
ছবি সংগৃহীত
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও), ২০২৫-এর গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনী নীতিগত ও চূড়ান্তভাবে অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। এই সংশোধনীগুলোর মধ্যে ইভিএম ব্যবহার বাতিল এবং ‘না ভোট’ পুনর্বহাল করার মতো যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় আরপিও সংশোধনের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠকের পর আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি জানান, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বাংলাদেশ শ্রম আইন (সংশোধন) অধ্যাদেশ এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ২০২৫ চূড়ান্তভাবে অনুমোদিত হয়েছে। এছাড়া সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় আইন, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর আইন নীতিগতভাবে অনুমোদন পেয়েছে।
আরপিওর গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনীসমূহ:
-
ইভিএম বাতিল: ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) সংক্রান্ত বিধান বাতিল করা হয়েছে।
-
‘না ভোট’ পুনর্বহাল: যদি কোনো নির্বাচনী আসনে কেবল একজন প্রার্থী থাকেন, তবে ভোটাররা তাকে ভোট না দেওয়ার সুযোগ পাবেন। আইন উপদেষ্টা জানান, ২০১৪ সালের সাজানো নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে এই বিধান আনা হয়েছে। ‘না ভোট’ বেশি পড়লে সেই আসনে পুনরায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
-
সেনাবাহিনীর অন্তর্ভুক্তি: আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
-
প্রার্থীদের সম্পদ প্রকাশ বাধ্যতামূলক: প্রার্থীদের দেশি ও বিদেশি উৎস থেকে আয় ও সম্পত্তির বিবরণ হলফনামায় দিতে হবে, যা নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে উন্মুক্তভাবে প্রকাশ করা হবে। প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশ দিয়েছেন, জনগণ যেন সহজেই তাদের প্রার্থীর আর্থিক অবস্থা জানতে পারেন।
-
পলাতক আসামিদের নিষেধাজ্ঞা: পলাতক আসামিরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
-
জামানত হ্রাস: নির্বাচনী জামানতের পরিমাণ ২০ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৫০০ টাকা করা হয়েছে।
-
রাজনৈতিক অনুদান: রাজনৈতিক দলকে ৫০০ টাকার বেশি অনুদান বা চাঁদা দিতে হলে ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার বাধ্যতামূলক এবং অনুদানদাতার ট্যাক্স রিটার্ন জমা দিতে হবে।
-
ডাক ভোট: বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসী ভোটার ও নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তারা ডাক ভোটে ভোট দিতে পারবেন।
-
গণমাধ্যম ও অনিয়ম: ভোট গণনার সময় গণমাধ্যমের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়েছে। কোনো নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক অনিয়ম হলে পুরো এলাকার ভোট বাতিল করার ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া হয়েছে।
-
জোটের প্রতীক স্বচ্ছতা: জোটের প্রার্থীদের প্রতীক ব্যবহারে স্বচ্ছতা আনতে বিধান যোগ করা হয়েছে, যাতে ভোটাররা সহজেই বুঝতে পারেন—কোন দল থেকে প্রার্থী হচ্ছেন।
আইন উপদেষ্টা জানান, জেলাভিত্তিক নির্বাচন অফিসগুলোতে দায়িত্ব পালন করবেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা। ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
ইউ