
দুই টাকায় ওয়াসার ৫লিটার পানিতে চলছে নগরবাসী
গত দুই সপ্তাহের বেশী সময় দেশে বৃষ্টি নেই। তীব্র তাপপ্রবাহে অতিষ্ট হয়ে পড়েছে জনজীবন। এদিকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র পানি সংকট। ঢাকার বিভিন্ন অঞ্চলে খাবার ও ব্যবহারের পানি না পেয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে নগরবাসী। কোন কোন এলাকায় বেশ কয়েক বছরধরেই এসমস্যা চলমান রয়েছে,বর্তমানে গরমমে এসমস্যা আরো তীব্র আকার ধারণ করেছে।
শ্যামলী আদাবরের বিভিন্ন বাসাবাড়ীতে মধ্যরাতে মর্টারের সাহায্যে পানি টানতে হচ্ছে। এলাকাবাসী বলেছেন, ঢাকা ওয়াসার আঞ্চলিক ক্যারালয়গুলোতে একাধিকবার অভিযোগ করেও সমস্যার সমাধানের প্রতিকার মিলছে না।অন্যদিকে ওয়াসার দাবি , গরমের কারণে পানির চাহিদা বেড়ে যাওয়াতে চলমান সংকট হয়েছে। এছাড়া পানির স্তরও নেমে গেছে কিছুটা।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় খোজঁ নিয়ে জানাগেছে, আদাবর, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডির শুক্রবাদ, গুলশানের শাহজাদপুর, যাত্রাবাড়ি, মীরহাজিরবাগ এলাকার মানুষের পানির ভোগান্তি প্রতিনিয়তই বাড়ছে। পানি না পেয়ে ওয়াশার স্থানীয় অফিসে গিয়ে অভিযোগ জানালেও সমাধান পাচ্ছে না।
আদাবরের বাসিন্দা নূর হোসেন বলেন, গত তিনধরে তিনি পানি কিনে এনে বাসার রান্না থেকে শুরু করে সকল সংসারের সকল কাজ করছেন। এক প্রশ্নের জবাবে নূর হোসেন বলেন, শেখের টেক ১১ নম্বর থেকে ওয়াসার পানি প্রতি ৫ লিটার ২টাকা করে মাম ও সোয়াবিনের ৫ লিটারের বোতলে পানি ভ্যানে করে নিয়ে আসছেন। একই ধরনের অভিযোগ রিংরোডের বাসিন্দা খাদিজা আক্তারের ।
তিনিও শেখের টেক থেকেই ওয়াসার পানি দুই টাকা দিয়ে ৫লিটার কিনে নিচ্ছেন। বাড়ীওয়ালা কিন্তু ঠিকই পানির বিল ভাড়ার সঙ্গে কেটে নিচ্ছেন! গুলশান শাহজাদপুরের বাসিন্দা ইসরাত জাহান টুকটুকি জানান, গতকয়েক সপ্তাহ ধরেই পানির সংকটে তিনি। বাধ্য হয়ে ওয়াসার পানি কিনতে হেল্পলাইনে কল করি । কিন্ত হেল্পলাইনে কল করেও ওয়াসার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যার্থ হয়েছেন তিনি। পানির এতো সংকট যে ওয়াসার সঙ্গে যোগাযোগ করে ও তিনি ওয়াসার পানি কিনতে পারেননি। একদিকে পানি সংকট অন্যদিকে লোডশেডিংয়ের কারণে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পানির সরবরাহ বিখ্নিত হচ্ছে বলে ওয়াসার একাধিক সুদেত্রর দাবি। অপরদিকে ওয়াসার পানির পাইপ বসানোর কাজ চলমান থাকায় ও নাকি এসমস্যা হচ্ছে ওয়াসা সুত্রে জানা যায়।
এদিকে যাত্রাবাড়ী,শনির আখড়া,দনিয়া ঘুরেও দেখা যায় পানির সংকট চলমান। এসব এলাকা বাসির দাবি গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই তারা পানির সংকটে রয়েছেন। দনিয়ার বাসিন্দা রাহেলা বেগম বলেন, রোজা রমজানের দিনেও এতো কষ্ট দিবে ওয়াশা ভাবতে পারছি না। তিনি বলেন, বাড়ি করে এখন বিপদে পড়েছি, না পারছি ভাড়াটিয়াদের পানি দিতে না পারছি নিজেরা ব্যাবহার করতে। মাস গেলেই ওয়াসার বীল দিতে হচ্ছে নির্ধারিত তারিখেই! কিন্তু ওয়াসা আমাদের পানি দিচ্ছেনা? এদিকে এক তথ্যে জানা গেছে ওয়াসার দৈনিক পানির উৎপাদন সক্ষমতা ২৬০ কোটি লিটার। ঢাকা শহরে ২১০ থেকে ২৪৫ কোটি লিটার পর্যন্ত চাহিদা থাকে। তবে গরমে চাহিদা বেড়ে যায় বলে জানিয়েছে ওয়াসা। এ বিষয়ে ওয়াসার কর্মকর্তারা বলছেন, বৃষ্টি না থাকায় সমস্যা হচ্ছে। তারা আরও বলেন, জনসংখ্যা ও চাহিদা বাড়ায় ভূগর্ভের পানির স্তর নিচে নামছে।
এ ছাড়া লোডশেডিংসহ বিভিন্ন কারণে উৎপাদনও কিছুটা কম হচ্ছে। যার কারণে তীব্র গরমে পানির চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সংকট তৈরি হচ্ছে কিছু জায়গায়। আমরা সমাধান করার চেষ্টা করছি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওয়াসার এক কর্মকর্তা জানান, রাজধানীর বেশির ভাগ এলাকায় এখন ২৪ ঘণ্টা পানি পাওয়া যাচ্ছে। তবে প্রচন্ড গরমে লোডশেডিং হচ্ছে, এতে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় কিছু জায়গায় সমস্যা হতে পারে।
//এল//