
সংগৃহীত ছবি
গত বছরের ২২ অক্টোবর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরকে (ডাকসুর সাবেক ভিপি) তার সংসদীয় এলাকা পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা) আসনে সাংগঠনিক কার্যক্রমে সহযোগিতা করতে পটুয়াখালী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। সেই চিঠি এখন নিজেদের জন্য অভিশাপে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন নুর।
শুক্রবার (১৩ জুন) বিকেলে পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলা রেস্ট হাউজের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নুরুল হক নুর বলেন, বিএনপির দেওয়া সেই আশীর্বাদের চিঠি এখন আমাদের জন্য অভিশাপে পরিণত হয়েছে। এই চিঠির কারণেই স্থানীয় পর্যায়ে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর একের পর এক হামলার ঘটনা ঘটছে।
তিনি আরও বলেন, আমি ৫ আগস্টের পর যখন প্রথম পটুয়াখালীতে প্রবেশ করি তখন আমখালা ইউনিয়নে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে এই পরিস্থিতির সূচনা করেন। সেই থেকে এখন পর্যন্ত হাসান মানুন এই সাংঘর্ষিক পরিস্থিতিটা তৈরি করে রেখেছেন।
ডাকসুর এই সাবেক ভিপি বলেন, হাসান মামুনের এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ দু-এক দিনের নয়। বিএনপির অভ্যন্তরীণ একটি চিঠির মাধ্যমেই এই সাংঘর্ষিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। আর এ কারণেই বলেছি, বিএনপির দেওয়া আশীর্বাদের চিঠি এখন অভিশাপে পরিণত হয়েছে।
গণঅধিকার পরিষদের এই সভাপতি বলেন, বৃহস্পতিবার (১২ জুন) গলাচিপা ও দশমিনার বিভিন্ন এলাকায় আমাদের অফিসে হামলা, ভাঙচুর, মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া এবং নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। কালারাজা, চরকাজল, চরবিশ্বাস ও পাতাবুনিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় আমাদের নেতাকর্মীরা মারধরের শিকার হয়েছেন।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ১২০ জন আহত হয়েছেন, ১৭টি অফিস ভাঙচুর করা হয়েছে, দুটি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়েছে এবং আরও অনেকগুলো মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে।
নুরুল হক নুর বলেন, আমরা নেতাকর্মীদেরকে বলেছি, প্রত্যেকটি ঘটনার তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করে মামলা করুন। মামলা করে প্রশাসনের সহযোগিতা চান। অন্যথায় আপনারা অনিরাপদ। গতকালকের ঘটনার পরেই আমাদের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ, বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। আমরা বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দের ভূমিকা দেখেই, আমাদের পরবর্তী করণীয় এবং কর্মকৌশল ঠিক করব।
বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আপনারা একটি বড় রাজনৈতিক দল, আপনাদের কাছ থেকে জনগণ অনেক কিছু আশা করে। এই ঘটনায় একটি নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। বিএনপির মিত্র হিসেবে ভিপি নূরদেরই এই অবস্থা! তাদের ঠিকভাবে চলাফেরা করতে দিচ্ছে না, অফিস ভাঙচুর করে, অবরুদ্ধ করে রাখে, তাহলে অন্যদের কি হবে? এই প্রশ্ন আজ সাধারণ মানুষের।
এ সময় জেলা গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব শাহ আলম সিকদার, উপজেলা কমিটির সভাপতি হাফিজুর রহমান, সদস্য সচিব জাকির হোসেন মুন্সী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
//এল//