
ছবি: উইমেনআই২৪ ডটকম
মনসুন রেভ্যুলেশনের স্পিরিটকে উপজীব্য করে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে নতুন নাট্যপ্রযোজনা নির্মাণের অংশ হিসেবে উদ্বোধনী মঞ্চস্থ হলো ‘ফোর্থ ওয়াল থিয়েটার’-এর নাট্য প্রযোজনা ‘404: নাম খুঁজে পাওয়া যায় নি’। নাটকটির রচনা ও নির্দেশনায় দিয়েছেন মো. লাহল মিয়া এবং ড্রামাতুর্গ ও পরিকল্পনায় ছিলেন আব্দুল মুনিম তরফদার।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৭ টায় জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে এই আয়োজনে সভাপতির বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সচিব ও দায়িত্বপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেন। আয়োজনের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন একাডেমির নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের পরিচালক ফয়েজ জহির।
ডিস্টোপিয়ান শৈলীতে নির্মিত নাটকটি একটি স্বৈরশাসিত রাষ্ট্রে ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্রীয় প্রপাগান্ডা, দমন-পীড়ন এবং নাগরিক প্রতিরোধের এক কাব্যিক ভাষ্য। যেখানে স্বাধীনতা হয়ে ওঠে পণ্য, কবিতা হয় রাষ্ট্রদ্রোহ, আর শিশুদের রং হয় বিপ্লবের প্রতীক। নাটকের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন এক শিক্ষক, এক শিশু এবং এক মায়ের আর্তি- যেখান থেকে জন্ম নেয় নতুন সম্ভাবনার আলো। ‘404: নাম খুঁজে পাওয়া যায় নি’ তাই শুধু একটি নাটক নয়- এটি রাষ্ট্র ও নাগরিকের সম্পর্ক পুননির্মাণের এক মঞ্চভাষ্য।
“404: নাম খুঁজে পাওয়া যায় নি” প্রযোজনাটি সম্পর্কে নির্দেশক মো. লাহল মিয়া বলেন, ‘404: নাম খুঁজে পাওয়া যায় নি’- এটি কেবল প্রযুক্তিগত বার্তা নয়, বরং একটি রাষ্ট্রিক বাস্তবতা ও মানবিক ট্র্যাজেডি। নাট্যরূপে এটি একটি এক্সপেরিমেন্টাল। আমরা চেষ্টা করেছি সময়ের ভাষা খুঁজে পেতে- যেখানে ব্যঙ্গ, থ্রিল, শোক, প্যাথস ও র্যা প পাশাপাশি দাঁড়ায়। ভাষার পাশাপাশি চতুর্থ প্রাচীর ভাঙা হয়েছে, যেন দর্শক নিজেই নাটকের শরিক হয়ে ওঠে।
প্রযোজনাটি সম্পর্কে ড্রামাতুর্গ আব্দুল মুনিম তরফদার বলেন, “আমরা এই প্রযোজনায় ‘যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই’ এই বার্তার মধ্য দিয়ে সমকালীন বিশৃঙ্খলা ও ক্ষমতার ভারসাম্যহীনতার বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর তুলে ধরতে চেয়েছি। ব্রেখটের এলিয়েনেশন ইফেক্ট বা বিচ্ছিন্নকরণ কৌশলের অনুশীলন দর্শকের আবেগ নয়, যুক্তি ও দায়বদ্ধতাকে আহ্বান জানায়। একইসঙ্গে পিটার হ্যান্ডকের Offending the Audience নাটকের সংলাপের অংশবিশেষের সুনির্দিষ্ট সংযোজন নাটকের কাঠামোয় একটি চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে, যেখানে দর্শক নিজেই প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে পড়ে- সে এই যাত্রার দর্শক, না অংশগ্রহণকারী?”
এই নাট্য প্রযোজনায় বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন আব্দুল মুনিম তরফদার, এঞ্জেলিনা পিয়ানা রোজারিও, এ. এইচ. এম. সাহেদুল আলম, ফারিহা তাসনীম হৃদি, হাদী আকাশ, শেখ সায়েম হোসেন, রাইসুল ইসলাম রোমান, তাসনোভা সানজিদা, ইসরাত মীম, মো. মাহাবুব আলম হৃদয় এবং জান্নাতুল ফেরদৌস তোয়া।
প্রযোজনাটির সহকারী নির্দেশক, সঙ্গীত পরিকল্পনা, পোস্টার ও প্রচারে ছিলেন মো. মনিরুজ্জামান, প্রোডাকশন ম্যানেজার ও প্রপস-এ ছিলেন মোহাইমিন দ্বীপু, মঞ্চ ও আলোক পরিকল্পনায় সৈয়দ মো. যুবায়ের, আলোক প্রক্ষেপণে সৈয়দ মো. যুবায়ের ও তারিক ইব্রাহীম সজীব, মেকআপ ও কস্টিউমে ছিল সম্মিলিত প্রয়াস, চিত্রগ্রহণ ও ভিডিও সম্পাদনায় ছিলেন মোছাঃ কামনা আক্তার।
ইউ