ঢাকা, বাংলাদেশ

রোববার, , ১১ মে ২০২৫

English

ফেসবুক থেকে

সিনেমার নায়ক এবং বাস্তবের নায়ক

মারিয়া সালাম

প্রকাশিত: ১৬:২৭, ৬ জুন ২০২৩; আপডেট: ১৬:৩২, ৬ জুন ২০২৩

সিনেমার নায়ক এবং বাস্তবের নায়ক

ছবি: মারিয়া সালাম...

‘‘অনেক বছর আগের কথা। তখন আমাদের একধাপ আগের সিনিয়ররা সিনেমা বলতে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রই দেখত। মাঝেমধ্যে দূরদর্শনের কল্যাণে হিন্দি বা টালিউডি সিনেমাও দেখত তারা, হলিউডের সিনেমাও দেখত কেউ কেউ। সেসব ভিসিআর কিনে বা ভাড়া করে। আমরা তখনও শিশু, তাই ইংরেজি সিনেমা আমাদের দেখা বারণ ছিল। আমরা শুনে শুনে বড় হয়েছি, ইংরেজি সিনেমার সমার্থক শব্দ 'ন্যা'কেড মুভি। সেগুলো আমাদের দেখা হতো না, এমনকি বাড়ির এডাল্ট নারীরাও সেসব দেখত না। আমাদের কিছু সিনিয়র কাজিন সেসব সিনেমা দেখত বলে তাদের সবাই খুব বাঁকা চোখেই দেখত। বিদেশি চলচ্চিত্র বলতে আমরা হঠাৎ হঠাৎ অনুমতি পেতাম, ব্রুস লি এর সিনেমা দেখার, সেসবও কম "ন্যা'কেড" ছিল বলে মনে হয় না! বিটিভিতে শুক্রবার বিকালে বাংলা সিনেমা দেখতাম, সেগুলো বেশ পুরাতন হতো। প্রতি মাসে বাড়ির মা খালারা হলে গিয়ে নতুন মুভি দেখে আসত, আমাদের নিতো বছরে একবার, কি দু'বার। সিনেমা দেখার অভ্যাস যেমনই থাক বা সিনেমার ধরণ যেমনই হোক, একটা জায়গায় হলিউড, বলিউড, ঢালিউড বা টালিউড যাই বলেন, এক  ছিল। সেটা হলো নায়ক মানেই দেখতে সুন্দর হতে হবে।’

‘জাফর ইকবাল যেদিন মারা গেলেন, সেদিন আমার এক কাজিন বলেছিল, ইশ, সে না মরে গিয়ে ওয়াসিম মরতে পারত। কারণ, তুলনামূলকভাবে ওয়াসিমকে আমাদের দেখতে তেমন ভালো লাগত না। এজন্য আমরা জসিমের চেয়ে আলমগীরকে বেশি পছন্দ করতাম। অভিনয় আমরা বুঝতাম না, আমরা নায়কের চেহারা দেখে সিনেমা দেখতাম। আমার এই ধারণা নিয়েই বড় হয়েছি যে নায়ক বা ভালো মানুষ মাত্রই তাকে অবশ্যই দেখতে ভালো হতে হবে। 
একবার আমার খালা আর মামাতো বোন মৌচাক মার্কেটে হারিয়ে গেল। তারা ঢাকার নতুন বেড়াতে এসেছিল। যে বাসায় এসেছিল, ঠিকানা ভুলে যাবার কারণে সেখানে ফিরতে পারছিল না। তখন মোবাইল ছিল না আর সবার বাড়িতে ল্যান্ডলাইনও থাকত না যে তারা যোগাযোগ করবে। পুলিশের কাছে যাওয়াটা তারা মোটেও নিরাপদ মনে করছিল না। প্রথম দফায় কেঁদেকেটে পরে দুইজনে ঠিক করেছিল, সুন্দর দেখতে কোন ছেলের সাহায্য চাইবে। কারণ সুন্দর দেখতে ছেলেরা নায়কের মতো তাদের নিরাপদে বাড়িতে পৌঁছে দিবে, তাদের কোন ক্ষতি হবে না। তারা দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত মার্কেটে ঘুরেঘুরে হাফ ডজন "সুন্দর" ছেলেকে অনুরোধ করেছিল, তাদের বাড়ি খুঁজে দেবার জন্য। কেউ রাজি হয়নি। ভগ্নহৃদয়ে তারা যখন সিড়িতে বসে কাঁদছিল, তখন "দেখতে খারাপ" মানে ঠিক নায়কের চেয়ে উল্টা দেখতে এক ছেলে এসে তাদের সাহায্য করতে রাজি হয়েছিল। যদিও তারা চেহারা দেখে সেই ছেলেকে ঠিক ভরসা করতে পারছিল না। সেই ছেলেই পরে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে, অনেক ঝামেলা করে, তাদের সন্ধ্যার দিকে আরেক আত্মীয়ের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পৌঁছে দিয়ে গিয়েছিল।’

‘নায়কের বৈশিষ্ট্য নিয়ে ধারণার মধ্যে অন্যতম প্রধান শর্ত ছিল, তাকে অবশ্যই দেখতে সুন্দর লাগতে হবে, লম্বা হতে হবে, ফিগার ভালো হতে হবে, সুন্দর করে চুল ছাঁটা থাকতে হবে, টাক থাকা চলবে না।’

‘ও হ্যা, নায়কের আরেকটা বড় বৈশিষ্ট্য ছিল, তাকে অবশ্যই স্টকার হতে হবে। চেহারা দেখতে ভালো এবং স্টকার। চেহারা খারাপ হলে আবার অন্য হিসাব, স্টক করলেই গণধোলাই মাস্ট। এরকম, একটা ধারণা থেকেই একদম অল্প বয়সে একজন এবিউজারকেই নায়ক ভেবে বসেছিলাম। আমার দেখা কমবেশি অনেক মেয়েই এরকম ভুল করে বসে ছিল। দেখতে একটু ভালো লাগলেই তারা পাড়ার রকে আড্ডা মারা, মূর্খ আর নেশাখোর ছেলেপেলের সাথে প্রেম করত। এসব লো কালচারাল হাইটের ছেলেপেলেকে তারা পালিয়ে বিয়েও করে ফেলত আর পরে অনুশোচনায় নিজের হাত-পা কামড়াত। এসব গত পয়ত্রিশ থেকে বিশবছর আগের ফ্যাক্ট।’

‘আমার জীবনে প্রথম নায়ক আমার বাবা। উনি দেখতে সুদর্শন, অত্যন্ত ভালো মনের মানুষ। তার সাথে প্লাস পয়েন্ট ভালো গাইতে পারেন আর প্রয়োজনে ঢিসুমঢিসুমও চলে। এরপর, যখন রিয়েল লাইফ নায়ক দেখলাম, তখন বুঝলাম নায়ক হতে গেলে চেহারা নয়, ব্যক্তিত্বই মূল। ব্যক্তিত্বহীন, স্টকার, ছ্যাচড়া, গালিবাজ, মেয়ে দেখলেই ইমপ্রেস করতে চাওয়া, জোর করে প্লেবয় হতে চাওয়া, মিথ্যাবাদী এরা দেখতে যতই সুন্দর হোক নায়ক এরা নয়। এরা ছ্যাচড়া। 
এতদিনে আমার ধারণা হয়েছিল, মেয়েরা এখন অনেক সচেতন। তারা সত্যিকার নায়কদের এখন চিনে। এখনকার সিনেমায় আর আগের মতো করে নায়কদের দেখায় না, তাই মেয়েদের ভুল কম হয়। পরে দেখি, এখনও মেয়েরা সেই ভুলেই আছে। দেখতে একটু সুন্দর দেখালেই সবাই ঝুলে পড়তে চায়, তা সে অপু, বুবলী বা পরীমনি যেই হোন না কেন।’

‘আমাদের ছেলেবেলায় তবু একটা ভালো বিষয় ছিল, নায়কের চেহারার সাথে সাথে মনটা দেখা হতো, টাকা-পয়সা ব্যাপার ছিলনা। ভালোবেসে প্রেমিকারা কুড়েঘরে গিয়ে উঠত। আর অন্যের প্রেমিক বা স্বামীর সাথে প্রেম করার প্রশ্নই উঠত না।’

‘আর এখন প্রেমিকের চেহারার সাথে সাথে প্রচুর টাকা থাকতে হবে। তারপর সে প্রেমিক অন্যের স্বামী হলেও সমস্যা নাই, তার আরো কয়েক ডজন প্রেমিকা থাকলেও নয়। প্রেমিকার লাইনে দাঁড়িয়ে যাবে কলেজ পড়ুয়া টিনএজ মেয়ে থেকে চাকরিজীবী নারী, উচ্চশিক্ষিত, কালচারাল হাইটওয়ালা মেয়েসহ সিনেমা নাটকের নায়িকাও। ’
‘Every dog has its day. Nowadays, every cad has his perfect match.’’

মারিয়া সালামের ফেসবুক প্রোফাইলের পোস্ট থেকে সংগৃহীত....

ইউ

লঞ্চে দুই তরুণীকে মারধর: ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

আওয়ামী লীগ কোনো কর্মকাণ্ড চালালেই ব্যবস্থা: ডিআইজি রেজাউল

ডাটাবেজ বিশ্লেষণ করে ছিনতাইচক্র শনাক্ত, অভিযান অব্যাহত

বাংলাদেশে একটি রিপাবলিক তৈরির চেষ্টা চলছে: ড. আলী রীয়াজ

গণফোরামের দপ্তর সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পথিকের মৃত্যু, শোক প্রকাশ

এলডিসি উত্তরণ ইস্যুতে যমুনায় বৈঠক, দ্রুত ৫ পদক্ষেপ বাস্তবায়নের তা

দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ দাবি বিএনপির

নোয়াখালীতে শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি পিন্টুর বাড়ি ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

 শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদের স্ত্রী তামান্না গ্রেপ্তার

‘আ.লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া আশা করি না’

সৌদি পৌঁছেছেন ৩৭৮৩০ হজযাত্রী, মৃত্যু ৫

গরমে হিট স্ট্রোক থেকে যেভাবে রক্ষা পাবেন

গেজেটের পরই আ.লীগের নিবন্ধন নিয়ে সিদ্ধান্ত: সিইসি

যুদ্ধাপরাধের সহযোগীদের ক্ষমা চাইতে হবে: মাহফুজ আলম

কাঁচা কাঁঠালের মজাদার বিরিয়ানি