
সংগৃহীত ছবি
রাজধানীর উত্তরায় র্যাব পরিচয়ে নগদ কর্মকর্তাদের কাছ থেকে ১ কোটি ৮ লাখ ৪৪ হাজার টাকা ছিনতাই করেছে একটি চক্র।
শনিবার (১৪ জুন) সকাল ৮টার দিকে উত্তরা-১৩ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর রোডে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ বলছে, র্যাবের পোশাক পরিহিত ব্যক্তিরা কালো মাইক্রোবাসে করে এসে আকস্মিকভাবে দুটি মোটরসাইকেলে থাকা চারজনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। যারা নগদ এজেন্টের বাসা থেকে ওই টাকা বহন করে ডিস্ট্রিবিউটর কার্যালয়ে আনছিলেন।
মোটরসাইকেলে থাকা তিনজনকে সঙ্গে থাকা টাকাসহ জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে উঠিয়ে নেওয়া হয়। এরপর টাকা কেড়ে নিয়ে তাদের উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টরে নামিয়ে দেওয়া হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং প্রাথমিক তদন্ত শুরু করে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এ ঘটনায় ব্যবহৃত মাইক্রোবাসের নাম্বার ও সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করছে পুলিশ। এখন পর্যন্ত মামলা দায়ের না হলেও জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টার পাশাপাশি নগদ এজেন্টের ওই টাকা বহনকারী চার প্রতিনিধিকে হেফাজতে নিয়ে ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করছে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ।
ডিএমপি’র উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মহিদুল ইসলাম বলেন, নগদের স্থানীয় ডিস্ট্রিবিউটর আব্দুল খালেক নয়নের বাসা উত্তরা-১৩ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর রোডে। সেখান থেকে হেঁটে গেলে মাত্র পাঁচ মিনিটের পথ নগদের ডিস্ট্রিবউটিং অফিস। ওই অফিস থেকে ৪ জন গিয়ে নয়নের বাসা থেকে টাকাগুলো আনছিলেন। তারা মোটরসাইকেলে ছিলেন। রাস্তার মোড়ে একটি হায়েস গাড়িতে ওৎ পেতে ছিল র্যাব পরিচয়ের ছিনতাইকারীরা। তারা র্যাবের পরিচয় দিয়ে অস্ত্রের মুখে নগদের কর্মকর্তাদের আটকায়। চারজনের মধ্যে কাউসার, লিয়াকত ও আব্দুর রহমান নামে তিনজনকে টাকার ব্যাগসহ হায়েস গাড়িতে ওঠানো হয়। বাকি একজন ওমর হোসেন টাকার আরেকটি ব্যাগসহ দৌড়ে পালাতে সক্ষম হন। এরপর ছিনতাইকারীরা নগদের প্রতিনিধিদের উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টরে ফেলে রেখে যায়।
ডিসি মহিদুল ইসলাম বলেন, নগদের চার প্রতিনিধিকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ছিনতাই হওয়া টাকার পরিমাণ সম্পর্কে তারা জানিয়েছেন, দুটি মোটরসাইকেলে করে টাকা আনা হচ্ছিল। এক মোটরসাইকেলে ছিল ১ কোটি ৮ লাখ ৪২ হাজার টাকা। ওমর হোসেন জানিয়েছেন, তিনি যে ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যান সেটিতে এক লাখের কিছু বেশি টাকা ছিল।
কেন নগদের ডিস্ট্রিবিউটর নয়নের বাসায় টাকাগুলো রাখা হয়েছিল, বন্ধের দিনে এত সকালে এতগুলো টাকা কেন বাসা থেকে অফিসে নেওয়া হচ্ছিল সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তারা বলছে, দুটি মোটরসাইকেলের মধ্যে যেটিতে ১ কোটি ৮ লাখ টাকা বহন করা হচ্ছিল সেটি টার্গেট করাটা সন্দেহজনক।
ডিসি মহিদুল ইসলাম বলেন, অনেক সময় ভেতরেই ইনফর্মার থাকে। আমরা এখনো জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারিনি। তবে ক্লু পেতে জিজ্ঞাসাবাদ করছি।
ডিসি আরও জানান, নগদের ওই ডিস্ট্রিবিউটর অফিসের পার্টনার দুইজন। একজন আব্দুল খালেক নয়ন। টাকাটা তারা বাসায় রাখা ছিল। আরেক পার্টনার তারিকুজ্জামান। তার বাড়ি সিরাজগঞ্জে। তিনি ঈদের ছুটিতে বাড়ি গিয়ে এখনো ঢাকা ফেরেননি। আমরা নয়নকে থানায় ডেকেছি। আরও বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি।
//এল//