
ছবি সংগৃহীত
২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে ‘একমুখী ও গতানুগতিক’ আখ্যা দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। বুধবার (৪ জুন) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের অবস্থান তুলে ধরেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে একটি জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে বাজেট প্রণয়ন করা উচিত ছিল। কিন্তু বর্তমান সরকার সেটি করেনি। এটি একটি একচেটিয়া ও সমন্বয়হীন বাজেট।’
খসরু অভিযোগ করেন, দেশে এখন কোনো কার্যকর সংসদ বা গণতান্ত্রিক সরকার নেই। অন্তর্বর্তী সরকার ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মতামত নিয়ে এই বাজেট দিতে পারত, যা হয়নি।
বাজেটে ঘোষিত মূল্যস্ফীতি ৬.৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রাকে অবাস্তব বলে দাবি করেন খসরু। তার ভাষায়, ‘বর্তমানে মূল্যস্ফীতি প্রায় ডাবল ডিজিট। এই অবস্থায় ৬.৫ শতাংশের টার্গেট বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।’
তিনি আরো জানান, বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলমান অন্তর্বর্তী সরকারের শাসনামলে ২৭ লাখের বেশি মানুষ নতুন করে দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গেছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য তুলে ধরে খসরু বলেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ৩.৯৭ শতাংশ। অথচ নতুন বাজেটে তা বাড়িয়ে ৫.৬ শতাংশ ধরা হয়েছে, যা বাস্তবভিত্তিক নয় বলে বিএনপির দাবি।
সংবাদ সম্মেলনে আমীর খসরু অভিযোগ করেন, বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে বরাদ্দ কমিয়ে সাধারণ মানুষের মৌলিক চাহিদার প্রতি উপেক্ষা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘সামাজিক সুরক্ষার খাতে পেনশন ও কৃষি ভর্তুকি অন্তর্ভুক্ত করে বরাদ্দ বাড়ানোর চিত্র দেখানো হলেও বাস্তবে তা অপর্যাপ্ত এবং দুর্নীতিগ্রস্ত।’
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, কালো টাকা সাদা করার সুযোগ নিয়মিত করদাতাদের প্রতি বৈষম্য তৈরি করে। বাজেটে কোনো ধরনের সংস্কার বা স্বচ্ছতা না থাকায় এটি জনগণের ওপর আর্থিক চাপ বাড়াবে, কর্মসংস্থান ও উৎপাদন হ্রাস পাবে।
সংবাদ সম্মেলনের শেষভাগে আমীর খসরু বলেন, ‘সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নই একটি বাজেটের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। বিএনপি ভবিষ্যতে রাষ্ট্রক্ষমতায় গেলে কীভাবে অর্থনীতি পরিচালনা করবে, তার একটি রূপরেখা আমরা সামনে উপস্থাপন করব।’
ইউ