
ছবি: উইমেনআই২৪ ডটকম
প্লাস্টিক ও পলিথিন দূষণ নিয়ন্ত্রণে ব্যক্তিগত জীবনে প্লাস্টিক ও পলিথিন পরিহার এবং সিটি করপোরেশনের আওতাধীন বাজারগুলোকে পলিথিন ব্যাগ মুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
বুধবার (২৮ মে) দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড এবং রেড অরেঞ্জ লিমিটেডের যৌথ আয়োজনে রাউন্ডটেবিল অন প্রোটেকটিং ঢাকার রিভার্স অ্যান্ড ক্যানালস ফ্রম প্লাস্টিক ওয়েস্ট থ্রু সার্কুলার ইকোনমি আন্ডার দ্য থিম সেভ ক্যানালস, সেভ সিটি" শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান একথা বলেন ।
আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা দক্ষিণ মহানগরের প্রধান বজ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমান্ডার মো মাহবুবুর রহমান তালুকদার, ঢাকা উত্তর মহানগরের অতিরিক্ত প্রধান বজ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা তাবাসসুম আব্দুল্লাহ, নেদারল্যান্ডস এর ওয়াসেদ, মেহেদী হাসান, ইউএনওপিএসের এনভাওয়ারমেন্ট প্লিজের টেকনিকাল এক্সপাট হাসান আহমেদ, ইউএনওপিএস বাংলাদেশ এর কমিউনিকেশনস ফোকালের মুশফিকা সুলতানা, ঢাকা ওয়াসার ডিএমডির এ কে এম শহীদ উদ্দীন, বিপিজিএমইএর সভাপতি শামীম আহমেদ, ডেইলি স্টারের সাংবাদিক হেলেমুল আলম বিপ্লব , বিআইপির সভাপতি ড. আদিল মোহাম্মদ খান, এলজিডির এডমিন উইং অতিরিক্ত সচিব একেএম তারিকুল আখতার, ইউনাইটেড ইন্টারনাশনাল ইউনিভাসিটির রিসোসপারসনস ড. তারিক বিন ইউসুফ, মুরাদ, ডিএনসিসি লোকাল এক্সপাট এডভাইসরি কমিটির সদস্য ফারিহা এস উমি, জেন্ডার এনালিস্ট রুমানা আফরোজ প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য দেন রেড অরেঞ্জ লিমিটেডের প্রোগাম অপারেশনস পরিচালক অলোক কুমার মজুমদার। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রেড অরেঞ্জ লিমিটেডের স্ট্যাটেজি পরিচালক জান্নাতুল মুনিয়া, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান ও অধ্যাপক ড. রুমানা আফরিন ও রেড অরেঞ্জ লিমিটেডের সামিউল। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড এর সম্পাদক ইনাম আহমেদ।
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, পলিথিন ব্যাগ বন্ধের জন্য জিডিপি কমে যাচ্ছে বলে ব্যবসায়ীরা দাবি করেন । কিন্তু পরিবেশের জন্য জিডিপি কতোটা ধ্বংস হচ্ছে এর হিসাবও রাখতে হবে। কারণ মানুষের মস্তিষ্কে মাইক্রো প্লাস্টিক পাওয়া গেছে। শপিংমলগুলো পলিথিন ব্যাগ মুক্ত হয়েছে এ নিয়ে কোনো ইতিবাচক প্রতিবেদন প্রকাশ হয়না। এটা প্রকাশ হলে কাঁচাবাজারের ক্রেতা বিক্রেতারা উদ্বুদ্ধ হবে। কিন্তু তারা কাঁচাবাজারে কখন পলি ব্যাগ ব্যবহার বন্ধ হবে এটা নিয়ে তাদের উৎসুকতা বেশি। যারা পলিথিন উৎপাদন, ব্যবহার ও বাজারজাত করেন তাদেরকেও এটি বন্ধে সচেতন হতে হবে।
তিনি বলেন, ‘একটি খাল পুনরুদ্ধারে লাগে ৩০০ কোটি টাকা। সেই টাকায় অনেক গুলো খাল খনন করা সম্ভব। ৫০ থেকে ৭০ কোটি টাকার মধ্যে খালগুলো খনন করা সম্ভব। শুভ্রডা খাল পুনরুদ্ধারে ৩০০ কোটি টাকার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে আমাকে। খালটি এক নদী থেকে উৎপন্ন হয়ে আরেক নদীতে মিলেছে। এটি পরিদর্শন করতে গিয়ে দেখি, এই খাল প্লাস্টিকের খালে পরিণত হয়েছে।’
অলোক কুমার মজুমদার বলেন, প্রতি বছর বাংলাদেশে ৯ লাখ ৭৭ হাজার মেট্রিক টন প্লাস্টিক বজ্য জেনারেট হয়। ৭ হাজার ৯০০ মিলিয়ন মাইক্রো ভেস্ট রিলিজ হয়। প্লাস্টিক বিভিন্ন ভাবে আমাদের শরীরে প্রবেশ করছে। এটা আমাদের শরীরে মারাত্মক রোগের সৃষ্টি করছে। এই মাইক্রো প্লাস্টিক এবং প্লাস্টিক রোধে আমরা যদি রিসাইকল করতে না পারি তাহলে এর সমস্যা বাড়বে।
তিনি আরো বলেন, বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদনে জানা যায়, ২০০৫ সালে যে পরিমাণ এডিপি ব্যবহার হতো ২০২০ সালে তা পাঁচ গুণ বেড়ে গেছে। এটা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। আমাদের উচিত এটা নিয়ন্ত্রণ করা। এটা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে আমাদের জীবনের জন্য হুমকি হয়ে যাবে।
জান্নাতুল মুনিয়া বলেন, বিদেশে মানুষ খালের পাড়ে বসবাস করতে আগ্রহী। আমাদের দেশে তার উল্টো চিত্র দেখা যায়। কল্যাণপুর খালের কাছাকাছি আমাদের সহকমীরা থাকেন। সেখান থেকেই ধারণা পাই, পাচ স্টেকহোল্ডারকে একত্রিত করে কাজ করতে পারলেই প্লাস্টিক বজ্য অপসারণ করা সম্ভব।
তিনি আরো বলেন, খালে ব্যারিয়ার দিয়ে যদি প্লাস্টিক অপসারণ করতে পারি, সেগুলো খাল, নদী হয়ে সাগরে পড়বে না। খুব কম খরচে এই কাজ করা সম্ভব।
মো মাহবুবুর রহমান তালুকদার বলেন, আমরা যদি সমন্বিত ভাবে কাজটা না করি তাহলে প্লাস্টিক বজ্য অপসারণ করা সম্ভব হবে না। আনরা যদি প্লাস্টিক রিডাকশন না করি, তাহলে যে উৎপাদন হচ্ছে তা থেকে যাচ্ছে। প্লাস্টিক রিডিউস করতে হলে সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টা দরকার।
একেএম তারিকুল আখতার বলেন, প্লাস্টিক বজ্য পুড়ানো আরো বিপদজনক। কালো ধোঁয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এটাকেও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
ইউ