ছবি: উইমেনআই২৪ ডটকম
বাংলাদেশে ধর্ম, বিশ্বাস ও সম্প্রীতির সুদীর্ঘ ঐতিহ্যকে লালন করে নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়েছে। ২৬ অক্টোবর) রবিবার ঢাকার কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের (কেআইবি) কনভেনশন হল-১ এ 'দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশ' কর্তৃক আয়োজিত এক 'সম্প্রীতি সংলাপে' বক্তারা এই আহ্বান জানান।
যুক্তরাজ্য সরকারের সহায়তায় 'দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশ' "এজেন্টস অফ চেইঞ্জ: এ বাংলাদেশ ফ্রিডম অফ রিলিজিওন অর বিলিফ লিডারশিপ ইনিশিয়েটিভ" শীর্ষক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এর অংশ হিসেবে নাগরিক, ধর্মীয় এবং তরুণ নেতৃত্বসহ স্বেচ্ছাসেবীদের অংশগ্রহণে এই সংলাপটি অনুষ্ঠিত হয়।
সংলাপের মূল আলোচনা ও আহ্বান
সংলাপে বক্তারা ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষা এবং সমাজের বৈচিত্র্যকে সম্মান জানানোর গুরুত্ব তুলে ধরেন:
-
বৈচিত্র্যকে সম্মান: দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর প্রশান্ত ত্রিপুরা বলেন, সমাজে নানা বৈচিত্র্য রয়েছে। মানুষে মানুষে ভেদাভেদ ও অসমতা কমিয়ে এই বৈচিত্র্যকে সম্মান দেখাতে হবে।
-
গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ: তিনি আরও বলেন, "বাংলাদেশ এখন একটি ক্রান্তিকালের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমরা আশা করি, ভবিষ্যতে বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে উঠবে, যেখানে সবাই সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ থাকবে।"
-
সমতা ও সম্প্রীতি: ব্রিটিশ হাই কমিশন, ঢাকার গভর্নেন্স অ্যাডভাইজার ড. শাহনাজ করিম মন্তব্য করেন, সামাজিক সম্প্রীতি রক্ষা এবং ধর্মীয় ও সামাজিক নেতৃত্ব দেওয়া নারী ও সংখ্যালঘুদের বাদ দিয়ে সম্ভব নয়। বাংলাদেশের সকল ধর্মের শান্তির হাতিয়ার হলো সমতা ও সম্প্রীতি।
-
ধর্মের মূল বাণী: ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক পরিচালক মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, "প্রত্যেক ধর্মের মূল বাণী হলো সম্প্রীতি, কল্যাণ, শান্তি ও ভালোবাসা।" তিনি উল্লেখ করেন, ইসলাম ধর্মে ভিন্ন ধর্ম ও প্রতিবেশীদের অধিকার রক্ষার কথা বারবার বলা হয়েছে।
-
তরুণদের ভূমিকা: ড. শাহনাজ করিম এবং মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম উভয়েই মনে করেন, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ ও তরুণরা সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় একটি বড় ভূমিকা পালন করতে পারেন এবং এক্ষেত্রে সিভিল সোসাইটির মাধ্যমে তরুণদের কাজে লাগাতে হবে।
-
আন্তর্জাতিক অনুপ্রেরণা: ফর্বস এজেন্টস অফ চেইঞ্জ প্রজেক্টের ডিরেক্টর ড. চার্লস রীড তরুণ প্রজন্মের কার্যক্রমের প্রশংসা করে বলেন, "বাংলাদেশে আমরা সবসময় দেখে আসছি তরুণ প্রজন্মের কার্যক্রমের মাধ্যমে তাদের লিডারশিপ আগের তুলনায় অনেক উন্নত হয়েছে। আমরা সত্যই অনুপ্রাণিত।"
কার্যক্রমের ব্যাপ্তি
এই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে দেশের নয়টি জেলায় ধর্ম ও বিশ্বাসের স্বাধীনতা এবং সামাজিক সম্প্রীতি সুরক্ষায় তরুণ স্বেচ্ছাসেবীদের উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে। এই কর্মসূচিগুলোতে সংশ্লিষ্ট এলাকার নাগরিক, রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় নেতৃত্ববৃন্দ সহযোগিতা করছেন।
সংলাপে উপস্থিতি
রবিবার (২৬ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টায় খামারবাড়ি রোডে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের (কেআইবি) কনভেনশন হল-১ এ এই 'সম্প্রীতি সংলাপ' অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন:
-
মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, সাবেক পরিচালক, ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
-
ড. চার্লস রীড, ফর্বস এজেন্টস অফ চেইঞ্জ প্রজেক্টের ডিরেক্টর, অপারেশনস ও চার্চ অফ ইংল্যান্ডের পলিসি অ্যাডভাইজার।
-
তাহেরা জাবীন, সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাডভাইজার, ফরেন কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও), ব্রিটিশ হাই কমিশন, ঢাকা।
-
ড. শাহনাজ করিম, গভর্নেন্স অ্যাডভাইজার, এফসিডিও, ব্রিটিশ হাই কমিশন, ঢাকা।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর প্রশান্ত ত্রিপুরা। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশ-এর সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার শশাঙ্ক বরণ রায়।
ইউ





