
ফাইল ছবি
রাজধানীর মতিঝিলে উগ্র, ধর্মান্ধ, মৌলবাদী সংগঠন হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে প্রকাশ্যে নারীদের কটূক্তি করে দেয়া বক্তব্য এবং নারী সংস্কার কমিশনের সদস্যদের নামে কুৎসা রটানোর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।
মঙ্গলবার (৬ মে) এক বিবৃতিতে উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বলেন, এ ধরনের বক্তব্যের মাধ্যমে জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সম্মুখসারির যোদ্ধা হিসেবে অংশগ্রহণকারী নারীদের অবদানকে অস্বীকার করার অপচেষ্টা করা হয়েছে।
বিবৃতিতে উদীচীর নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশের জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক নারী। তাদেরকে বাদ দিয়ে বা তাদেরকে বঞ্চিত করে কোনভাবেই দেশের সার্বিক উন্নতি বা সমৃদ্ধি অর্জন সম্ভব নয়। মহান মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম থেকে শুরু করে স্বাধীনতার পরও যেকোন ন্যায়সঙ্গত লড়াই-সংগ্রামে পুরুষের সাথে সমানভাবে সক্রিয় অবস্থান নিয়েছে নারীরা। তাদের অনবদ্য অবদানের কারণেই স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলন, গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন বা সবশেষ চব্বিশের জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান সফল হয়েছে। এছাড়া, শিক্ষা, কৃষি, বাণিজ্য, সংস্কৃতি থেকে শুরু করে দেশের সব খাতেই অগ্রবর্তী ভূমিকায় রয়েছেন নারীরা।
উদীচীর নেতৃবৃন্দ বলেন, সেই নারীদের নিয়েই প্রকাশ্য সমাবেশে চরম অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন উগ্র, ধর্মান্ধ, মৌলবাদী, সাম্প্রদায়িক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম। ০৩ মে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে শুধু নারীদের নিয়ে চরম আপত্তিকর ও অবমাননাকর মন্তব্য করেন সংগঠনটির নেতারা। একইসাথে নারী সংস্কার কমিশনের সদস্যদের নামেও বিষোদগার করেন তারা। নারী সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে সম্পত্তির উত্তরাধিকারে নারী-পুরুষের সমানাধিকারসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ করা হয়েছে, যা প্রকৃতপক্ষে নারীদের প্রতি দীর্ঘকাল ধরে চলে আসা বৈষম্য অবসানের সুযোগ তৈরি করবে। কিন্তু, এসবের বিরোধীতা করার মাধ্যমে প্রকৃতপক্ষে হেফাজতে ইসলাম নারীদের অগ্রগতিকে রুদ্ধ করতে চায়, যা কিনা বাংলাদেশের সার্বিক অগ্রগতিকেই বাধাগ্রস্ত করবে। এর আগে ২০১৩ সালেও ১৩ দফার নাম করে নিজেদের চরম নারীবিদ্বেষী অবস্থান স্পষ্ট করেছিল হেফাজতে ইসলাম। সেখানেও ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে বারবারই নারীদের প্রতি বৈষম্য বজায় রাখার কথা বলেছে তারা।
প্রকাশ্য সমাবেশে নারীদের অবমাননাকারী হেফাজত নেতাদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান উদীচীর নেতৃবৃন্দ। একইসাথে যাচাই-বাছাই শেষে নারী সংস্কার কমিশনের প্রগতিশীল সুপারিশসমূহ দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বানও জানান উদীচীর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
ইউ