
সংগৃহীত ছবি
পবিত্র হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা আরাফাতের ময়দানে অবস্থান শেষে মুসল্লিরা বৃহস্পতিবার রাতে মুজদালিফায় খোলা আকাশের নিচে রাত কাটিয়েছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত ১৬ লাখের বেশি হাজি সেখানে একযোগে রাতযাপন করেন। আজ শুক্রবার (৬ জুন) তারা মুজদালিফা থেকে মিনার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। সেখানে হাজিদের জন্য অপেক্ষা করছে ব্যস্ততম দিন।
আজ সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে উদ্যাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল আজহা। তবে হাজিরা ঈদের আনুষ্ঠানিকতার চেয়ে হজের গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম নিয়ে অধিক ব্যস্ত থাকেন।
মিনায় পৌঁছে হাজিরা জামারাতে প্রতীকী শয়তানকে কংকর নিক্ষেপ করবেন। এর জন্য প্রয়োজনীয় কঙ্কর আগের রাতে মুজদালিফা থেকে সংগ্রহ করা হয়। এরপর রয়েছে পশু কোরবানির বিধান। অনেক হাজি সৌদি সরকারের ব্যবস্থাপনায় কোরবানি সম্পন্ন করেন, যা সম্পন্ন হওয়ার বিষয়টি এসএমএসের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়। এই বার্তা পাওয়ার পরই হাজিরা চুল কাটিয়ে হালাল হতে পারেন। তবে অনেকেই ব্যক্তিগত ব্যবস্থাপনায় কোরবানি সম্পন্ন করেন।
কোরবানি ও হালাল হওয়ার পর হাজিরা সাধারণ পোশাকে কাবাঘর তওয়াফ করতে পারেন। এই তওয়াফ ও সাঈ হজের ফরজ অংশ এবং অপরিহার্য করণীয়।
হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা আজকের দিনেই শেষ হয়ে যাচ্ছে। এরপর ১১ ও ১২ জিলহজ মিনায় অবস্থান করে ধারাবাহিকভাবে তিনটি জামারাতে (ছোট, মধ্যম ও বড়) সাতটি করে মোট ২১টি কঙ্কর নিক্ষেপ করতে হয় প্রতিদিন। কেউ যদি এই সময়ের মধ্যে কাবা শরিফে গিয়ে তওয়াফ করেন, তাহলে তাওয়াফের পর আবার মিনায় ফিরে রাত যাপন করতে হবে।
১০ থেকে ১২ জিলহজ পর্যন্ত মিনায় অবস্থান করা সুন্নত। কেউ যদি ১২ জিলহজ সূর্যাস্তের আগেই মিনা ত্যাগ করেন, তবে পরদিন অবস্থান করা বাধ্যতামূলক নয়। কিন্তু সূর্যাস্তের পর থেকে থাকলে ১৩ জিলহজেও মিনায় অবস্থান করতে হয় এবং সেদিনও সাতটি করে ২১টি কঙ্কর নিক্ষেপ করতে হয়।
১৩ জিলহজের পর হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়ে যায়। তবে দেশে ফিরে যাওয়ার আগে বিদায়ি তাওয়াফ আদায় করা হজযাত্রীদের জন্য জরুরি।
এর আগে গতকাল ৫ জুন (বৃহস্পতিবার) ঐতিহাসিক আরাফাতের ময়দানে হজের খুতবা প্রদান করা হয়। স্থানীয় সময় দুপুর ১২টার পর (বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টার পর) মসজিদে নামিরায় খুতবা প্রদান করেন সৌদি আরবের প্রখ্যাত আলেম ও বিচারপতি শায়খ ড. সালেহ বিন আবদুল্লাহ বিন হুমাইদ। এবারের খুতবা বাংলাসহ বিশ্বের ৩৫টি ভাষায় সরাসরি সম্প্রচারিত হয়।
চলতি বছর হজে অংশ নিয়েছেন ১৬ লাখের বেশি মুসল্লি। এর মধ্যে সৌদি আরবের অভ্যন্তরীণ হাজির সংখ্যা এক লাখ ৬৬ হাজার ৬৫৪ জন এবং বিদেশি হাজির সংখ্যা ১৫ লাখ ছয় হাজার ৫৭৬ জন। হাজিদের মধ্যে পুরুষ ছিলেন আট লাখ ৭৭ হাজার ৮৪১ জন এবং নারী সাত লাখ ৯৫ হাজার ৩৮৯ জন।
সৌদি আরবে পৌঁছানো হাজিদের মধ্যে ১৪ লাখ ৩৫ হাজার ১৭ জন বিমানে, পাঁচ হাজার ৯৪ জন নৌপথে এবং ৬৬ হাজার ৪৬৫ জন মাইক্রোবাস, কার ও অন্যান্য যানবাহনে গিয়েছেন।
//এল//