ঢাকা, বাংলাদেশ

শনিবার, শ্রাবণ ১২ ১৪৩১, ২৭ জুলাই ২০২৪

English

অর্থনীতি

খুলনা-মোংলা রেলপথ শেষধাপে

সুকুমার সরকার

প্রকাশিত: ২২:১২, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩

খুলনা-মোংলা রেলপথ শেষধাপে

ছবি: খুলনা-মোংলা রেলপথ...

দিন দিন ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য-বন্ধুত্বে গাঢ় থেকে গাঢ় হচ্ছে। এবার বহুল প্রতীক্ষিত ৬৫ কিলোমিটার দীর্ঘ খুলনা-মোংলা বন্দর রেল সংযোগ প্রকল্পটির জন্য অর্থনীতিসহ কারিগড়ি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় ভারত। খুলনা-মোংলা রেল বন্দরটি ১৯৫০ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও মোংলা বন্দরের সঙ্গে অভ্যন্তরীণ অঞ্চলের যোগাযোগের ঘাটতি ছিল। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে এগিয়ে আসে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের ক্রান্তিকালের বন্ধু ভারত। ভারত সরকারের ঋণ সহায়তা চুক্তির আওতায় খুলনা-মোংলা রেল প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান লার্সেন অ্যান্ড টার্বো এবং আরেক ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ইরকন ইন্টারন্যাশনাল। ২০১০ সালে খুলনা-মোংলা রেললাইন প্রকল্প অনুমোদন দেয় সরকার। এরপর এর সম্ভ্যাবতা যাচাই, ডিজাইন চূড়ান্ত, দরপত্র আহ্বান ও ঠিকাদার নিয়োগসহ অন্যান্য প্রক্রিয়া শেষে নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়- চার হাজার ২৬০ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে ভারতীয় ঋণ রয়েছে- ২ হাজার ৯৪৮ কোটি ১ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। বাকি ১ হাজার ৩১২ কোটি ৮৬ লাখ ৭৬ হাজার টাকা বাংলাদেশ সরকারের। এই প্রকল্পের সুফল শুধু বাংলাদেশই নয়, পাবে পার্শ্ববর্তী আরো তিন দেশ।

ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইরকন ইন্টারন্যাশনালের সুপার ভাইজার গৌতম কুমারবলেই, ‘এখন আমরা একেবারেই শেষ সময়ের কাজ করছি। রেলপথ বসানো সম্পন্ন হয়েছে; এখন রেললাইনগুলো ডাম্পিং মেশিনের সাহায্যে সমান করা হচ্ছে; পাথরগুলো এক জায়গায় করা হচ্ছে; লেভেলিং ও রেলের বগির চাপ ঠিকভাবে যেন নিতে পারে সে কাজগুলো করা হচ্ছে। এ পর্যায় শেষ করা গেলেই সেতু প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে যাবে। প্রকল্পটির নির্বাহী প্রকৌশলী আহমেদ মাসুম হোসেন বলেন, ‘আমাদের আর মাত্র ২ শতাংশ কাজ বাকি। এ দুই শতাংশ কাজ মূলত ফিনিশিং ওয়ার্ক। অধিকাংশ কাজই শেষ হয়ে গেছে। আমাদের লক্ষ্য  সেপ্টেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করা। এরপর রেলপথে রেল লাইন চালাতে পারবো।’

বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল জনপদের মানুষের উপকারের পাশাপাশি, যোগাযোগের এক মাইলফলকে যুক্ত হচ্ছে- ভারত মাধ্যম হয়ে নেপাল ও ভুটান। আশাকরা হচ্ছে- চলতি সেপ্টেম্বরের শেষে বা আগামী মাসের শুরুতে চালু হয়ে যাবে এ প্রকল্পটি। এরফলে প্রতিবেশী এ চারটি দেশের আন্তঃদেশীয় যোগাযোগ ও বাণিজ্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। ভারতীয় নিয়ন্ত্রণ রেখার (লাইন অফ ক্রেডিট) আওতায় বাস্তবায়িত এই প্রকল্পটি কলকাতা এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর মধ্যে ভারী কার্গোসহ পণ্যগুলোর লজিস্টিক বাধা এবং ব্যয় বা ট্রান্সশিপমেন্টকে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করবে। এখন খুলনা-মোংলা রেলপথ চালু হলে সড়কপথে পণ্য পরিবহনের চাপ কমবে। সেই সঙ্গে পণ্য পরিবহন ব্যয় ও সময় কমবে। গবেষকরা বলছেন, রেললাইনটি সমগ্র বিবিআইএন (বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল) উপ-অঞ্চলের জন্য খুব উপকারী হবে। কারণ এটি উন্মুক্ত যোগাযোগ ও পণ্য সরবরাহে সাহায্য করবে। এই অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হচ্ছে, এটি অবশ্যই একটি অর্জন। এছাড়া, মোংলা বন্দরে রেল সংযোগ চালু হলে কার্গোর একটি বড় অংশ পরিচালিত হতে পারে।   

অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের তথ্য মতে, এখন পর্যন্ত দেশের সামুদ্রিক বাণিজ্যের ৯০ শতাংশের বেশি অংশ চট্টগ্রাম বন্দরের দখলে। খুলনা শহর থেকে ৪৮ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত মোংলা বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ অঞ্চল এবং বন্দরকে সংযুক্ত করে একটি রেল নেটওয়ার্ক। যেটি এই অঞ্চলের ক্ষুদ্র ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সহায়তা করবে।এ বিষয়ে আমদানি-রপ্তানির সঙ্গে জড়িত অনেক ব্যবসায়ী অভিযোগ করেছেন, মোংলা বন্দর থেকে বড় কনটেইনার পরিবহন করা প্রায় দুঃস্বপ্নের মতো। বন্দরটি প্রসূর নদী নদীর ওপর নির্মিত হলেও এটি উপসাগর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

খুলনা-মোংলা রেলপথের কাজ ৯৬ শতাংশ শেষ হয়েছে। অচিরেই বাকি কাজ শেষ হওয়ার কথা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই রেলপথের উদ্বোধন করবেন বলে আশা করছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। এর মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ৭৩ বছর পর রেল যোগাযোগে যুক্ত হবে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মোংলার সঙ্গে। ১৯৫০ সালের ১ ডিসেম্বর মোংলা বন্দর প্রতিষ্ঠিত হয়। মোংলা বন্দর দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বাগেরহাট জেলায় অবস্থিত। পশুর নদী ও মোংলা নদীর সংযোগস্থলে এই বন্দরের অবস্থান। এ ছাড়া সুন্দরবনে পর্যটক পরিবহন সহজ হবে। যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন ঘটবে। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রকল্পটি ২০১০ সালের ২১ ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পায়। প্রকল্পটি তিনটি ভাগে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় মূল লাইনসহ রেলওয়ে ট্র্যাকের দৈর্ঘ্য ৮৬ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৬৪ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেলপথ। আর রূপসা নদীর ওপর নির্মাণ করা হয়েছে পাঁচ দশমিক ১৩ কিলোমিটার রেলসেতু।

এদিকে ২০২২ সালের ২৫ জুন উদ্বোধন করা হয় পদ্মা সেতু প্রকল্প। আন্তঃদেশীয় বাস চলাচল শুরু হলেও রেল ব্যবস্থা চালু হয়নি। বলা হচ্ছে- প্রকল্পের কাজ শতভাগ শেষ হয়নি। গত আগস্ট পর্যন্ত প্রকল্পটির আওতায় ব্যয় হয়েছে ২৯ হাজার ২৯৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা। আর্থিক অগ্রগতি দাঁড়িয়েছে ৮৯.৮৫ শতাংশ। পুরো প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৯৯.৮০ শতাংশ। এটি বাস্তবায়নে মোট ৩২ হাজার ৬০৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্পে গত আগস্ট পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ২৯ হাজার ৯৩৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। প্রকল্পটির আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৭৬.২৭ শতাংশ। এ ছাড়া ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৮২ শতাংশ। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে মোট ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা। প্রকল্পটি ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের লক্ষ্য রয়েছে।

ইউ

ছাত্রলীগের রাজনীতি ছাড়ার ঘটনা নিয়ে যা জানালেন সারজিস

আহতদের দেখতে পঙ্গু হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রী

এক দফা দাবিতে ‘জাতীয় ঐক্যের’ ডাক বিএনপির

নিরাপত্তার জন্য ডিবি হেফাজতে তিন সমন্বয়ক

৬ দিন পর ঢাকা-বরিশাল রুটে লঞ্চ চলাচল শুরু

সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫৩তম জন্মবার্ষিকী আজ

আজও বিকেল ৫টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল

দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম নারী প্রধান বিচারপতি মান্দিসা মায়া

নারী সাংবাদিককে হামলার অভিযোগে বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার

দেশব্যাপী সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে ১৭৯ নাগরিকের বিবৃতি

মেট্রো স্টেশনে হামলা: ছয়জন রিমান্ডে

সহিংসতায় ঢাকায় ২০৯ মামলা, গ্রেপ্তার ২৩৫৭

শনিবার কারফিউ নিয়ে নির্দেশনা

ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের কম গতির কারণ জানা গেল

শনিবারের মৈত্রী এক্সপ্রেসের যাত্রা বাতিল