জাতীয়
বিএনপি ভোটে না আসায় জনগণ ‘অভিশাপমুক্ত’ হল--শেখ হাসিনা
বিরোধী দলবিহীন নির্বাচন নিয়ে সমালোচনার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপিকে যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষের দল আখ্যায়িত করে তারা ভোটে না আসায় জনগণ ‘অভিশাপমুক্ত’ হল বলে মন্তব্য করেছেন।
আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসি নিয়ে পাকিস্তান পার্লামেন্টে নিন্দা প্রস্তাব এবং তা নিয়ে দেশে প্রতিবাদের ঝড়ের মধ্যে বুধবার গণভবনে ১৪ দলের এক সভায় এই মন্তব্য করেন তিনি।
দশম সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দল ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না।
শেখ হাসিনা বলেন, “বিএনপিকে নির্বাচনে আনার জন্য অনেক ছাড় দিয়েছি, অনেক চেষ্টা করেছি। তারা নির্বাচনে আসেনি।”
যুদ্ধাপরাধী আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসি এবং তার দল জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বিএনপির জোট রাখার দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, “তারা না আসুন। আমি মনে করি, দেশ অভিশাপমুক্ত হল।“এবারের নির্বাচনই প্রথম (নির্বাচন) যেখানে পরাজিত শক্তি অংশগ্রহণ করছে না। দেশ যুদ্ধাপরাধীদের শাসনের অভিশাপ থেকে মুক্ত হল।”
হাই কোর্টের রায়ে জামায়াতে ইসলামী এবারের নির্বাচনে অংশ নিতে না পারায় বিএনপিও নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দল নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠা এবং নির্বাচন স্থগিতের দাবিতে টানা অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছে, যাতে সহিংসতায় প্রায় একশ’ মানুষ নিহত হয়েছে।
জ্বালাও-পোড়াও বন্ধ করতে বিরোধী দলের প্রতি আহ্বান জানানোর পাশাপাশি তা রুখতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
“আজ যারা জ্বালাও-পোড়াও করছেন, তাদের ভুলে গেলে চলবে না যে তাদেরও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে, ঘরবাড়ি আছে, ছেলেমেয়ে আছে, তাদেরও সব আছে। এটাও তাদের মনে রাখা উচিত।”
“বাংলাদেশের মানুষ তামাশা দেখবে, এমন হবে না। যে যেমন করবে, তাকে সে রকমই ভোগ করতে হবে। এবং দেশবাসীকে আমি সেই আহ্বানই জানাই।”
আসাদুজ্জামান নূরসহ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর বিরোধী দলের বেশ কয়েকটি হামলার ঘটনা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের লোকদের হত্যা করবে, বাড়িঘর পোড়াবে আর ধ্বংসযজ্ঞ চালাবে, আর আমরা বসে বসে দেখব, এটা যেন তারা আশা না করেন।”
“পাকিস্তানিরা বাংলাদেশে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল, তাদের পরিবার কিন্তু বাংলাদেশে ছিল না। তাদের পরিবার-পরিজন ছিল পাকিস্তানে,” তাণ্ডবকারীদের স্মরণ করিয়ে দেন তিনি।
যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার জন্য যারা রাজপথে নেমেছে, তাদের রুখে দিতে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বানও জানান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী।
“কয়েকটা সন্ত্রাসীর তাণ্ডবে হাত গুটিয়ে বসে থাকলে হবে না। এদের উপযুক্ত জবাব দিতে হবে। এদের উপযুক্ত জবাব দিতে আমি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”
নির্বাচনের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, গণতান্ত্রিক এবং সাংবিধানিক প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে নির্বাচন যেন হয় সরকার সেই লক্ষ্যে কাজ করেছে।
‘সর্বদলীয়’ সরকারে যোগ দেয়া, সংসদে প্রস্তাব উত্থাপনের সুযোগ দেয়া হয়েছিল জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচন তারা চায় না। বাংলাদেশে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক ধারা প্রতিষ্ঠিত হোক, তাও তারা চায় না। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের বৈঠক হলেও তারা তা অস্বীকার করেছে।