পৃথিবীর তৃতীয় উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা
অক্টোবরের শেষ থেকে নভেম্বর। বছরের এই সময়টিতে নতুন এক আকর্ষণ ছড়াচ্ছে বাংলাদেশের উত্তরের সীমান্ত।
কুয়াশাবিহীন মেঘমুক্ত নীলাকাশে নিয়মিত দেখা মিলছে পৃথিবীর তৃতীয় উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা।
পৃথিবীর তৃতীয় উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা। চোখ জুড়ানো সৌন্দর্য ও মায়াবী রূপলাবণ্য মেলে ধরে প্রকৃতিপ্রেমী ভ্রমণপিপাসুদের দুহাত বাড়িয়ে ডাকছে এই শৃঙ্গ। চোখ জুড়াতে হাজারো ভ্রমণপিপাসু প্রকৃতিপ্রেমী পর্যটক আসছেন পঞ্চগড়ে।
চীনের তিব্বত, নেপাল বা ভারতে গিয়ে নয়, ভাগ্য ভালো থাকলে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া থেকেই আপনি খালি চোখে দেখতে পাবেন হিমালয় পর্বত আর কাঞ্চনজঙ্ঘা। কয়েকবছর ধরেই তেঁতুলিয়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে খালি চোখেই দেখা মিলছে হিমালয় পর্বত ও কাঞ্চনজঙ্ঘার। অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত ঋতুবৈচিত্র্যের শীতের মেঘমুক্ত নীলাকাশে ভেসে ওঠে তুষারশুভ্র হিমালয় পর্বত ও কাঞ্চনজঙ্ঘা।
স্থানীয়দের মতে, আকাশ পরিষ্কার থাকলেই সকালে স্পষ্ট দেখা যায় কাঞ্চনজঙ্ঘা। তারপর ক্রমান্বয়ে ঝাপসা হয়ে হারিয়ে যায় এ পর্বত। আবার বিকেলে সূর্যকিরণ যখন তির্যকভাবে বরফাচ্ছাদিত পাহাড়ে পড়ে তখন আবারো চোখে ধরা দেয় কাঞ্চনজঙ্ঘা। এ দৃশ্য দেখতে ছুটে আসতে শুরু করেছে বিভিন্ন জেলার মানুষ।
কাঞ্চনজঙ্ঘা পৃথিবীর তৃতীয় সর্বোচ্চ শৃঙ্গ। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিবছরের সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত শীতের আগমনী বার্তার পূর্বে আকাশে ভেসে ওঠে হিমালয় পর্বত ও কাঞ্চনজঙ্ঘা। পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া-বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর থেকে নেপালের দূরত্ব ৬১ কিলোমিটার, ভূটানের দূরত্ব ৬৪ কিলোমিটার, চীনের দূরত্ব ২০০ কিলোমিটার, ভারতের দার্জিলিংয়ের দূরত্ব ৫৮ এবং শিলিগুড়ির দূরত্ব মাত্র ৮ কিলোমিটার। অন্যদিকে হিমালয়ের এভারেস্ট শৃঙ্গের দূরত্ব ৭৫ ও কাঞ্চনজঙ্ঘার দূরত্ব মাত্র ১১ কিলোমিটার।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সোমবার সকালে আকাশ পরিস্কার থাকার কারণে খালি চোখে কাঞ্চনজঙ্ঘার দেখা মিলেছে। নভেম্বর পর্যন্ত এ দৃশ্যের দেখা মিলতে পারে।
কীভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে পঞ্চগড় কিংবা তেঁতুলিয়া অথবা বাংলাবান্ধায় সরাসরি দূরপাল্লার (দিবারাত্রি) বাস রয়েছে। রাজধানী থেকে সরাসরি তেঁতুলিয়ায় যাওয়ার একাধিক পরিবহন রয়েছে। এছাড়া ঢাকা থেকে বিমানে নীলফামারীর সৈয়দপুর হয়ে বাস, মাইক্রোবাস বা প্রাইভেট কারে চড়েও তেঁতুলিয়া যাওয়া যায়। ট্রেনে যেতে চাইলে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, একতা বা দ্রুতযান এক্সপ্রেসে করে সরাসরি পঞ্চগড় নামতে পারবেন। যেতে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা সময় লাগবে এবং ৫০০ থেকে ১৫০০ টাকা খরচ পড়বে।
থাকা-খাওয়ার ফিরিস্তি
রাত্রি যাপনের জন্য তেঁতুলিয়ায় সরকারি ৩টি ডাকবাংলোর পাশাপাশি কয়েকটি আবাসিক হোটেল রয়েছে। ডাকবাংলোগুলোতে অবস্থান করতে হলে আপনাকে আগেভাগেই উপজেলা বা জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিতে হবে। তবে তেঁতুলিয়া ডাকবাংলোতে থাকলে সেখান থেকেই আপনি দেখতে পাবেন কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ রূপ।
//জ//