ঢাকা, বাংলাদেশ

মঙ্গলবার, , ১৩ মে ২০২৫

English

প্রযুক্তি

ভিপিএন: প্রযুক্তির স্বাধীনতা ও সুরক্ষায় একটি দ্বিমুখী তলোয়ার

উইমেনআই প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০:২৭, ১২ মে ২০২৫; আপডেট: ২১:৫৮, ১২ মে ২০২৫

ভিপিএন: প্রযুক্তির স্বাধীনতা ও সুরক্ষায় একটি দ্বিমুখী তলোয়ার

ছবি সংগৃহীত

বর্তমান ডিজিটাল যুগে, যেখানে অনলাইন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মানুষের প্রায় সব প্রয়োজনীয়তা পূর্ণ হচ্ছে, সেখানে ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা, নিরাপত্তা এবং স্বাধীনতা বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রেক্ষাপটে ভিপিএন (ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক) একটি শক্তিশালী প্রযুক্তি হিসেবে উঠে এসেছে। তবে, ভিপিএন ব্যবহারের সঙ্গে জড়িত রয়েছে কিছু ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দিক, যা সবার কাছে সমানভাবে প্রভাবিত হতে পারে। এটি প্রযুক্তির স্বাধীনতার নতুন দিগন্ত খুলে দিলেও, এর কিছু নেতিবাচক ব্যবহারও রয়েছে, যা সাইবার নিরাপত্তা ও মানবাধিকার প্রশ্নে বিতর্কের জন্ম দিতে পারে।

ভিপিএন: একটি প্রগতিশীল প্রযুক্তি
মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষা
ভিপিএন মূলত ব্যবহারকারীদের ইন্টারনেট এক্সেসে গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে, যখন কোনো দেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা সীমাবদ্ধ থাকে, সেখানে ভিপিএন একটি অত্যন্ত কার্যকরী উপকরণ হিসেবে কাজ করে। যেমন, সরকারের কড়া সেন্সরশিপ বা রাজনৈতিক দমন-পীড়নের সময়ে, নাগরিকেরা ভিপিএন ব্যবহার করে নির্বিঘ্নে তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারেন এবং বৈশ্বিক পরিসরে তথ্যের প্রবাহে অংশ নিতে পারেন।

মানবাধিকার রক্ষা
ভিপিএন ব্যবহারের একটি অন্যতম ইতিবাচক দিক হলো এটি মানুষের মৌলিক মানবাধিকার রক্ষা করতে সাহায্য করে। অনেক দেশেই মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে, বিশেষত যেসব দেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা রয়েছে। সেখানে ভিপিএন জনগণের জন্য একটি মুক্তমঞ্চ হিসেবে কাজ করে, যেখানে তারা নিজস্ব মত প্রকাশ করতে পারে, সংবাদমাধ্যমে অংশগ্রহণ করতে পারে এবং তথ্য খুঁজে বের করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, চীন, ইরান, রাশিয়া ও মিয়ানমার মতো দেশগুলোতে ভিপিএন ব্যবহারকারীরা সার্ভারের মাধ্যমে বাধা এড়িয়ে ইন্টারনেটে অবাধ প্রবাহ উপভোগ করতে সক্ষম।

সাইবার সুরক্ষা ও ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা
অতিরিক্ত সুরক্ষা এবং গোপনীয়তা নিশ্চিত করতে ভিপিএন ব্যবহারকারীদের অনলাইন কার্যক্রমকে সুরক্ষিত রাখে। এটি ব্যবহারকারীদের আইপি ঠিকানা এবং জিও-লোকেশন গোপন রেখে তাদের অনলাইন কার্যক্রমকে সুরক্ষিত করে। বিশেষ করে যারা পাবলিক ওয়াইফাই নেটওয়ার্কে কাজ করেন, তাদের জন্য ভিপিএন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি হ্যাকারদের কাছ থেকে ব্যক্তিগত তথ্য চুরি হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।

নেতিবাচক দিক: প্রযুক্তির বিপথগামী ব্যবহার
অপরাধমূলক কার্যক্রমের জন্য ব্যবহৃত হতে পারে
যদিও ভিপিএন প্রযুক্তিটি সুরক্ষিত ও নিরাপদ, তবুও এটি খারাপ উদ্দেশ্যেও ব্যবহৃত হতে পারে। বিশেষত, অপরাধীরা ভিপিএন ব্যবহার করে অনলাইন অপরাধমূলক কার্যক্রম চালিয়ে থাকে, যেমন ডার্ক ওয়েব-এ লেনদেন, অবৈধ তথ্য শেয়ারিং, এবং অ্যাপস বা ভাইরাস ছড়িয়ে দেওয়ার মতো কার্যক্রম। এই ধরনের অপরাধমূলক কার্যক্রমের জন্য ভিপিএন ব্যবহারের ফলে সাইবার নিরাপত্তার জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়।

তথ্যের বিকৃতি ও বিভ্রান্তি ছড়ানো
ভিপিএন ব্যবহার করে অনেক ব্যবহারকারী নিজেদের অবস্থান গোপন করে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে দেয়। এটি সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতার সৃষ্টি করতে পারে, বিশেষত যখন ভুয়া তথ্য, প্রোপাগান্ডা, বা মিথ্যা খবর অনলাইনে ছড়ানো হয়। এর মাধ্যমে জনগণের মনস্তাত্ত্বিক দিকগুলো পরিবর্তিত হতে পারে এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে।

আইনি সমস্যার মুখে পড়া
বিভিন্ন দেশে ভিপিএন ব্যবহারের উপর আইনি বিধিনিষেধ রয়েছে। কিছু সরকার ভিপিএন ব্যবহারকারীদের শনাক্ত করে এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। অনেক দেশেই ভিপিএন ব্যবহারের জন্য আইনি অনুমোদন এবং নির্দিষ্ট শর্ত আরোপ করা হয়। এই কারণে, ভিপিএন ব্যবহারকারী আইনগত সমস্যায় পড়তে পারেন।

প্রযুক্তি, মানবাধিকার এবং বাক স্বাধীনতা
কথা বলার স্বাধীনতা ও মানবাধিকার শুধু নাগরিকদের অধিকার নয়, এটি একটি রাষ্ট্রের সভ্যতা এবং নাগরিক সমাজের মানদণ্ডের ভিত্তি। যখন কোনো দেশের সরকার জনগণের মতামত প্রকাশ বা তথ্যের অবাধ প্রবাহের ওপর কড়া নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে, তখন ভিপিএন এক ধরনের প্রযুক্তিগত মুক্তির পথ হয়ে ওঠে। এটি রাষ্ট্রের নাগরিকদের স্বাধীনভাবে তথ্য সংগ্রহ, মত প্রকাশ, এবং নিজস্ব পরিচয় রক্ষায় সহায়তা করে। সুতরাং, ভিপিএন এর ব্যবহার মানবাধিকার রক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তবে এর অপব্যবহার ও নেতিবাচক দিকগুলো সরকারের মনোযোগের দাবি রাখে।

বিশ্বব্যাপী ভিপিএন ব্যবহারের প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এটি ডিজিটাল স্বাধীনতার একটি গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম হিসেবে গড়ে উঠছে। তবে, এর নেতিবাচক দিকগুলো এবং অপরাধমূলক কাজে এর ব্যবহারের সম্ভাবনা বিবেচনায়, সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা একে যথাযথভাবে নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবহারের পরামর্শ দেন। এটি প্রযুক্তির স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করলেও, অপরাধমূলক কার্যক্রম ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর ক্ষেত্রে এক শক্তিশালী দ্বিমুখী তলোয়ার হতে পারে। এজন্য, দেশের আইনগত কাঠামো ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে ভিপিএন এর ব্যবহারকে সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করা প্রয়োজন।

ইউ

মঙ্গলবার ঢাকাসহ সারাদেশে বৃষ্টির সম্ভাবনা

আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত: ইসির সিদ্ধান্ত

আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত

স্বর্ণের দাম কমেছে

গেজেট প্রকাশ করলেই আ.লীগের নিবন্ধন বাতিলের সিদ্ধান্ত: সিইসি

ফেসবুকে মাহফুজের মন্তব্য, যা বললেন শিবির সেক্রেটারি

শেওড়াপাড়ায় দুই বোন খুন: কিশোরের দায় স্বীকার

অনির্দিষ্টকালের ছুটিতে পাকিস্তানের হাইকমিশনার

দুই বোনকে হত্যায় সিসিটিভিতে দেখতে পাওয়া ব্যক্তি গ্রেপ্তার: পুলিশ

সঞ্চয়পত্র কেনার নতুন নিয়ম

ভিপিএন: প্রযুক্তির স্বাধীনতা ও সুরক্ষায় একটি দ্বিমুখী তলোয়ার

ঈদযাত্রা: ২১ মে ট্রেনের আগাম টিকেট বিক্রি শুরু

 আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি

লঞ্চঘাটে দুই তরুণীকে মারধর: জড়িতদের শাস্তি দাবি

পুলিশের হাতে আর মারণাস্ত্র থাকবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা