
সংগৃহীত ছবি
সংবাদ সূত্রে নিহতের ভাই মোহাম্মদ কাশিমের বক্তব্য অনুযায়ী জানা যায়, ১৯ মে, সোমবার রাতে ভাই তাহেরসহ সাতজন জেলে মাছ ধরতে গেলে কোস্টগার্ডের গুলিতে তাহের ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে কোস্টগার্ডের সদস্যরা লাশটি প্যাকেটে ভরে অটোরিকশা করে শাহপরীর দ্বীপের দিকে নিয়ে যায়।
আত্মীয়দের নিকট লাশ বুঝিয়ে দেয়া হয় নাই। অপরদিকে কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে অভিযোগটি অস্বীকার করে দাবি করা হয়, টেকনাফের তুলাতলী ঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে কোস্টগার্ড বাহিনীর সদস্যরা আবদুল শুক্কুর নামের গুলিবিদ্ধ একজনসহ তিনজনকে আটক করে। তাঁকে চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনাটির বিষয়ে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) তীব্র ক্ষোভ ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। পাশাপাশি কোস্টগার্ড সদস্যদের বিরুদ্ধে আনিত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং গুমের অভিযোগের নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করে নিখোঁজ তাহেরকে উদ্ধার করে তার পরিবারের নিকট হস্তান্তরের জোর দাবি জানাচ্ছে।
সংবাদ মাধ্যম সূত্র অনুযায়ী, জেলে তাহেরের বড় ভাই মোহাম্মদ কাশিম বলেন, ১৯ মে, ২০২৫ তারিখ সোমবার দিবাগত রাতে তাহেরসহ সাতজন জেলে মাছ ধরতে গেলে কোস্টগার্ডের গুলিতে তাহের ঘটনাস্থলেই মারা যায়। পরে লাশটি প্যাকেটে ভরে অটোরিকশায় শাহপরীর দ্বীপের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। ভিকটিমের পরিবার ভিকটিমের লাশ বুঝে পায়নি। অপরদিকে কোস্টগার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট হারুন-অর-রশীদ বলেন, ‘লাশ গুমের এমন অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট’। টেকনাফের তুলাতলী ঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে কোস্টগার্ড বাহিনীর সদস্যরা গুলিবিদ্ধ আব্দুল শুক্কুর এবং মো. ইলিয়াস ও নুর মোহাম্মদ নামের তিনজনকে আটক করেন। তিনজনই মাদক কারবারি। তাঁদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাহের নিখোঁজের বিষয়টি নিয়ে টেকনাফে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতারা বলেন, এটি বিচারবর্হিভূত হত্যাকান্ড। এ প্রসঙ্গে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন জানান, নিখোঁজ তাহেরের লাশ ফেরত পেতে আইনি সহযোগিতা চেয়ে তাহেরের চাচা আশরাফ আলী একটি অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হয়েছে। টেকনাফ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হিমেল রায় জানান, জেলের লাশ গুমের বিষয়ে কেউ থানায় অভিযোগ করেননি। লাশ গুমের ঘটনায় আজ পৌর শহরে বিক্ষোভ-সমাবেশ হয়েছে।
মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) মনে করে, অভিযানকালে কোস্টগার্ড সদস্যদের বিরুদ্ধে আনীত বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুমের অভিযোগের বিষয়টি অনাকাঙ্খিত ও অনভিপ্রেত যা মানবাধিকারের চরম লংঘন। যে কোনো ব্যক্তির সুরক্ষা নিশ্চিত করা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আইনি দায়িত্ব, ফলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হত্যা ও গুমের ক্ষেত্রে জবাবদিহি নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের বাধ্যবাধকতা। এমএসএফ এক্ষেত্রে মোহাম্মদ তাহেরের নিখোঁজের বিষয়ে কোস্ট গার্ড সদস্যদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে অনতিবিলম্বে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠূ তদন্ত নিশ্চিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছে। পাশাপাশি নিখোঁজ মোহাম্মদ তাহেরকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করারও দাবি জানাচ্ছে।
//এল//