
সংগৃহীত ছবি
অন্তর্বর্তী সরকারের রাষ্ট্র সংস্কার উদ্যোগ সমর্থন জানিয়ে সংবিধানের মতো বিষয়ে হাত দেওয়াকে অনুচিত বলে মন্তব্য করে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের প্রেসিডেন্ট ও মেজর জেনারেল (অব.) আ ন ম মুনীরুজ্জামান বলেছেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি যে, সংবিধানে হাত দেওয়া উচিত হবে না। সংবিধান শুধুমাত্র পরিবর্তন করতে পারে জনপ্রতিনিধি বা যারা নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে আসবে।
রোববার (২৫ মে) রাজধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মুনীরুজ্জামান বলেন, অন্য কারোর কোনো অধিকার বা এখতিয়ার নেই, এটাকে বড় ধরনের পরিবর্তন করার এবং এটা করতে গেলে পরে যে জটিলতা আসবে- সেটা হয়তো কাটিয়ে ওঠা কঠিন হবে। এই কারণে আমি বলতে চাই যে- যেটুকু আমাদের করা সম্ভব, সেটুকু শুধু আমাদের করা উচিত এবং তার বাইরে এমন কিছুতে আমাদের হাত দেওয়া উচিত না। বর্তমান আমরা যে জটিল পরিস্থিতিতে আছি, সেটা আরও জটিলতর হবে।
রাষ্ট্রের সব সংস্কার বর্তমান সরকার করতে পারবে, সেই উচ্চাশা করা ঠিক হবে না বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সবকিছুর ঊর্ধ্বে আমাদের মনে রাখতে হবে যে, যত শিগগির সম্ভব- আমরা যাতে গণতন্ত্রে উত্তরণ করতে পারি। কারণ এই জুলাই-অগাস্টের যে বিপ্লবটা ঘটে গেছে, তার একটা প্রধান আকাঙ্ক্ষা ছিল গণতন্ত্রহীনতা থেকে উত্তরণ।
রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে পাশ কাটিয়ে কোনো কিছু করলে সেটা ঠিক হবে না, এটা আমাদের সবসময় মনে রাখার প্রয়োজন উল্লেখ করে এই নিরাপত্তা বিশ্লেষক বলেন, এই পর্যায়ে যেসব সংস্কার প্র্যাকটিকাল, সেগুলো থেকে আমাদের দুটো সংস্কারের ব্যাপারে আমাদের বিশেষ করে জোর দিতে হবে। কোনো সংস্কারই টেকসই হবে না- যদি এর সাথে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বা রাজনৈতিক দলের একমত না হয়। আমরা ইতঃপূর্বে দেখেছি বিভিন্ন সময় অনেক সংস্কার হয়েছিল। ১/১১ সময় অনেক সংস্কার হয়েছিল। কোনোটাই টেকসই হয়নি। কাজেই আমাদের উচিত হবে- এমন ধরনের সংস্কার করা, যেগুলো টেকসই হবে; যেগুলো থেকে জাতি ভবিষ্যতে উপকার পাবে।
এমন কোনো জিনিসে হাত দেওয়া উচিত হবে না, যেটা থেকে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে আরও বিলম্ব হয় মন্তব্য করে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের প্রেসিডেন্ট বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ১৬-১৭ বছর শুধু সংগ্রাম করে নাই, তাদের ভোটের অধিকারও হরণ করে নেওয়া হয়েছিল। তাদের যে ভোটের অধিকার, সেটা তাদেরকে যত শিগগির সম্ভব ফিরিয়ে দিতে হবে। সেটা উচিত হবে আমাদের সকলের এবং এই কমিশনের এবং অন্যান্য সকলের।
মতবিনিময় সভায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ ছাড়াও ছিলেন বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ইফতেখারুজ্জামান, আইয়ুব মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
এতে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের প্রেসিডেন্ট আ ন ম মুনীরুজ্জামান, ওয়ারেসুল করিম, আশরাফুন নাহার মিষ্টি, চৌধুরী সামিউল হক, মির্জা হাসান, ইলিরা দেওয়ান, সাইদা সুলতানা রাজিয়া, বাসুদেব ধর, সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবীর, বিচারপতি এম এ মতিন।
//এল//