ফাইল ছবি
‘‘শ্রীদেবীর নিয়তি ছিল মর্মান্তিক। ভাগ্নে মোহিত মারওয়াহ'র বিয়েতে যোগদানের জন্য সপরিবারে দুবাই গিয়েছিলেন। বিয়ের অনুষ্ঠানে পরার জন্য মনীশ মালহোত্রার ইউনিক ডিজাইনের ব্যয়বহুল ইউনিক পেস্টাল গ্রীন লেহেঙ্গা বানিয়েছেন তিনমাস আগে থেকে। সেটি পরে বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন। এর আগে মেহেন্দি সন্ধ্যায় একঝাঁক সেলিব্রেটিকে সাথে নিয়ে দেবর অনিল কাপুরের সাথে ‘তেরে আঁখো কা ইয়ে কাজল’ ধুন্দুমার গানের সাথে নাচানাচি করে স্টেজ কাঁপিয়েছেন শ্রীদেবী। সেই ভিডিও ক্লিপ আমি একবারের বেশি দেখতে পারিনি। মেনে নিতে কষ্ট হয়েছিল শ্রীদেবীর ট্র্যাজিক ডেথ। তাঁর মৃত্যু আজো প্রশ্ন হয়ে আছে। পাঁচফুট ছয় ইঞ্চি উচ্চতার শ্রীদেবী কিভাবে ৩ ফুট উচ্চতা এবং ২ ফুট দৈর্ঘ্যের বাথটাবে ডুবলেন, ব্যাপারটা কনফিউজিং বটে।’
‘বনি কাপুরের মনে দুর্ভিসন্ধি ছিল বলেই তিনি ছোটমেয়ে খুশি কাপুরকে মুম্বাইয়ে রেখে আবার দুবাইয়ের জুমেইরা এমিরেটস টাওয়ারস হোটেলে ফিরে এসেছিলেন। শ্রীদেবী বনির ফিরে আসা নিয়ে কিছুই জানতেন না। যদিও বনি প্রচার করেছেন, তিনি শ্রীদেবীকে সারপ্রাইজ দিতে এসেছিলেন। ডিনারে নিয়ে যাওয়ার জন্য রেডি হতে বলেছিলেন। শ্রীদেবী বাথরুমে যান ফ্রেশ হতে। বনির মনে নেগেটিভ ইনটেনশন না থাকলে তিনি ডুবন্ত (যদি তার কথা সত্যি ধরে নেয়া হয়) শ্রীদেবীকে তিন ঘন্টা পর কেন হাসপাতালে নিয়েছিলেন? কেন সঙ্গে সঙ্গে নিলেন না? শ্রীদেবীর বোন শ্রীলতা বোম ফাটালেন এভাবে- সব জ্বালা যন্ত্রণার মূলে ছিল শ্রীদেবীর লাইফ ইন্সুরেন্সের ২৪০ কোটি ভারতীয় রুপি। ঋণের ভারে ন্যুজ হয়ে পড়েছিলেন বনি কাপুর। যাদের কাছ থেকে লোন নিয়ে সিনেমায় বিনিয়োগ করেছিলেন তারা টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে বনিকে। যেটা শ্রীদেবীও জানতেন। বনি শ্রীদেবীকে অনুরোধ করেছিলেন ব্যাংক থেকে শ্রীদেবীর নামে লোন নিয়ে দিতে। কারণ ক্রেডিট হিস্টোরি ছিল ক্রিস্টাল ক্লিয়ার। ব্যাংক তাকে লোন দেবে। কিন্তু শ্রীদেবী তাতে রাজি ছিলেন না বলে বনি ভেতরে ভেতরে অসন্তুষ্ট ছিলেন শ্রীদেবীর উপর। দুবাইতে শ্রীদেবীর মৃত্যু হলে তার লাইফ ইন্সুরেন্সের ২৪০ কোটি রূপি বনি কাপুর একাই সাবাড় করতে পারবেন। এবং সেটাই হয়েছে। হত্যার ব্লু প্রিন্ট এভাবেই সাজানো হয়েছিল। শ্রীদেবীকে দুবাইতে মরতে হয়েছিল।’
‘তার আগে একটু অতীতে ঢুঁ মেরে আসতে হবে। ১৯৯৫ সালে মাদ্রাজের কেরালায় শ্রীদেবীর মা রাজেশ্বরী আয়াপ্পানের ব্রেন টিউমার ধরা পড়ে। শ্রীদেবী তখন সুপার হিট নায়িকা। সিন্ধান্ত নেন নিউইয়র্ক নিয়ে আসবেন মা'কে চিকিৎসার জন্য। রাজেশ্বরী আয়াপ্পানকে ভর্তি করা হয় নিউইয়র্কের বিখ্যাত Memorial Sloan Kettering Cancer Center -এ। নিউরোসার্জন শ্রীদেবীর মায়ের ডায়াগনোসিস করেন। ঠিক করা হয় তার ব্রেন সার্জারি করতে হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্য রাজেশ্বরীর। তার ব্রেন টিউমার ছিল মাথার ডানপাশে। কিন্তু ভুলবশত নিউরোসার্জন সার্জারী করে ফেলেন তার মাথার বাম দিকে। ডাক্তার ভুল করে রাজেশ্বরীর মাথার খুলি ওপেন করে টেম্পোরাল লোব (Temporal Lobe) কেটে ফেলেন। যেটা মানুষের ব্রেনের হেলদি পোর্শন হিসেবে পরিচিত। ব্রেনের টেম্পোরাল লোব মানুষের ইমোশন, স্মৃতি এবং স্পর্শকাতর দিকগুলো নিয়ন্ত্রণ করে। হাসপাতালের টেবিলে ফাইল বদল হয়ে যাওয়ার ফলে এমন ভয়াবহ ভুলেভরা অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল শ্রীদেবীর মায়ের। সেদিন রাজেশ্বরীর সাথে আরেকজন ভারতীয় ব্রেন টিউমারের রোগী ছিলেন। তারও ব্রেনে অস্ত্রোপচার করার কথা ছিল। সেই নিউরোসার্জনের নাম ছিল ইহুদ আরবিট। তাকে মেমোরিয়াল স্লোয়ান কেটারিং ক্যান্সার সেন্টার থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল ‘
‘অপারেশনের পর দেখা যায় রাজেশ্বরী দশ পনেরো বছর আগের কথা বলতে থাকেন। কিন্তু চলমান স্মৃতি তিনি ভুলে গিয়েছেন। মেয়ে শ্রীদেবীকেও নাকি চিনতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত এই ভুল অপারেশনের কারণে মৃত্যু হয় তার। শ্রীদেবী মেমোরিয়াল স্লোয়ান কেটারিং ক্যান্সার সেন্টারের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেন --Sue করেন হাসপাতালকে। তখন বিল ক্লিনটন ক্ষমতায় ছিলেন। হাসপাতালের কাছ থেকে শ্রীদেবী ক্ষতিপূরণ পান ১৬ কোটি ভারতীয় রুপি। এই বিশাল অংকের টাকা ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে একমাত্র বোন শ্রীলতা ইয়াঙ্গারের সাথে বিরোধ চরমে ওঠে শ্রীদেবীর। একমাত্র ভাই সতীশ ইয়াঙ্গারকেও বঞ্চিত করেন ১৬ কোটি টাকা থেকে। শ্রীদেবীর বক্তব্য ছিল- মা রাজেশ্বরীকে চিকিৎসার জন্য তার একক উদ্যোগে আমেরিকা নিয়ে গিয়েছেন। সুতরাং এই টাকার উপর সতীশ ও শ্রীলতার কোনো অধিকার নেই।’
‘বনি কাপুরের ইন্ধনে সেই অর্থ শ্রীদেবী ব্যবসায় খাটান। দুবাইতে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করে ব্যবসা করেছেন। ভাইবোনদেরকে তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করেছেন। শ্রীলতা সংবাদ মাধ্যমকে বলেছিলেন, বনি কাপুরের গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হয়েছে তার বোন শ্রীদেবীকে। বনির কুপ্ররোচনার কারণে শ্রীলতার সাথে সম্পর্ক রাখেননি শ্রীদেবী।’
‘ফরেনসিক রিপোর্টে বলা হয়েছিলো "Accidental death"! তবে শ্রীদেবীর আত্মীয় স্বজনরা এটাকে বিশ্বাস করেননি। তারা শ্রীদেবীর হার্ট অ্যাটাকের কথাও মেনে নিতে পারেননি। তবে শ্রীদেবীর মৃত্যুর পর বনির আর্থিক টানাটানি শেষ হয়েছে। অর্থ সম্পদের লড়াইয়ে রক্তারক্তির ইতিহাস আছে। সম্পদের ঠান্ডা লড়াইয়ের ফলে এই বিখ্যাত অভিনেত্রী তার ভাইবোনের সাথে বিরোধ ও সম্পর্কের তিক্ততায় জড়িয়েছেন। বেঁচে থাকলে তাঁর বয়স এখন হতো ঊনষাট।’’
মিলি সুলতানার ফেসবুক পোস্ট থেকে সংগৃহীত...
ইউ