ঢাকা, বাংলাদেশ

বৃহস্পতিবার, , ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

English

জাতীয়

সংরক্ষিত নারী আসনে আসন সংখ্যা বৃদ্ধির আহ্বান

উইমেনআই প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৬:৪৬, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫; আপডেট: ১৬:৪৭, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সংরক্ষিত নারী আসনে আসন সংখ্যা বৃদ্ধির আহ্বান

ছবি: উইমেনআই২৪ ডটকম

সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে আসন সংখ্যা বৃদ্ধির আহ্বান এবং সরাসরি নির্বাচনের বিষয়ে একমত পোষণ করেন বিশিষ্টজনেরা।

বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে দশটায় আন্তর্জাতিক সিডও দিবস ২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে সিরডাপ মিলনায়তনে ‘সংসদে নারীর কার্যকর ও ফলপ্রসূ প্রতিনিধিত্ব: সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচন’ বিষয়ক গোলটেবিল আলোচনা সভায় বিশিষ্টজনেরা একথা বলেন।

সভায় মডারেটর হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম। সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির পক্ষে ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন নিজেরা করি’র সমন্বয়কারী খুশী কবির। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অ্যাডভোকেসি ও নেটওয়ার্কিং পরিচালক জনা গোস্বামী।

সভায় সম্মানিত আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর প্রাক্তন সংসদ সদস্য ড. নিলোফার চৌধুরী মনি, ঐক্যন্যাপের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাড. এস এম এ সবুর, জাতীয় পার্টির মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)-এর সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়াকার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)-এর সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ এবং সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির নেতৃবৃন্দ।

ধারণাপত্রে খুশী কবির বলেন, গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার অন্যতম শর্ত দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীর গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করতে হলে রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে তাদের অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করা। জাতীয় সংসদে জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত কমপক্ষে এক-তৃতীয়াংশ নারী সদস্যের উপস্থিতি নারী সমাজের স্বার্থ ও মানবাধিকার রক্ষায় ভূমিকা রাখবে এবং জনগণের কাছে তাদের দায়বদ্ধতা তৈরি করতে সহায়ক হবে। স্থানীয় সরকারের সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের বিধান বহুদিন ধরে কার্যকর রয়েছে। একইভাবে জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচন চালু হলে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের পথ প্রশস্ত হবে।

তিনি এসময় সুপারিশ হিসেবে উল্লেখ করেন:

  • জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন থাকতে হবে;

  • সংসদের মোট আসন সংখ্যা হবে ৪৫০, যার মধ্যে ৩০০ সাধারণ আসন এবং ১৫০ সংরক্ষিত নারী আসন;

  • পাশাপাশি ২টি সাধারণ আসনের সঙ্গে একটি সংরক্ষিত আসন থাকবে;

  • সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়নের প্রথা বাতিল করে জনগণের সরাসরি ভোটের ব্যবস্থা করতে হবে;

  • এ ব্যবস্থা অন্তত ২/৩ মেয়াদ বলবৎ রাখতে হবে।

বিএনপি-র প্রাক্তন সংসদ সদস্য ড. নিলোফার চৌধুরী মনি বলেন, ২০২৫ সালেও নারীকে ভাবতে হয় সে মনোনয়ন পাবে কিনা, যা খুবই দুঃখজনক। আরপিও অনুসারে নারীর ৩৩% প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার কথা থাকলেও রাজনৈতিক দলগুলো বাস্তবায়ন না করে শুধু সময়ক্ষেপণ করেছে। নারী তার মর্যাদা চায়। সিডও সনদ এবং সংবিধানে নারী-পুরুষের সমতার কথা বলা হয়েছে, এর বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে।

ঐক্যন্যাপের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাড. এস এম এ সবুর বলেন, নারীর অধিকার নেই সম্পদে, নেই রাষ্ট্র শাসনে। রাজনীতিতে তাদের ভূমিকা প্রতিনিধিত্বমূলক নয়। সিডও সনদের ধারা ০২ ও ১৬(১)(গ)-এর উপর থেকে সংরক্ষণ তুলে সরকারকে স্বাক্ষর করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে নারীর জন্য আসন সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

জাতীয় পার্টির মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, সংবিধানে মৌলিক অধিকারের ক্ষেত্রে নারীর সমতার কথা বলা হলেও সেটি এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। আজকের সুপারিশকৃত দাবিগুলো বাস্তবায়নে অনেক দল একমত নাও হতে পারে। এজন্য রাজনৈতিক দলগুলোর স্বাক্ষর সংগ্রহ করে মেমোরেন্ডাম জমা দিতে হবে। সংসদের উচ্চকক্ষে ৫০% নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে।

সিপিবি সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, নারীদের ভোটাধিকার প্রয়োগে সচেতন করতে হবে। অনেক নারী ভোটার হতে চান না, বিশেষ করে গার্মেন্টস কর্মীরা। এই বিষয়ে সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে।

বিপ্লবী ওয়াকার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, নারীর ক্ষমতায়নের প্রধান অন্তরায় পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা। নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের জন্য সাধারণ আসনে নারীকে মনোনয়ন দিতে হবে, নির্বাচন কমিশনকে নারীর আর্থিক সহায়তা দিতে হবে এবং আরপিও অনুসারে দলীয় কাঠামোর সব স্তরে ৩০-৩৩% নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে।

বাসদ সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ বলেন, আমাদের জনসংখ্যার ৫১% নারী। নারীর প্রকৃত ক্ষমতায়নের জন্য সংরক্ষিত নারী আসনের দায়িত্ব ও কর্তব্য সুনির্দিষ্ট করতে হবে। নারীরা পুরুষ প্রার্থীর সঙ্গে সরাসরি প্রতিযোগিতায় এখনো টিকতে পারেন না, তাই সংরক্ষিত আসনে জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচন হওয়া উচিত।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বান বলেন, রাজনীতি, অর্থনীতি ও সমাজে নারীর অংশগ্রহণ এখনো প্রান্তিক। সংবিধান ও সিডও সনদে সমতার কথা বলা হলেও তা বাস্তবায়ন কঠিন। নারীর প্রার্থীতা সাধারণ আসনে নিশ্চিত করতে হবে, পাশাপাশি সংরক্ষিত আসনে নির্বাচন থাকতে হবে। নারীর জন্য নির্বাচনী এলাকা তৈরি করতে হবে।

আলোচনার শেষে বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা মত দেন, সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে আসন সংখ্যা বৃদ্ধি এবং সরাসরি নির্বাচনের বিষয়ে সকলে একমত। নারীর ৩৩% মনোনয়ন ও প্রত্যক্ষ নির্বাচনের বিষয়ে নারী সংগঠনগুলোকে আরও আওয়াজ তুলতে হবে। রাজনৈতিক ইশতেহারে নারী আন্দোলনের দাবিগুলো অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, রাজনীতির পরিবেশ নারীবান্ধব করতে হবে, নারী বিদ্বেষী প্রচারণা বন্ধ করতে হবে এবং প্রতিবন্ধী ও দলিত নারীদের অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি করতে হবে।

মডারেটরের বক্তব্যে ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, সিডও সনদের মূলকথা বৈষম্যহীনতা, প্রকৃত সমতা ও দায়বদ্ধতা। নারীর জন্য আসন সংখ্যা বৃদ্ধির দাবি অনির্দিষ্টকালের জন্য নয়, ২/৩ মেয়াদের জন্য হওয়া উচিত। নারীদের নির্বাচনী এলাকার জন্য প্রস্তুত করা পর্যন্ত সংরক্ষিত আসন বৃদ্ধির কোটাপদ্ধতি থাকা প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, নারী আন্দোলন শুধু নারীরা করলেও এর সুফল সমাজের সবাই ভোগ করে। তবে নারীর মধ্যে পিতৃতান্ত্রিক মানসিকতা, নারী-বিদ্বেষী মনোভাব ও প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতি চর্চা বড় সংকট। নারী আন্দোলনকে শক্তিশালী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে হবে।

ইউ

ইন্দোনেশিয়ার নারীদের ঝাড়ু হাতে প্রতিরোধ

বড় মেয়েরা নীরব বিপ্লবী

নারীবান্ধব কোটা পদ্ধতি চালু করার আহ্বান নারীপক্ষের

মহেশখালী-মাতারবাড়ীতে নতুন শহরের জন্ম হবে: প্রধান উপদেষ্টা

ভোটার ও এজেন্টবিহীন নির্বাচন আর নয়: ইসি সানাউল্লাহ

সংরক্ষিত নারী আসনে আসন সংখ্যা বৃদ্ধির আহ্বান

নির্বাচনের আগে ২ হাজার এএসআই নিয়োগ-পদোন্নতি

মালয়েশিয়ায় আটক ৭৭০ অবৈধ বাাংলাদেশি

মালয়েশিয়ায় আটক ৭৭০ অবৈধ বাাংলাদেশি

সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস কক্সবাজারে

সড়ক দুর্ঘটনায় ৫০২ প্রাণহানি

ডাকসু নির্বাচন: আপিল বিভাগের রায়ে ভোটের পথ সুগম

প্রতিবছর বিদেশে ১০ লাখ কর্মসংস্থান: আসিফ নজরুল

ক্র্যাবের সঙ্গে কোয়ালিটি হসপিটালিটির চুক্তি

প্রতিবন্ধিতার দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনে গণমাধ্যমের সক্রিয় ভূমিকা প্রয়োজন