
ফাইল ছবি
‘যতো কিছুই করেন না কেন আপনি সংখ্যা গরিষ্ঠ মুসলমান সম্প্রদায়ের বাঙালি জাতি। আপনাকে জীবনে বারবার লিখতে হবে জাতীয়তা বাংলাদেশী। আপনাকে বাংলার ফলমূল শাকসবজি, মাছ তরিতরকারি খেতে হবে। বাংলার এই আবহাওয়া পরিবেশেই আপনাকে সার্ভাইব করতে হবে। বাংলার ঐতিহ্যের সংস্কৃতি পরিমণ্ডলে আপনাকে বসবাস করতে হবে।’
‘মুসলমান কোন জাতি না, সম্প্রদায়। যেমন হিন্দু একটা সম্প্রদায়, খ্রিস্টান একটা সম্প্রদায়। একটা জাতিতে অনেক সম্প্রদায় বসবাস করতে পারে।’
‘একজন মানুষ হিন্দু সম্প্রদায় পরিবর্তন করে খ্রিষ্টান হতে পারেন, তার মানে তিনি ইংরেজ হতে পারবেন না। আবার মুসলিম হলেও তিনি আরাবিক হতে পারবেন না। বাঙালিই থেকে যাবেন।’
‘শতশত বছর আগে আমাদের পূর্বপুরুষ হিন্দু সম্প্রদায়ের ছিলো, কনভার্ট হয়ে আমরা আরাবিক জাতিতে পরিবর্তন হইনি, মুসলিম হয়েছি এবং কৃষ্টি কালচার সংস্কৃতিতে আমরা বাঙালিই আছি। এমনই থাকবো।’
‘জাতি হচ্ছে সেই সব মানুষের সমষ্টি যারা একই ভৌগলিক ভূখণ্ডে বসবাস করে ঐ ভূখণ্ডের স্বায়ত্বশাসন, স্বাধীনতা জাতীয়তাবাদ ও সার্বভৌমত্বের বিষয়ে ঐক্যমত থাকবে। এবং যাদের কৃষ্টি কালচার, ভাষা, সংস্কৃতি, আকার আকৃতির রং বর্ণের দিক থেকেও অনেকটা একই রকম। যেমন বাঙালি, ইংরেজ, নিগ্রো, চায়না, ইত্যাদি জাতি গোষ্ঠী।’
‘এই রকম একই জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে থাকতে পারে অনেক কমিউনিটির বা সম্প্রদায়ের মানুষ যাদের ধর্ম, সামাজিক প্রথার মিল আছে। এটা কোন কোন ভৌগোলিক সীমারেখার মধ্যে নির্দিষ্ট থাকেনা বিভিন্ন ভৌগলিক সীমারেখায় একই ধর্মের বা মতামতের মিল থাকতে পারে।’
‘আমাদের বাঙালী জাতির পরিচয় বহন করে আমাদের ঐতিহ্য সংস্কৃতি, যেমন পোষাক শাড়ি, লুঙ্গি, পাঞ্জাবি, ধুতি, আমাদের সংগীত বাঁশী ঢোল, নৃত্য, রিক্সা, লাঙ্গল, নৌকা, ধানের শীষ, লালন, নজরুল রাবিন্দ্রনাথ, বঙ্গবন্ধু, পাখি, ফলফুল, মুক্তিযুদ্ধ, আমাদের খেলাধুলা , উৎসব এমন হাজার জিনিস। পেঁচা, দোয়েল, বাঘ, হাস এ দেশে ইসলাম আসার আগে থেকে ছিলো।
বৈশাখী উৎসব ও মঙ্গল শোভাযাত্রা বাঙালির ভালোবাসার প্রানের উৎসব। এই শোভাযাত্রা ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ। আমাদের অহংকার।’
‘এবারের বৈশাখী মেলা পড়ছে আমাদের মুসলিম সম্প্রদায়ের অনেক পূন্যের মাস রমজানে, এই প্রচন্ড গরমে রোজা রেখে যদি মনে করেন মঙ্গল শোভাযাত্রায় আপনার কষ্ট হয়ে যাবে তবে আপনি যাবেন না। গেলেও নিজের স্বাস্থ্যের ঝুঁকি হয় এমন চিল্লাচিল্লি দৌড়াদৌড়ি না করেন। যারা পারবে তারা করুক। একসময় আমি রোজা রেখে ফুল টাইম স্ট্রাইকার হিসাবে এ ফুটবল খেলতাম, মুশফিক, তামিমও সেঞ্চুরি মেরেছে। তবে উৎসব করতে গিয়ে যেন রোজা ভেঙে ফেলতে না হয়। ফরজ রোজা সবার আগে।’
‘তবে রাজনৈতিক ইসু তৈরী করার জন্য আজাইরা ফতুয়া সৃষ্টি করবেন না, এটা হারাম ওটা হারাম। সবচেয়ে বড় হারাম কাজগুলির বিরুদ্ধে আগে আন্দোলন গড়ে তুলুন। ওয়াজে এক মাওলানা অপর ভিন্ন তরিকার মতাদর্শের মাওলানা কে যেভাবে গালিগালাজ করে কাফের ফতুয়া দিয়ে গিফত্ করে তা সবচেয়ে বড় হারাম কাজ কোরআন মতে। এর বিরুদ্ধে আন্দোলন হউক।
৯০% মুসলমানদের দেশে ধর্ষণ বলাৎকার, হত্যা, চুরি ডাকাতি ঘূষ দুর্নীতি ইভটিজিং এসব বড় গর্হিত ও হারাম কাজ এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করুন, ফতুয়া দিন। এইসব অপরাধ মুদি ঠেকাও, মঙ্গল শোভাযাত্রা'র, ৫০১ এর মানুনুল বাঁচাও, সাইদী বাঁচাও থেকে অনেক বড় অপরাধ।’’
সারোয়ার হোসাইন বেনুর ফেসবুক প্রোফাইলের পোস্ট থেকে সংগৃহীত…
ইউ