
ছবি সংগৃহীত
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা তাদের চলমান কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করেছেন। বেতন বৈষম্য নিরসনসহ তিন দফা দাবিতে শুরু হওয়া এই আন্দোলনের পর, আগামী ১ জুন (রবিবার) থেকে শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন সংগঠন নেতারা।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বিকেলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দারের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকের পর 'প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ'-এর নেতারা কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেন।
ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, ‘দাবি পূরণে সরকারের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট ও ইতিবাচক অঙ্গীকার পাওয়া গেছে। তাই আমরা আপাতত কর্মবিরতি স্থগিত করছি এবং আগামী ২৬ জুন পর্যন্ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবো। যদি এর মধ্যে অগ্রগতি না হয়, তাহলে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’
তিনি আরও জানান, ‘আগামী ৩ জুন থেকে ঈদুল আজহার ছুটি শুরু হবে। ফলে ১ ও ২ জুন বিদ্যালয় খোলা থাকবেএবং শিক্ষকরা শ্রেণি কার্যক্রমে অংশ নেবেন।’
এর আগে গত ২৬ মে থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করছিলেন সহকারী শিক্ষকরা। এতে দেশের প্রায় সাড়ে ৬৫ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে অসংখ্য শিক্ষার্থী স্কুলে এসে ফিরে যেতে বাধ্য হয়।
কর্মবিরতির ধারাবাহিকতায় ৫ থেকে ১৫ মে পর্যন্ত প্রতিদিন এক ঘণ্টা, ১৭ মে থেকে দুই ঘণ্টা এবং ২১ থেকে ২৫ মে পর্যন্ত আধাবেলা করে কর্মবিরতি পালন করা হয়।
শিক্ষকদের তিন দফা প্রধান দাবি হলো:
১. সহকারী শিক্ষক পদকে অ্যান্ট্রি পদ ধরে ১১তম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ,
২. ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড পাওয়ার জটিলতা নিরসন,
৩. প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ পদোন্নতির নিশ্চয়তা ও দ্রুত পদোন্নতি প্রদান।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ৬৫ হাজারের বেশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ৪ লাখ শিক্ষক কর্মরত, যার মধ্যে সাড়ে ৩ লাখই সহকারী শিক্ষক। বর্তমানে প্রধান শিক্ষকদের বেতন গ্রেড ১১তম হলেও সহকারী শিক্ষকরা রয়েছেন ১৩তম গ্রেডে।
এই কর্মসূচি স্থগিতের ফলে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার আশা তৈরি হয়েছে, যা প্রাথমিক শিক্ষায় চলমান অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠতে সহায়ক হবে।
ইউ