
ছবি সংগৃহীত
নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেছেন, সরকারি কর্মকর্তাদের মান ভূলুণ্ঠিত হয়েছে—এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে এই সরকারের অধীনেই সততা ও নিষ্ঠা দেখানোর সুযোগ এসেছে। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ (কনসিকন্সিয়াল) উল্লেখ করে তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) কঠোর নির্দেশনা দেন যেন তারা কারও পক্ষেই কাজ না করেন এবং পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকেন।
বুধবার (২২ অক্টোবর) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে নির্বাচন ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত এক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে ইউএনওদের উদ্দেশে তিনি এসব কথা বলেন।
ইসি আনোয়ারুলের কঠোর নির্দেশনা:
-
সাহসী ভূমিকা: নির্বাচনের সময় কর্মকর্তাদের সাহসী মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে, কারণ এটি তাদের অস্তিত্বের প্রশ্ন হতে পারে।
-
ভয় দূরীকরণ: ৫ আগস্টের পর কিছুদিন পরিস্থিতি অস্থিতিশীল থাকলেও এখন আর সেই ভয় নেই। সরকার যেভাবে নির্বাচন পরিচালনার সুযোগ দিয়েছে, সেটা সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজে লাগানো উচিত এবং ভয় না পেয়ে দৃঢ় মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে।
-
সততা ও নিষ্ঠার সুযোগ: তিনি জোর দিয়ে বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারি কর্মকর্তাদের সততা ও মনোবল তুলে ধরার সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
সিইসি'র আহ্বান: চাপের কাছে নত হবেন না, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন
অন্যদিকে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকালে কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার না করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের আহ্বান জানান। তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, নির্বাচন কমিশনও কোনো চাপের কাছে নত হবে না এবং শুধুমাত্র আইন অনুযায়ী নির্দেশনা দেবে। কমিশন কোনো বেআইনি নির্দেশনা দেবে না।
সিইসি আরও বলেন:
-
আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীলতা: আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীলতার অভাব থাকার কারণেই দেশে বর্তমান দুরবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতি বদলাতে হলে সবাইকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে কাজ করতে হবে এবং এই সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে।
-
সুশাসন ও পেশাদারিত্ব: তিনি ‘রুল অব ল’ (আইনের শাসন) চাইলেন, ‘নট রুল বাই ল’ (শাসন করার জন্য বানানো আইন) নয়। নির্বাচনকালীন যে ধরনের কাজের দায়িত্বই পড়ুক না কেন, তা ন্যায়ানুগভাবে, আইনসম্মতভাবে, নিরপেক্ষভাবে এবং পেশাদারিত্বের সঙ্গে পালন করতে হবে।
-
সংকট মোকাবিলা: যেকোনো সংকট মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার মানসিকতা রাখার পরামর্শ দেন তিনি। তিনি সতর্ক করে বলেন, ভোট বাক্স দখলের পর মাঠে গেলে চলবে না, আগে থেকেই প্রস্তুত থাকতে হবে।
-
প্রশিক্ষণের গুরুত্ব: প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশে সিইসি বলেন, শেখার কোনো শেষ নেই এবং প্রশিক্ষণ একটি পুরো কর্মজীবনব্যাপী চলে। এই প্রশিক্ষণকে গুরুত্ব সহকারে নিয়ে অর্জিত জ্ঞান অন্যদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের এই প্রশিক্ষণ এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের কঠোর বার্তা সরকারি আমলাতন্ত্রের প্রতি একটি স্পষ্ট নির্দেশনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ইউ