
ছবি সংগৃহীত
বাংলাদেশের ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী প্রায় ৫ কোটি শিশুকে টাইফয়েড রোগ থেকে সুরক্ষিত রাখতে দেশব্যাপী বিশেষ টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এই কর্মসূচির লক্ষ্য হলো প্রতিরোধযোগ্য ও প্রাণঘাতী এই রোগ থেকে প্রতিটি শিশুকে সুরক্ষা দেওয়া।
এই কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নে সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো দুই ধাপে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
দুই ধাপে টিকাদান কর্মসূচি
-
প্রথম ধাপ (৩০ অক্টোবর পর্যন্ত): এই ধাপে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে টিকা দেওয়া হবে—যার মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা (আলিয়া ও কওমি), এবং ইংরেজি মাধ্যমের স্কুল রয়েছে।
-
দ্বিতীয় ধাপ (১ থেকে ১৩ নভেম্বর ২০২৫): এই ধাপে কমিউনিটি পর্যায়ে টিকাদানের আওতা সম্প্রসারিত হবে। এ সময় ইপিআই’র স্থায়ী কেন্দ্রগুলোর পাশাপাশি এবং সারা দেশে প্রায় এক লাখ ২০ হাজার আউটরিচ সাইটে (প্রত্যন্ত এলাকা) টিকাদান কার্যক্রম চলবে।
ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নিবন্ধন ও সহযোগিতা
এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৮০ লাখের মতো শিশু, যা জাতীয় লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৩৩ শতাংশ, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম VaxEPI (https://vaxepi.gov.bd) এর মাধ্যমে নিবন্ধিত হয়েছে।
জাতিসংঘের শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)-এর সাথে যৌথভাবে এই কর্মসূচির জন্য অনলাইন ডিজিটাল মাইক্রোপ্ল্যান এবং প্রস্তুতি মূল্যায়নে সহায়তা করেছে, যাতে রিয়েল-টাইম মনিটরিং ও রিপোর্টিং নিশ্চিত হয়। এছাড়াও ইউনিসেফ টিকা সরবরাহের পাশাপাশি দেশের কোল্ড চেইন ব্যবস্থা (টিকা সংরক্ষণ ব্যবস্থা) জোরদার এবং কার্যক্রম পরিচালনা সংক্রান্ত নির্দেশিকা ও প্রশিক্ষণ দিয়েছে।
ইউনিসেফের আহ্বান:
বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স এই কর্মসূচিকে "প্রতিরোধযোগ্য ও প্রাণঘাতী এই রোগ থেকে প্রতিটি শিশুকে সুরক্ষিত করার যৌথ প্রচেষ্টার এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক" হিসেবে অভিহিত করেছেন।
তিনি বলেন, "শিশুদের টিকা দেওয়া একটি অঙ্গীকার—চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধকে অগ্রাধিকার দেওয়া, অসুস্থতার বদলে সুস্থতাকে গুরুত্ব দেওয়া, মানুষের মৃত্যুর বদলে জীবন রক্ষার অঙ্গীকার।"
রানা ফ্লাওয়ার্স বিশেষভাবে উল্লেখ করেন যে, এই কর্মসূচি অপেক্ষাকৃত বেশি বয়সী শিশুদের সুরক্ষিত করার জন্য মাত্র একটিবারের সুযোগ নিয়ে এসেছে। এই কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচির আওতায় শুধু এক বছরের কম বয়সী শিশুদেরই টিসিভি দেওয়া হবে।
তিনি গণমাধ্যম, অভিভাবক এবং সমাজের সকল স্তরের মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যেন কোনো শিশু বাদ না পড়ে, বিশেষ করে যারা স্কুলে যায় না, অনানুষ্ঠানিক বা ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ে অথবা রাস্তায় বসবাস করে।
ইউ