ঢাকা টাইমস সম্পাদক ও আরিফুর রহমান দোলন। ,ফাইল ছবি
আসামি না হয়েও ১৬ দিন কারাভোগের পর জামিনে মুক্ত হয়েছেন ঢাকা টাইমস সম্পাদক ও আরিফুর রহমান দোলন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ৮৫ হাজার ভোট পাওয়ায় দোলন রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন বলে মনে করছেন ফরিদপুর-১ আসনের মানুষ।
তারা বলছেন, নির্বাচনে অংশ নেওয়া, নির্বাচনে কারচুপির প্রমাণসহ নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগ দেওয়ায় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের চক্ষুশূল হয়েছেন দোলন। যার ফলে অর্থপাচারের পুরনো একটি মামলায় আসামি না হয়েও তাকে কারাগারে যেতে হয়েছে।
বৃহস্পতিবার কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান আরিফুর রহমান দোলন। এর আগে বুধবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আস্ সামছ জগলুল হোসেন তার জামিন মঞ্জুর করেন।
একই আদালত গত ৫ মার্চ সাংবাদিক রাজনীতিবিদ আরিফুর রহমান দোলনকে কারাগারে পাঠান। যে মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়, বাস্তবে এখন পর্যন্ত সে মামলার তিনি আসামিই নন।
ফরিদপুরের আলোচিত দুই ভাই বরকত-রুবেলের বিরুদ্ধে দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে রাজধানীর কাফরুল থানায় ২০২০ সালে একটি মামলা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি। দোলন এই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি নন এবং প্রথম দফায় দেওয়া চার্জশিটেও নাম নেই। তবে অধিকতর তদন্তের নামে সম্পূরক চার্জশিটে জড়ানো হয় দোলনকে। তবে ওই চার্জশিট এখনো আদালত গ্রহণ না করায় আইনগতভাবে এ মামলার তিনি আসামি নন।
এদিকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশত অধিকতর তদন্তের সম্পূরক অভিযোগপত্রে নাম যুক্ত হতে পারে— দু-একটি মিডিয়ায় আসা এমন খবরের ভিত্তিতে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হওয়ার আশঙ্কা থেকে আরিফুর রহমান দোলন আট মাস আগে হাইকোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন নেন। পরবর্তীতে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণও করেন। তিনি প্রতি ধার্য তারিখে নিম্ন আদালতে হাজিরও হচ্ছিলেন। গত ৫ মার্চ আরিফুর রহমান দোলন যথারীতি আগের মতোই আদালতে হাজিরা দেন এবং বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
অথচ এই মামলায় সম্পূরক চার্জশিটে থাকা ৩৬ জনের মধ্যে দোলন ছাড়া কাউকেই কারাগারে পাঠানো হয়নি।
দোলনের আইনজীবী শেখ বাহারুল ইসলাম বলেন, ‘বিস্ময়কর হলো মানিলন্ডারিং মামলায় পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ ছাড়া শুধুমাত্র একজন আসামির জবানবন্দিতে কারও নাম উচ্চারণ হলেই সেই নামকেও অভিযোগপত্রে আনার অতীত রেকর্ড নেই। অভিযোগপত্র দেওয়ার জন্য পুলিশের যে ‘চার্ট অব এভিডেন্স’ সেখানে একটি মাত্র এভিডেন্স যদি একক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি হয় (মানিলন্ডারিং মামলার ক্ষেত্রে) তাহলে সেটি আসলে কখনোই বিবেচনায় নেওয়া হয় না।’
বাংলাদেশ কৃষক লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য আরিফুর দোলন সমাজসেবামূলক সংস্থা কাঞ্চন মুন্সী ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান।
কর্মজীবনে তিনি আমাদের সময় পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার উপ-সম্পাদক ও প্রথম আলো পত্রিকার ডেপুটি চিফ রিপোর্টার ছিলেন। তিনি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ), ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে), বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সদস্য।
//এল//