার খায়েস ছিল রাশিয়ার এই চেষ্টা বন্ধ করা l দেখতে দেখতে রাশিয়া / ইউক্রেন যুদ্ধ বছরের উপর চলে গেলো কোনো ফলাফল নেই l কিন্তূ ক্ষতি যা হওয়ার হলো সারা পৃথিবীতে. বন্ধ হয়ে গেলো শস্য ভান্ডার খ্যাত ইউক্রেন থেকে খাদ্য সামগ্রী দেশে দেশে খাদ্য সামগ্রী রপ্তানী ! অন্যদিকে তেল এবং গ্যাস সম্পদে সম্মৃদ্ধ রাশিয়ার আংশিক তেল গ্যাস রপ্তানী বন্ধ করায় সারা ইউরোপ সহ সারা পৃথিবীতে প্রাকৃতিক গ্যাস এবং তেলের সংকট সৃষ্টি হলো - হু হু করে বেড়ে গেলো জ্বালানি তেল ও গ্যাস l যার পরিণতিতে বাংলাদেশ করোনার সময় জমানো রিজার্ভ এর উর্ধগতিতে ভীষণভাবে ছেদ পড়লো, জ্বালানি আমদানিতে প্রচুর রিজার্ভ ব্যবহার হলো, বাংলাদেশের রিজার্ভ এ টান পড়লো l খাদ্য শস্যের দাম সারা পৃথিবীতেই বেড়ে গেলো, মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে গেলো পৃথিবী জুড়ে, বাংলাদেশে প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়ে গেছে l

দ্বিতীয় যুদ্ধ বাধালো ইসরায়েল / হামাস এর মধ্যে যদিও শুরুটা হামাসের মাধ্যমে হয়েছে l কিন্তূ বাইডেন প্রশাসন ও জোট চাইলে সহজেই যুদ্ধ বন্ধ করতে পারতো, কিন্তূ তারা তা না করে ইসরায়েলকে পূর্ণ সমর্থন দিয়ে হামাস দমনের নাম পুরো গাজা স্টিপ ফিলিস্তিন মুক্ত করার প্রতিজ্ঞায় মত্য l ফলাফল প্রায় ২৬০০০ উপর সাধারণ ফিলিস্তিন এবং ২০০০ এর কাছাকাছি সাধারণ ইসরাইলির মৃত্যু এবং অসংখ আহত ! আন্তর্জাতিক আদালতের রায় ইসরায়েলকে যুদ্ধ বন্ধের আদেশ, কিন্তূ ইসরায়েল যুদ্ধবন্ধে অস্বীকৃতি l তবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আমেরিকার চোখ রাঙানো উপেক্ষা করে রাষ্ট্রীয়ভাবে ফিলিস্তিনের প্রতি জোরালো সমর্থন জানিয়েছে l তবে বাংলাদেশের বিরোধী দল আমেরিকার প্রতি নতজানু হয়ে ফিলিস্তিনকে সমর্থনদান থেকে বিরত থেকেছে 
যেটা খুবই দুঃখজনক !

বর্তমানে চলমান তৃতীয় যুদ্ধ - আমেরিকা এবং তার জোটরাষ্ট্রগুলো একত্রিত হয়ে ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের উপর আক্রমণ করছে উদ্দেশো একটাই তাদেরকে লোহিত সাগর থেকে বিতাড়িত করা l লোহিত সাগর এশিয়া এবং আফ্রিকার মধ্যে সংক্ষিপ্ত পথে যোগাযোগ, আবার লোহিত সাগরের প্রায় এক হাজার কিলোমিটার পার হয়ে সুয়েজ খাল দিয়ে ইউরোপের সঙ্গে যোগাযোগ l বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচলে খরচ অনেক কম l হুতি বিদ্রোহীদের যোদ্ধারা লোহিত সাগরে চলো জাহাজের উপর মাঝে মধ্যে আক্রমণ চালাচ্ছে, কিন্তূ এই যুদ্ধের ফলে লোহিত সাগর দিয়ে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচল বিঘ্নিত হলে আবারো খাদ্যপণ্য ও জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে l

আবার আমেরিকার তাইওয়ান পলিসিতে চায়না ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সামরিক মহড়া চলমান ! উভয় দেশই তাদের নিজস্ব শক্তি বৃদ্ধি করছে l চায়না এখনো তাইওয়ানকে তাদের অংশ বলেই মনে করে, আর তাইওয়ান নিজেদেরকে সবসময়ই স্বাধীন সার্বভৌম দেশ হিসাবে মনে করে l যুক্তরাষ্ট্র সমরাস্ত্র দিয়ে সমর্থনে তাইওয়ান এর এই দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন দিয়ে চলেছে l 

এবছের শেষে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন l প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এর জোরালো সম্ভাবনা আছে আবার প্রেসিডেন্ট হওয়ার l অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে হয়তো ডোনাল্ড ট্রাম্প পৃথিবীর সমস্ত যুদ্ধ পরিহার করে অর্থনৈতিক ভূরাজনীতির দিকেই নজর দিবে বলেই মনে করা হচ্ছে l দেখা যাক পৃথিবীর সুবাতাস ফিরত আসে কিনা ! 


প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট: বাংলাদেশ কানাডা এসোসিয়েশন, ক্যালগেরি 
Email: [email protected]

//এল//

অবশেষে কমলো রুপার দাম

সেন্টমার্টিন ভ্রমণে সরকারের নতুন কঠোর নির্দেশনা

সেন্টমার্টিন ভ্রমণে সরকারের নতুন কঠোর নির্দেশনা

সেন্টমার্টিন ভ্রমণে সরকারের নতুন কঠোর নির্দেশনা

ইরানে উসমান (রা.)-এর সময়ের কুরআন প্রদর্শনী

নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবি জানাল এনসিপি

মানবসম্পদ: প্রযুক্তি বনাম মানবিকতা

ন্যায়বিচার নিশ্চিতে আইন থাকলেও বাস্তবায়ন নেই

ইসলামী ব্যাংকের বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত

ওআইসি’র সহযোগিতা চাইলেন রিজওয়ানা হাসান

ইবতেদায়ী শিক্ষকরা অসন্তুষ্ট, উপদেষ্টার পদত্যাগ চান

নতুন পুত্রসন্তানের বাবা হলেন গায়ক জেমস

সরকার নিরপেক্ষভাবেই কাজ করছে: আসিফ নজরুল

সততা দেখান, ভয় পাবেন না: ইসি

নোয়াখালীতে ফরম ছিঁড়ে প্রার্থীর ভাইকে মারধর