
ওষুধি গুণসম্পন্ন ধান চাষ করে কৃষক জিয়াউরের চমক
ওষুধি গুণসম্পন্ন ধান চাষ করে এলাকায় ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছেন যশোরের শার্শার ধান চাষী জিয়াউর রহমান। ইন্টারনেটের মাধ্যমে দেখে কৃষক জিয়াউর রহমান সুদূর বগুড়া ও ফেনী থেকে ওষুধি গুণসম্পন্ন ধানবীজ সংগ্রহ করে চাষ শুরু করে এলাকায় ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছেন। ওষুধি গুণসম্পন্ন এই ধানগাছ দেখতে দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন প্রতিদিনই অসংখ্য মানুষ। কৌতুহল জাগানো এই কালো প্রজাতির ধানের বিষয়ে মানুষের জানার শেষ নেই। আগ্রহ সহকারে ধান ক্ষেতের ছবি তুলে ফিরছেন অনেকেই।
কৃষি বিভাগ ও মাঠে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যশোরের শার্শা উপজেলা সদরের বাসিন্দা জিয়াউর রহমান তিনি বাহাদুরপুর ইউনিয়নের নটাদিঘা গ্রামের মাঠে ওষুধি গুণসম্পন এ কালো ধান চাষ শুরু করেছেন। তিনি বগুড়া ও ফেনী থেকে ভিয়েতনামের বেগুনী রাইচ, ব্লাক রাইচ ও চায়না ব্লাক রাইচ নামক এ ধানবীজ সংগ্রহ করে ৩ বিঘা জমিতে চাষ করেন। ওষুধি গুণের কথা এবং এই ধান চাষে খরচও কম এবং ফলন বেশি হওয়ার কথা জানতে পেরে অগ্রিম ধানবীজ কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। এটি ক্যানসার প্রতিরোধে এন্টি অক্সিডেন্ট পুষ্টি সমৃদ্ধ ধান। কালো চালের ভাত সাধারণ ভাতের অর্ধেক খেলে পেট ভরে যাবে।
ফাইবার বেশি থাকায় তা সময় নিয়ে হজম হবে। যা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য উপকারী। যদিও বৈজ্ঞানিক ভাবে কোন ধারনা দেওয়া হয়নি কৃষি বিভাগকে। এই ধানটা আমন ও বোরো দুই মৌসুমে চাষ করা যায়। বেগুনী রাইস বিঘা প্রতি আমনে ২০/২২ মন ও কালো রাইস ২৪/২৫ মন ধান পাওয়া যায়। ঢাকার বাজারে প্রতিকেজি ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানা যায়।
ধান চাষী জিয়াউর রহমান জানান, সুদূর বগুড়া ও ফেনী থেকে ঔষধি গুণসম্পন্ন এসব ধানবীজ সংগ্রহ করে এই প্রথম ৩ বিঘা জমিতে চাষ করি। আর এতেই মানুষের মাঝে কৌতুহলের উৎসাহ সৃষ্টি হয়েছে। কালো প্রজাতির এই ভিন্ন ধরনের ধানগাছ দেখতে প্রতিদিনই ভিড় জমাচ্ছেন অসংখ্য মানুষ। ইন্টারনেটের মাধ্যমে দেখে ঔষধি গুণের কথা ও এই ধান চাষে খরচও কম জানতে পেরে উৎসাহিত হয়ে ধানবীজ সংগ্রহ করি। এ ধানবীজ অগ্রিম কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। আর তিনিও অনেকের অনুরোধে ও এলাকার মানুষের কথা চিন্তা করে, এই ধান থেকে বীজধান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দীপক কুমার সাহা জানান, উপজেলায় এ ধানের চাষ এটা প্রথম। এটি ক্যানসার প্রতিরোধে এন্টি অক্সিডেন্ট পুষ্টি সমৃদ্ধ ধান। কালো চালের ভাত সাধারণ ভাতের অর্ধেক খেলে পেট ভরে যাবে। ফাইবার বেশি থাকায় তা সময় নিয়ে হজম হবে। যা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য উপকারী। এ কালো ধানটি আমন ও বোরো দুই মৌসুমে চাষ করা যায়। এই ধানটি দেশে প্রথম আসে কুমিল্লার এক চাষীর মাধ্যমে। এ ধানটি আসলে ভাত হিসেবে খাওয়ার জন্য নয়। খিচড়ি, পায়েশ ও ফিন্নি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। অনেক সৌখিন মানুষ এ চালটা খেয়ে থাকেন রোগ প্রতিরোধে। ঢাকার বিভিন্ন সুপার শপে এ চালের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। স্থানীয় ভাবে এটার চাল কালো হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে চাষে বেশি আগ্রহ দেখা যায় না। সরকারি ভাবে এ সম্পর্কে কোন ধারনা পাওয়া যায় তাহলে কৃষকদের এ ধান চাষে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে বলে তিনি জানান।
//এল//