
হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী-------------------- ছবি: উইমেনআই
বাংলাদেশে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে যেহারে প্রাণহানি ঘটছে, এভাবে চললে আর মাত্র দু’দিন পরেই মৃত্যু সংখ্যা হাজারের ঘরে ষ্পর্শ করবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টমহল। চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৯৫৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
গতকাল ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৯৬ হাজার ৮৩১ জন। সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানানো হয়েছে, গত মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে নতুন করে আরও ২ হাজার ৯৫০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। নতুন শনাক্তদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭২৬ জন, আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ২২৪ জন। একই সঙ্গে এই সময়ের মধ্যে ডেঙ্গুতে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ৯ হাজার ৯৬৭ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। ঢাকার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ৩ হাজার ৫৩৮ জন এবং অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৬ হাজার ৪২৯ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ লাখ ৮৫ হাজার ৯০৬ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ৭৭ হাজার ৫৪ এবং ঢাকার বাইরে ১ লাখ ৮ হাজার ৮৫২ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৯৫৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বলা হচ্ছে, নানা পদক্ষেপ নিয়েও বাংলাদেশে ডেঙ্গুর তাণ্ডব রোখা যাচ্ছে না। পরিসংখ্যাণে উল্লেখ করা একদিনে ২১জনও মারা গিয়েছেন ।অর্থাৎ দেশে ডেঙ্গুর বাড়বাড়ন্ত যে উদ্বেগজনক পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। এদিকে ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় জরুরি পরিস্থিতিতে ২৯ কোটি ১৯ লক্ষ টাকা দিয়ে ২০ লক্ষ আইভি ফ্লুইড স্যালাইন কেনার অনুমোদন দিয়েছে সে দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রক। কয়েকদিন আগে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ-সহ শহর এলাকায় প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যবস্থার উন্নয়নে বাংলাদেশের জন্য ২০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক । চলতি বছরের নয় মাসে যেভাবে বাংলাদেশে ডেঙ্গুর দাপট দেখা যাচ্ছে, তাতে অতিমারী করোনার কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে।
২০০০ সালে প্রথম বাংলাদেশে আতঙ্ক হয়ে দেখা দেয় ডেঙ্গু। তখন শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছে। কিন্তু বর্তমানে সব বয়সের মানুষের মধ্যেই ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। ডেঙ্গু এখন আর শুধু রাজধানী ঢাকায় সীমাবদ্ধ নেই, ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়েছে গ্রামাঞ্চলেও। যে কারণে গ্রামাঞ্চল থেকে ডেঙ্গু রোগীকে ঢাকায় স্থানান্তর করা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার। রাষ্ট্রসংঘের এক রিপোর্ট মোতাবেক মৃত্যুর সংখ্যা সরকারি হিসেব থেকে বেসরকারি আরও বেশি। কারণ, অনেক ক্ষেত্রেই আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয় না। তাই পরিসংখ্যাণে বিস্তর ফারাক থেকে যাচ্ছে। গত বছর বাংলাদেশে ২৮১ জন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছিল। আর এ বছর হাজার হাজার ছুঁই ছুঁই।
//জ//