
ছবি: মহিলা পরিষদের লোগো...
দুই জেলায় দুই ধর্ষণের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলার এক প্রবাসীর স্ত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের পর আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনা ঘটে। অপর দিকে ঢাকার সাভারে গৃহশিক্ষক কর্তৃক দশম শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণের পর আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনা ঘটে।
নারীবাদি সংগঠনটির পক্ষ থেকে ওই দুই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থাগ্রহণসহ দ্রুত গ্রেফতার, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতকরণের দাবি জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ সেপ্টেম্বর) নারীবাদি সংগঠনেটির সভাপতি মালেকা বানুর সই করা গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে ২৫ সেপ্টেম্বরের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত খবরের বরাতে বলা হয়, নির্যাতনের শিকার নারীর স্বামী প্রবাসী। তিনি তার সন্তানসহ বাবার বাড়িতে থাকেন। কেনাকাটার জন্য পাশের বাজারে যাওয়া-আসার সময় অভিযুক্তরা ওই নারীকে নানা অনৈতিক কাজে কুপ্রস্তাব দিত এবং বিভিন্ন সময় তাকে উত্যক্ত করে আসছিল। গত ২২ সেপ্টেম্বর শুক্রুবার ঐ নারী শৌচাগারে গেলে অভিযুক্তরা ঘরে ঢুকে তার মায়ের হাত-পা বেঁধে ফেলে। অভিযুক্তরা ওই নারীকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে এবং সেই ভিডিও ধারণ করে মামলা না করার হুমকি দেয়। পরদিন ২৩ সেপ্টেম্বর শনিবার নির্যাতনের শিকার নারী বিষ পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। তাৎক্ষণিকভাবে আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
অন্যদিকে ১৩ জুলাই ঢাকার সাভারে গৃহশিক্ষক কর্তৃক দশম শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণের পর আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, নির্যাতনের শিকার কিশোরী স্থানীয় বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী। অভিযুক্ত রকিবুল ওই কিশোরীর গৃহশিক্ষক। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ওই কিশোরীকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। ঘটনার দিন রকিবুল সন্ধ্যায় পড়তে এসে আবারো কুপ্রস্তাব দিলে কিশোরী অস্বীকৃতি জানায়। এ সময় রকিবুল তার মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করে। বিষয়টি কাউকে জানালে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়। পরবর্তীতে নির্যাতনের শিকার কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
‘সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নারী ও কন্যাশিশুদের দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে’ উদ্বেগ প্রকাশ করে সংগঠনটি ঘরে-বাইরে নারী-কিশোরীরা এলাকার বখাটে ও শিক্ষক কর্তৃক নৃশংস সহিংসতার শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, সংঘটিত এসব ঘটনা নারী ও কন্যাদের মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তুলছে যা তাদেরকে আত্মহত্যার প্ররোচনার দিকে নিয়ে যেতে বাধ্য করছে। তাদের স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হচ্ছে এবং তাদের অগ্রগতির পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে।
ওই দুই ঘটনায় উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে সংগঠনটি এসব ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থাগ্রহণসহ দ্রুত গ্রেফতার, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতকরণের দাবি জানাচ্ছে। পাশাপাশি এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানানো হয়েছে। নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজের প্রতি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ইউ