ঢাকা, বাংলাদেশ

শুক্রবার, , ০৯ মে ২০২৫

English

এক্সক্লুসিভ

আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে ঘণ্টায় ৪৫ ডায়রিয়া রোগী ভর্তি

শাহীন খন্দকার:

প্রকাশিত: ১৫:৫৩, ১৭ এপ্রিল ২০২৩; আপডেট: ২১:৪৬, ১৭ এপ্রিল ২০২৩

আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে ঘণ্টায় ৪৫ ডায়রিয়া রোগী ভর্তি

বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল এন্ড ইনিষ্টিটিউটের উপ-পরিচালক ডা. প্রবীর কুমার সরকার:

বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক উদারাময় গবেষণাকেন্দ্র (আইসিডিডিআরবি) হাসপাতাল মহাখালী । হাসপাতালে প্রতিদিন ড্য়ারিয়া আক্রান্ত শিশু থেকে বয়স্ক রোগী প্রতি ঘণ্টায় ৪৫জন ভর্তি হচ্ছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কতৃপক্ষ। গতকাল রবিবার ভর্তি হয়েছে ৫২২ জন আর আজ সকাল সোমবার দুপুর ১টা পর্যন্ত ২৮৫ জন ভর্তি। প্রতি ঘণ্টায় মোট ৪৫ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে রোগী ভর্তি হচ্ছে রাজধানীতে।

আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) মহাখালী হাসপাতালে গতকাল রবিবার রাত ১২টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টায় মোট ৫২২জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন।

সেই হিসাবে প্রতি ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন প্রায় ৪৫ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী। আইসিডিডিআরবি কর্তৃপক্ষ বলছে, গত ১ সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ডায়রিয়ার এই প্রকোপ চলছে। প্রতিষ্ঠানটির মিডিয়া ম্যানেজার একেএম তারিফুল ইসলাম খান বলেন, অন্যান্য বারের চেয়ে বেশি সংখ্যক রোগী ভর্তি হচ্ছেন। তিনি বলেন, গত বছরও রোগী ভর্তি হয়েছিলো এমন-ই। কিন্তু এ বছর সেই সংখ্যাটি কিছুটা কম। তবে সামনে কেমন হয় বলা যাচ্ছে না। 

অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামলাতে হাসপাতাল প্রাঙ্গণে তাঁবু টানিয়ে রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আইসিডিডিআরবির মহাখালী হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়া হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, ভর্তি হওয়া রোগীদের সাধারণত ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ছেড়ে দেওয়া হয়।

এদিকে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল এন্ড ইনিষ্টিটিউটের উপ-পরিচালক ডা. প্রবীর কুমার সরকার বলেন, শিশুদের ক্ষেত্রে পানি শূন্যতা বোঝার উপায় হচ্ছে, তারা নিয়মিত প্রস্রাব করছে কি না সে দিকে খেয়াল রাখাতে হবে। তিনি বলেন, গরম এলেই ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ে। চারদিকে ভয়াবহ গরমে যখন গলা শুকিয়ে কাঠ, ঠিক এই সময় রাস্তায় ঠান্ডা পানীয় চোখে পড়লেই তা দিয়ে গলা ভেজানোর জন্য অস্থির হয়ে যায়।

তিনি বলেন, কোনোকিছু চিন্তুা না করে  শিশুরা এই রাস্তার খোলা খাবার বা পানীয় থেকেই ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেক শিশু। তিনি বলেন, এক গবেষণায় উঠে এসেছে প্রতি বছর সারা পৃথিবীতে প্রায় ৫ লক্ষেরও বেশি শিশু ডায়রিয়া রোগে মারা যায়। পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুমৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ হলো ডায়রিয়া।

শিশুর ডায়রিয়া সাধারণত পরিপাকতন্ত্রে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা অন্য কোনো পরজীবী সংক্রমণের ফলে ডায়রিয়া হয়ে থাকে। দিনে তিন বার বা তার চেয়ে বেশি বার ঘনঘন পাতলা পায়খানা হলে তাকে ডায়রিয়া বলে ধরে নিতে হবে। শিশুদের ক্ষেত্রে ডায়রিয়া তীব্র হলে চাল ধোয়া পানির মতো পায়খানা নির্গত হয়।

ডায়রিয়া কেন হয় এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,আমাদের দেশে গ্রীষ্মকালে ব্যাপক হারে ডায়রিয়ার প্রধান কারণ রোটা ভাইরাস, কখনো কখনো ইকোলাই ব্যাকটেরিয়া। ডায়রিয়া পানিবাহিত রোগ। দূষিত পানি থেকেই এ রোগ ছড়ায়। শহরে ট্যাপের পানি অনেক সময় সেপটিক ট্যাংক বা সুয়ারেজ লাইনের সংস্পর্শে এলে দূষিত হয় এবং ডায়রিয়া রোগের কারণ হিসেবে ভূমিকা পালন করে। তাই যেখানে-সেখানে ও পানির উৎসের কাছে মলত্যাগ, সঠিক উপায়ে হাত না ধোয়া, অপরিচ্ছন্ন উপায়ে খাদ্য সংরক্ষণ এবং পচা, বাসি খাবার খাওয়া ডায়রিয়ার অন্যতম কারণ বলে জানান তিনি। 

রাস্তায় পাশে যেসব খোলা খাবার বিক্রি হয় গরমের কারণে সেগুলোও বেশিক্ষণ খাওয়ার উপযোগী থাকে না। এসব খাবার ডায়রিয়া রোগের কারণ হতে পারে। ছাড়াও পানিশূন্যতাসহ নানা রোগের উপসর্গ হিসেবে গ্রীষ্মকালে ডায়রিয়া হতে পারে।

শিশুর ডায়রিয়া হলে  কি করনীয় প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ডায়রিয়া হলে শরীর দ্রুত পানিশূন্য হয়ে যায় এবং শরীরে লবণের ঘাটতি দেখা দেয়। এ দুটোকে রোধকরাই ডায়রিয়ার মূল চিকিৎসা। প্রতিবার পাতলা পায়খানার পর বয়স অনুযায়ী পরিমাণমতো খাবার স্যালাইন পান করাতে হবে। যেমন জন্ম থেকে দুই বছর পর্যন্ত ১০-২০ চা চামচ (৫০-১০০ মি.লি.) দুই বছর থেকে ১০ বছরর পর্যন্ত ২০-৪০ চা চামচ (১০০-২০০ মি.লি.) খাবার স্যালাইন ছাড়াও ঘরে তৈরি তরল খাবার যেমন ভাতের মাড়, চিড়ার পানি, তাজা ফলের রস, ডাবের পানি ইত্যাদি দেওয়া যেতে পারে।

সেই সঙ্গে স্বাভাবিক খাবারও পাশাপাশি চালিয়ে যেতে হবে। বুকের দুধ খাওয়া শিশুরা খাবার স্যালাইনের পাশাপাশি বুকের দুধও খাবে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী জিঙ্ক ট্যাবলেট খাওয়া যেতে পারে। এতে ডায়রিয়া তুলনামূলক কম সময়ে সেরে যাবে।

কিন্তু যদি পাতলা পায়খানার সঙ্গে রক্ত, জ্বর, প্রচন্ড পেটব্যথা বা কামড়ানো, পিচ্ছিল মল, মলত্যাগে ব্যথা ইত্যাদি জটিল অবস্থা সৃৃষ্টি হয় তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

ডা. প্রবীর কুমার সরকার বলেন, ডায়রিয়া প্রতিরোধ করতে হলে অবশ্যই নিরাপদ বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। শিশুদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে, নিয়মিত নখ কেটে পরিষ্কার রাখতে হবে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জীবনযাপন আর নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার মাধ্যমে ডায়রিয়ার প্রতিরোধ করা সম্ভব।

আমাদের বগুড়া প্রতিনিধি জানিয়েছেন, বগুড়ার শিবগঞ্জ হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. শফিকুর রহমান জানিয়েছেন, এবছর প্রচন্ড  গরমের কারণে হঠাৎ ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। সবাইকে নিশ্চিত করতে হবে যেন শরীর কোনোভাবেই ডিহাইড্রেট বা পানি শূন্য হয়ে না যায়।

তিনি আরও বলেন, ডায়রিয়া থেকে নিরাপদে থাকার জন্য প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। অনিরাপদ খাবার খাওয়া বা পানি পান করা থেকে বিরত থাকতে হবে। রাস্তার পাশের খাবার, অতিরিক্ত তেল-মশলা জাতীয় খাবার, ভাজা- পোড়া জাতীয় খাবার খাওয়া যাবে না।

ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে গেলে করণীয় সম্পর্কে তিনি বলেন, পর্যাপ্ত তরল খাবার খেতে হবে। রোগী বেশি অসুস্থ হয়ে পরলে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে। সেখানে রোগীর পরিস্থিতি অনুযায়ী চিকিৎসক স্যালাইন এবং অন্যান্য ওষুধ দেবেন। তিনি আরও বলেন, অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে রোগী যেন ডিহাইড্রেট হয়ে না যান। রোগীর শরীর পানি শূন্য হয়ে না পরলে আর ভয়ের কিছু নেই।'
 

//জ//

মঞ্চে জুমার নামাজ আদায় শেষে আন্দোলনকারীদের সমাবেশ শুরু

সমাবেশ ঘিরে যমুনার সামনে নিরাপত্তা জোরদার, বাড়তি সতর্কতা

পাকিস্তানে ভারতের হামলার নাম ‘অপারেশন সিঁদুর’ কেন?

অবৈধ ব্যাটারী কারখানার বর্জ্য অপসারণের নির্দেশ 

রাতে নিখোঁজ, সকালে মিলল যুবকের মরদেহ

বলিউডে নাম লেখাচ্ছেন শচীনকন্যা!

ব্যাংক এশিয়ায় ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ

পারভেজ হত্যায় গ্রেপ্তার টিনা

পাক-ভারত যুদ্ধ যেন পারমাণবিক যুদ্ধে পরিণত না হয়: যুক্তরাষ্ট্র

কারাগারে আইভী

দিল্লিতেও উচ্চ সতর্কতা জারি 

সকালেও বিক্ষোভ চলছে যমুনার সামনে

গ্রেপ্তারের পর যা বললেন সাবেক মেয়র আইভী

সীমান্তে ফের গোলাগুলি শুরু

বাদ জুমা বড় জমায়েতের ডাক হাসনাতের