
ফাইল ছবি
আগামী ২ আগস্ট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে ‘দ্রোহযাত্রা’ কর্মসূচি আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত ৭ জুলাই গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের আহ্বানে গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্য, গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক, রাজনৈতিক কর্মী, একটিভিস্ট, মানবাধিকারকর্মী, শিল্পীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশা মানুষের সম্মিলিত সভায় এই আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এবারের দ্রোহযাত্রার প্রতিপাদ্য বিষয় হিসেবে নির্ধারণ করা হয় ‘ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রকাঠামোর বিলোপ, ২৪ এর গণহত্যাসহ পাহাড় ও সমতলের সকল গণহত্যার বিচার এবং নব্য ফ্যাসিবাদী প্রবণতা প্রতিহত’।
উল্লেখ্য ২০২৪ সালে ২ আগস্ট আয়োজিত দ্রোহযাত্রা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম টার্নিং পয়েন্ট। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারকে হটাতে জনগণ রাস্তায় নেমে এসেছিলো। কিন্ত ফ্যাসিবাদী লীগ সরকারের পতন হলেও ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রকাঠামো আজও অটুট।
সম্মিলিত সভায় বক্তাদের বক্তব্যে উঠে এসেছিলো অন্তর্বর্তী সরকারের বুলিসর্বস্ব সংস্কারের কথা যা দৃশ্যমান হয়নি গত এক বছরে। বরং শ্রমিক, কৃষক, নারী, আদিবাসী, ধর্মীয়, লিঙ্গীয়, সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের মানুষের উপর চলেছে হামলা, নিপীড়ন, ধর্ষণ, মবসন্ত্রাসসহ একের পর মানবাধিকার লংঘনের ঘটনা। বিচারবহির্ভুত হত্যাকান্ড, দেশবিরোধী চুক্তি, মতপ্রকাশের জন্য মামলা, গণহত্যার বিচারের পরিবর্তে আওয়ামীলীগকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করার মতো একাধিক ঘটনা। আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধকে বেচে খাওয়ার মতো করেই জুলাই এর গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে ভুলে গিয়ে জুলাইকে চোখধাঁধানো জনবিচ্ছিন্ন একটি ফাঁকা উদযাপনের বিষয়ই বানিয়ে রেখেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং তার মদদপুষ্ট গোষ্ঠী। মুক্তিযুদ্ধের মতোই জুলাই শুধুই জনগণের, আর কারোনা। আর এ প্রেক্ষাপটকে কেন্দ্র করেই আগামী ২ আগস্ট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত হবে ‘দ্রোহযাত্রা ২০২৫’।
শহীদ পরিবারের সদস্যদের উদ্বোধনে উক্ত দ্রোহযাত্রায় সভাপ্রধান হিসেবে থাকবেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। শহীদ পরিবারের সদস্য, নারী, আদিবাসী, শিল্পী, শ্রমিক, কৃষক ও ছাত্র- ছাত্রীদের বক্তব্যের পাশাপাশি থাকছে প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক আয়োজনও। দ্রোহযাত্রার মিছিলটি শহীদ মিনার থেকে শাহবাগ পর্যন্ত সম্পন্ন হবে।
দ্রোহযাত্রা ২০২৫কে সফল করার উদ্দেশ্য গবেষক মাহতাব উদ্দীন আহমেদ, চিকিৎসক ডঃ হারুন উর রশীদ, বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাংগঠনিক সম্পাদক আমিরুন নূজহাত মনীষা এবং শ্রমিক নেতা আবদুল্লাহ আল ক্বাফিকে সমন্বয় করে যথাক্রমে প্রচার কমিটি, অর্থ কমিটি, সাংস্কৃতিক উদযাপন কমিটি এবং সাংগঠনিক কমিটি গঠন করা হয়েছে। দ্রোহযাত্রার আয়োজনটি সম্পন্ন করা হবে গণচাঁদা সংগ্রহের মাধ্যমে।
দ্রোহযাত্রা জনগণের। জনগণের এই দ্রোহযাত্রায় দেশের সর্বস্তরের জনগণকে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে।!
ইউ